চট্টগ্রাম শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫

সর্বশেষ:

টেকনাফ-উখিয়া ক্যাম্পে ৭ বছরে ২২৫টি অগ্নিকাণ্ড

হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১১:২১ পূর্বাহ্ণ

সীমান্তের উখিয়া-টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়ানক সব অগ্নিকাণ্ডে ঘটনা ঘটেই চলেছে। এতে দিন দিন বেড়েই চলেছে প্রাণহানি, ঘর ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি। গত সাত বছরে বড়-ছোট মিলে অন্তত ২২৫টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কিছু অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডার থেকে ঘটেছে বলে প্রচার পেলেও বেশিরভাগ অগ্নিকাণ্ডের সূত্র অজানাই থেকে গেছে। এসব অগ্নিকাণ্ড রহস্যঘেরা বলেই মনে করছেন সাধারণ রোহিঙ্গারা।

 

জানা গেছে, সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ২০২১ সালের ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্পে। আগুনে বালুখালীর পাঁচটি ক্যাম্পে ১০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বসতি পুড়ে ছাই হয়। তখন ছয় শিশুসহ অন্তত ১৪ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছিল। গৃহহীন হন ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা। গত ৩০ জানুয়ারি সকালে উখিয়ার ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৪টি শেল্টার ও একটি দোকানঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তবে এ ঘটনায় কোন হতাহতের খবর মিলেনি।

 

এর আগে ২২ জানুয়ারি উখিয়ার ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সবকিছু হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কেটেছে কয়েক হাজার রোহিঙ্গার। আগুনে পুড়ে ছাই হয় রোহিঙ্গাদের ৬০০’র বেশি বসতি, মারা যান শিশুসহ দু’জন।

 

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। শুধুমাত্র রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন থামিয়ে রাখতেই এসব অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হয় বলে আমাদের ধারণা। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছোট-বড় সাতটির অধিক অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

 

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার সামছুদ্দৌজা নয়ন বলেন, অগ্নিকাণ্ড অনাকাক্সিক্ষত দুর্যোগ। গত সাত বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছোট-বড় সোয়া ২০০টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি দুই ঘণ্টার অগ্নিকাণ্ডে ক্যাম্পের ৬১৯টি রোহিঙ্গা বসতি পুড়ে গেছে। তাতে তিন হাজার ২০০ রোহিঙ্গা ক্ষতিগ্রস্ত হন। আগুনে পুড়ে মারা যান দু’জন। অধিকাংশ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা স্বজনের ঘরে অবস্থান নেন। ধ্বংসস্তূপের ওপর স্থায়ী ঘর নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। নকশার কাজ শেষ হয়েছে, নির্মাণকাজ শুরু হবে।

 

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) সিরাজ আমিন জানান, ক্যাম্পে প্রায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে তদন্ত চলছে। কেউ শত্রুতামূলক আগুন লাগানোর ঘটনা প্রমাণ হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট