ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) আছাদুজ্জামান মিয়াকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক গোলাপ মাহমুদ। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করা হয়। আছাদুজ্জামান মিয়ার পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতে সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আশ্রাফ আলী এ তথ্য জানান।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভার এলাকা থেকে আছাদুজ্জামান মিয়াকে গ্রেপ্তার করেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি খিলগাঁও এলাকায় পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নুরুজ্জামান জনি নিহত হন। এ ঘটনার ৯ বছর পর গত ২ সেপ্টেম্বর জনির বাবা ইয়াকুব আলী খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। মামলা পুলিশের ১৩ সদস্য এবং সাবেক এমপি সাবের হোসেন চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের ৪৯ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি সকাল আনুমানিক ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে নূরুজ্জামান জনি ও তার সহপাঠী মইন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ছোট ভাই মনিরুজ্জামান হীরাকে দেখতে যান। কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফেরার পথে আসামিরা জনি ও মইনকে ডিবি পরিচয়ে আটক করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে নির্যাতন চালায়।
নুরুজ্জামান জনির স্ত্রী মুনিয়া পারভিনসহ আত্মীস্বজনরা খিলগাঁও থানা, ডিবি দক্ষিণ অফিস, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অফিসসহ বিভিন্ন থানায় খোঁজ করেন। প্রায় দুই দিন ধরে খোঁজাখুঁজির পরও নুরুজ্জামান জনির কোনও সন্ধান পাওয়া যায় না।
২০ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার দিকে খিলগাঁও থানার জোড়াপুকুর খেলার মাঠের আশপাশের মানুষজন কান্নার শব্দ শুনতে পান। নির্যাতিত ব্যক্তি চিৎকার করতে থাকেন। ঘটনাস্থলের পাশে সি ব্লকের বাসিন্দা লাভলী বেগম ও এ ব্লকের বাসিন্দা সাইফুদ্দিনের স্ত্রী সানজিদা আক্তার সেতু কান্না ও চিৎকারের শব্দ শুনতে পান। সেই সময় গুলির শব্দ পান আশপাশ এলাকার বাসিন্দারা। ভোরে বাদীসহ প্রতিবেশীরা খিলগাঁও থানার জোড়াপুকুর মাঠের দিকে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের দেখতে পান। পুলিশ বলে, নুরুজ্জামান জনি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। তার মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। বাদী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে গিয়ে দেখতে পান নুরুজ্জামানের বুকের বামে, ডান দিকে, দুই হাতের তালুতে ১৬টি গুলির চিহ্ন রয়েছে।
পূর্বকোণ/পিআর