বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের যে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে তা কাটানোর আশা নিয়ে বৈঠকে বসেছেন দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় এই বৈঠক শুরু হয়।
এফওসিতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন। আর ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেদেশের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। এ বৈঠকে অংশ নিতে বিক্রম মিশ্রি সকালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি উড়োজাহাজে ঢাকায় এসেছেন।
এই এফওসিতে বেশ কয়েকটি বিষয় আলোচনায় থাকছে। বিশেষ করে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ভারতীয় গণমাধ্যম এখন বাংলাদেশবিরোধী যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, সে বিষয়টি ঢাকার পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হতে পারে। এছাড়া ভারতে বাংলাদেশ মিশনের নিরাপত্তা, সীমান্ত হত্যা, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, নিত্যপণ্য আমদানি, ভিসা ইস্যু ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হবে বলে আভাস পাওয়া গেছে।
বৈঠকের আলোচনার বিষয়বস্তু জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রফিকুল আলম জানিয়েছেন, এফওসিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে যত উপাদান আছে সবই রাখার চেষ্টা করা হয়। আলোচ্যসূচি ঠিক করার ক্ষেত্রে দুই পক্ষের সম্মতিও লাগে। তবে সাধারণভাবে যেটা বলা যায়, বাণিজ্য আছে, কানেক্টিভিটি আছে, সীমান্ত আছে, পানি আছে।
রাজনৈতিক পরিবর্তনে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম ভারতের কোনো শীর্ষ কূটনীতিক ঢাকায় এলেন। যদিও ৫ আগস্টের পর গত চার মাসে দুদেশের তিনটি টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক হয়েছে। তবে এমন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক এখনো হয়নি।
এই বৈঠকের মধ্যে দিয়ে দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন অনেকটা প্রশমিত হতে পারে বলে ইতোমধ্যেই ঈঙ্গিত দিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমরা (ঢাকা-দিল্লি) স্বাভাবিক সম্পর্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছি। আর এফওসি সেদিকে এগোনোর প্রথম পদক্ষেপ। এফওসির মধ্যে দিয়ে ঢাকা ও নয়াদিল্লি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে বাস্তবসম্মতভাবেই এগিয়ে যেতে পারে। ’
গত বছরের ২৪ নভেম্বর দুই দেশের মধ্যে এফওসি বৈঠক হয়েছি। সেই বৈঠকে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। আর ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা। এক বছরের ব্যবধানে দুই দেশেরই পররাষ্ট্র সচিব পরিবর্তন হয়েছে।
পূর্বকোণ/পিআর