২০১০ সালের ২৭ মার্চ সকালে সাদা পোশাকে র্যাব-৭’র পরিচয়ধারী আনুমানিক ৪-৫ জন সশস্ত্র ব্যক্তি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যান রাউজানের ১৪ নম্বর বাগোয়ান ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছৈয়দ মো. আবু জাফরকে। সেই থেকে কেটে গেছে প্রায় ১৫ বছর। এখনো ফেরেননি তিনি। বেঁচে আছেন, নাকি কোন অদৃশ্য শক্তির হাতে নিহত হয়েছেন, তাও জানে না পরিবার। সাবেক এই চেয়ারম্যানকে ফিরে পেতে গুম কমিশনে লিখিত আবেদন করেছেন তার ছেলে মোহাম্মদ জিসানুর রহমান। অতি সম্প্রতি তিনি এই আবেদনটি করেন।
জাফরের ছেলে জিসানুর রহমান বাবাকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়ে বলেন- বাবা একজন সুপরিচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। সাবেক ছাত্রনেতা তিনি। সামাজিক কর্মকাণ্ডেও তার সুপরিচিতি ছিল। গুম হওয়ার পর এ যাবৎ তার হদিস পাইনি। তাকে আমরা ফিরে পেতে চাই। অন্তবর্তী সরকারের প্রশাসন এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিলে আমরা উপকৃত হবো।
জাফরের স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার বলেন, প্রায় ১৫ বছর আমিও আমার সন্তানরা অপেক্ষায় আছি। পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন কাজ হয়নি। বর্তমান সরকারের কাছে আমি আমার স্বামীকে ফেরৎ চাই।
গুমের শিকার সাবেক চেয়ারম্যান ছৈয়দ মো. আবু জাফরের ছেলে জিসানুর রহমান বলেন, ২০১০ সালের ২৭ মার্চ সকাল ১০টায় আমি ও আমার মেঝ ভাই মো. ইয়াজেনুর রহমান, চাচা মো. সালাউদ্দিন চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী আবাসিক এলাকার রোড-৩ এর বাসভবন থেকে বের হয়ে আমার বাবার খালার বাসায় বেড়াতে যাচ্ছিলাম। ওইসময় আমার বাবা আবু জাফর তার ব্যবসায়িক কাজে বের হন। আমরা খুলশী ভুঁইয়া গলিতে আসলে সেখানে অবস্থানরত একটি কালো মাইক্রোবাস থেকে সাদা পোশাকে র্যাব-৭’র পরিচয়ধারী আনুমানিক ৪-৫ জন সশস্ত্র ব্যক্তি আমার বাবাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যান। এরপর বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে এবং বিভিন্ন আইন শৃংখলা বাহিনীর দপ্তরে যোগাযোগ করেও বাবার কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। আমরা বাবাকে যেকোন উপায়ে ফিরে পেতে চাই কিংবা তার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট বাখ্যা চাই।
জানা যায়, ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত তিনি বাগোয়ান ইউপির চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন। এছাড়াও তিনি গশ্চি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ছিলেন।
পূর্বকোণ/ইব