চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫

সর্বশেষ:

রামগড় স্থলবন্দরে অলস সময় পার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের

নিজাম উদ্দিন লাভলু, রামগড়

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১১:০৯ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়ির সীমান্তবর্তী উপজেলা রামগড়ে স্থাপিত স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালু না হওয়ায় বন্দরে নিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রায় চার বছর ধরে কর্মহীন অবস্থায় বসে বসে সময় কাটাচ্ছেন। বর্তমানে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়োগ করা পাঁচজন কর্মকর্তা-কর্মচারী, আউটসোর্সিংয়ে চারজন সিকিউরিটি গার্ড ও পরিচ্ছন্নকর্মী ও একজন ট্রাফিক পুলিশ ইন্সপেক্টর পোস্টিং রয়েছে।

 

এছাড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের রোড লোড স্কেল প্রকল্পে ১৩জন আনসার সদস্য নিয়োজিত আছে। কাজ কর্ম না থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনিচ্ছাসত্ত্বেও বাধ্য হয়ে অলস সময় কাটাতে হচ্ছে। এদিকে, স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান স্থলবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. সরওয়ার আলম।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের আগস্টে বন্দর ইনচার্জ, ট্রাফিক ইন্সপেক্টরসহ বিভিন্ন পদে লোকবল পোস্টিং দেয় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। এর পরের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের নভেম্বরে পোস্টিং দেয়া হয় কাস্টমসের একজন সহকারী কমিশনার, একজন রাজস্ব কর্মকর্তা, একজন সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা ও দুইজন সিপাহী। ঐবছর পোস্টিং দেয়া হয় পুলিশের একজন ট্রাফিক ইন্সপেক্টরকে।

 

এছাড়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর আইসিপিতে নিয়োজিত করা হয় বিজিবি সদস্যদের। সূত্র জানায়, গত বছরের মার্চে কাস্টমসের সহকারী কমিশনার, রাজস্ব কর্মকর্তা, সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা ও সিপাহীদের সীতাকুণ্ড ও খাগড়াছড়িতে সংযুক্তি আদেশে বদলি করা হয়েছে। রামগড় বন্দর

 

ইনচার্জ মো. আমান উল্লাহ বলেন, বর্তমানে তিনি ছাড়াও দুইজন বন্দর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর, একজন ওয়্যার হাউস সুপারিনটেনডেন্ট, একজন কম্পিউটার অপারেটর, পাঁচজন নিরাপত্তা প্রহরী ও তিনজন পরিচ্ছন্নকর্মী কর্মরত আছেন। ২০২৪ এর মে মাসে রামগড়ে যোগদান করেছি। এর আগে আরও দুইজন বন্দর ইনচার্জ এখানে যোগদানের কয়েক মাস কর্মরত থেকে পরে অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন।

 

 

তিনি আরও জানান, কার্যক্রম চালু না হওয়ায় এখানে কোন কাজকর্ম নেই। ফলে অলস সময় কাটাতে হচ্ছে তাদের। রামগড় ৪৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ জানান, বন্দরে বিজিবি আইসিপি ও মৈত্রী সেতুর চেক পোস্টে আটজন বিজিবি সদস্য নিয়োজিত আছেন। আইসিপিতে কোন কাজ না থাকলেও রুটিন ডিউটি চলছে। তবে মৈত্রী সেতুর চেক পোস্টে সীমান্ত নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকে বিজিবি।

 

অন্যদিকে, বন্দরের পণ্যবাহী যানবাহনের ওজন পরিমাপের কাজের জন্য প্রায় একশ কোটি টাকা ব্যয়ে জাইকা’র নির্মিত এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রক স্কেল প্রকল্পে ১৩ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত আছে। কর্মরত আনসারের প্লাটুন কমান্ডার মো. আবুল হাশেম বলেন, গত বছরের জুন মাসে স্কেলে ১৩জন আনসার সদস্য পোস্টিং দেয়া হয়। তারা শুধুমাত্র প্রকল্পের নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত আছেন বলে জানান।

 

এদিকে, রামগড় স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালুর ব্যাপারের এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গেছে। গত ১২ জানুয়ারি নৌ পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন রামগড় স্থল বন্দর পরিদর্শন করে যাওয়ার পর এ বন্দর চালু হলে লাভ-ক্ষতি কি হতে পারে তা নিরুপণের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়।

 

কমিটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন পেশ করার পর বন্দরটি চালু করা না কারার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান নৌ পরিবহন উপদেষ্টা। তবে কমিটি এখনও রামগড় স্থল বন্দর পরিদর্শনে আসেননি জানান সংশ্লিষ্টরা।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট