গরমে কাহিল অবস্থা হয় অনেকের। সারাদিনের ব্যস্ততায় পথ চলতে শরীরে ঘামের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পানি বেরিয়ে যায়। এতে শরীর নিস্তেজ হয়ে আসে। এমন পরিস্থিতিতে স্বস্তি এনে দিতে পারে ডাবের পানি। শুধু ডিহাইড্রেশন থেকে রক্ষা নয়, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলাসহ ডাবের পানিতে আছে আরো অনেক গুণ।

ত্বকের ইনফেকশন ও অন্যান্য সমস্যায় ডাবের পানির ব্যবহার বেশ প্রচলিত। এতে আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ। এছাড়া ডাবের পানি ত্বকের অতিরিক্ত তেলকে দূর করতে ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও কাজ করে। ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে ডাবের পানি বেশ কার্যকর। এতে আছে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি- যা ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণ করে।

হাড়কে মজবুত রাখার জন্য দরকার ক্যালসিয়ামসহ আরো অনেক পুষ্টিগুণ। ডাবের পানিতে যে ক্যালসিয়াম আছে তা হাড়ের জন্য একটি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। যাদের অ্যাকনের সমস্যা রয়েছে, তারা ডাবের পানি তুলায় ভিজিয়ে ত্বকের উপর লাগাতে পারেন। ডাবের পানি খেলে মুখের ত্বক আদ্র হয়। পাশাপাশি বেশ তরতাজাও দেখায়। তাছাড়া ডাবের শাঁসে যে ক্যালরি রয়েছে তা কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং চেহারায় বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। অতিরিক্ত গরমের ফলে শরীরে ঘামের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পানি বেরিয়ে যায়। ডাবে আছে কার্বোহাইড্রেড যা শক্তি বাড়ায় এবং শরীরে পানি শূন্যতা পূরণ করে। ডাবের পানিতে যে প্রাকৃতিক শর্করা ও মিনারেল রয়েছে তা শরীরকে শীতল ও আর্দ্র রাখে। এজন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যোদ্ধাদের স্যালাইনের বিকল্প হিসেবে ডাবের পানি দেওয়া হতো। এর ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও ফাইবার কর্মশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

ডাবের পানি খেলে দীর্ঘসময় পেট ভরা থাকে এবং ক্ষুধার প্রবণতা কমে আসে। ফলে কম খাওয়া হয়। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডাবের পানিতে কোনো চর্বি নেই, বরং এটি শরীরের অতিরিক্ত চিনি শোষণ করে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়া ডাবের পানি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। ফলে গরমের সময়ও শরীর সুস্থ ও সতেজ থাকে।

ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। হজমশক্তি অনেক বাড়িয়ে তোলে। যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন তাদের জন্যও ডাবের পানি খুব উপকারী। এছাড়া ডাবের পানিতে রয়েছে ডাই-ইউরেটিক উপাদান যা ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশনের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়াকে নষ্টই শুধু করে না পাশাপাশি শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তোলে।

পূর্বকোণ/পিআর