টোল দিয়ে একমুখী কালুরঘাট সেতু পেরোতে পোহাতে হয় ভোগান্তি। বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ি সেতুতে লাগিয়ে দেয় যানজট। এ যানজট নিরসনে হয় গলদঘর্ম।
এভাবেই প্রতিনিয়ত প্রতিদিন পারাপার করছে সিএনজিচালিত টেম্পো, ট্যাক্সি, কার, মাইক্রোবাস, মিনি ট্রাক, পিক আপ ও মোটর সাইকেল। এছাড়া এ সেতু দিয়ে ঢাকা-কক্সবাজার, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার গামী যাত্রী ট্রেন এবং দোহাজারী পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টে ফার্নেস অয়েলবাহী ওয়াগণ ট্রেন চলাচল করে।
সেতুতে দুইপাশের যানবাহন উঠে যানজটের সৃষ্টি করলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রী সাধারণকে। এতে বিঘ্নিত হয় ট্রেন চলাচল।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সরজমিনে দেখা গেছে, একপাশের গাড়ি পারাপারের সময় অপর পাশ থেকেও গাড়ি উঠে পড়ে সেতুতে। এতে সৃষ্টি হয় যানজটের। পরে শতশত গাড়ি পেছনে নিয়ে গিয়ে, এদিক সেদিক করে যানজট ছাড়াতে হয়।
অটোরিকশা চালক মো.মহিউদ্দিন জানান, নিয়ম না মেনেই অপর পাশ থেকে গাড়ি সেতুতে উঠে পড়ে। ফলে সেতুর মাঝে লেগে যায় যানজট। অথচ এই একমুখী সিঙ্গেল লাইনের সেতু দিয়ে একপাশের গাড়ি পার হওয়ার পর অপর পাশের গাড়ি পার হতে পারে। দুই পাশের গাড়ি একসাথে উঠে পড়লে বিপত্তি বাঁধে। সেতুতে গাড়ি ঘোরানোর সুযোগ নেই। পেছনেও লাইন পড়ে যায় গাড়ির। ফলে ঘণ্টার পর যানজটে নাকাল হতে হয় চালক ও যাত্রীদের।
এজন্য সেতুর দুইপ্রান্তের রেলওয়ে গেইটম্যানদের অবহেলাকেও দায়ী করেন চালকরা। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গেইটম্যান বলেন মোটরসাইকেল চালকদের সিগন্যাল দিলেও মানেন না। সংস্কারের পর সেতু দিয়ে বড় আকারের ও ভারী যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা দিয়েছে রেলওয়ে। ফলে বাইক চালকরা বিপরীত মুখী গাড়ি আসলেও সেতুতে উঠে পড়েন। ফলে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত টোল আদায়কারী লোকজন জানান, সেতু পারাপারে সিগন্যালের দায়িত্বে রয়েছেন রেলওয়ে গেইটম্যানরা। তবে বেপরোয়া চালকরা নিয়ম না মেনেই সেতুতে উঠে পড়লে মাঝে মধ্যে যানজটের সৃষ্টি হয়।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীর উপর বৃটিশ আমলে নির্মিত কালুরঘাট সেতুটি ট্রেন চলাচলের সক্ষমতা বাড়াতে সংস্কার করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ১ আগস্ট এ সংস্কার কাজ শুরু হয়েছিল। সেতুটির সংস্কার কাজ শেষ হলে গত বছরের নভেম্বর মাসে যানবাহন পারাপার শুরু হয় এবং চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে যানবাহন পারাপারে টোল আদায় করা হচ্ছে।
মোটরসাইকেল আরোহী মো. দিদার বলেন, সেতু দিয়ে এক পাশের গাড়ি পার হওয়ার সময় অপর পাশের গাড়ির লাইন পড়ে যায়। অনেক সময় তাড়া থাকায় সেতুর বিপরীত দিক থেকে গাড়ি আসলেও চলে যেতে হয়। তবে এখন বড় গাড়ি পারাপার না হওয়ায় মোটরসাইকেল অনায়াসে পার হতে পারে।
জানা গেছে, সেতু পারাপারে মোটরসাইকেল থেকে টোল আদায় বন্ধে ছাত্র জনতা ও বাইক চালকরা আন্দোলন করে আসছে। ফলে মোটর সাইকেল থেকে টোল নিচ্ছেন না ইজারাদার প্রতিষ্ঠান মাওয়া এন্টারপ্রাইজ।
এছাড়া প্রায় শতবর্ষী এ সেতু থেকে টোল আদায়ের ইজারা বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
পূর্বকোণ/পূজন/জেইউ