চট্টগ্রাম রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে বসল আধুনিক ওয়াশিং প্ল্যান্ট

১২ এপ্রিল, ২০২২ | ২:০৫ অপরাহ্ণ

ইমাম হোসাইন রাজু

দুই কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ের অত্যাধুনিক ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। ইতোমধ্যে আধুনিক এ প্ল্যান্টের কাজও সমাপ্ত হয়েছে। এখন শুধুই উদ্বোধনের অপেক্ষায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর প্রথম নিজস্ব ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়। এতদিন বেসরকারিভাবে রোগী ও হাসপাতাল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহৃত কাপড় ও লিলেন সামগ্রী জীবাণুমুক্ত করতে হতো। তবে নিজস্ব ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপনের ফলে অনেক সরকারি রাজস্ব সাশ্রয় হবে বলেও মত সংশ্লিষ্টদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারিতে কোভিড রোগীদের ব্যবহৃত কাপড় এবং হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের পোশাক পরিষ্কার ও জীবানুমুক্ত করতে নিজস্ব ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়। এ নিয়ে একই বছরের ১৩ জানুয়ারি বরাদ্দও চাওয়া হয়। পরবর্তীতে বিশ্ব স্বাস্থ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফও) এর আওতায় ১ কোটি ৯১ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যেও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়াশিং মেশিন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ড্রায়ার মেশিন ও আয়রণ মেশিন ক্রয় করা হয়। চীনের তৈরি এসব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে রাজধানী ঢাকার ব্লু ক্যানভাস লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। আর এসব মেশিন ও প্ল্যান্ট স্থাপনে খরচ হয় ২২ লাখ ৭২ হাজার টাকা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যার এ জেনারেল হাসপাতাল স্থাপনের পর রোগীদের ব্যবহৃত বিছানার চাদর, বেডশিট, অস্ত্রোপচারসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ব্যবহৃত কাপড় জীবাণুমুক্ত করার মতো উপযুক্ত ব্যবস্থা ছিল না। এরমধ্যে ২০২০ সালের শুরুতে হাসপাতালটি করোনা ডেডিকেটেড হিসেবে ঘোষণা হওয়ার পর করোনা রোগী বাড়তে থাকে। যেখানে ২৫০ শয্যার হাসপাতালের বিপরীতে প্রায় সাড়ে তিনশ’ করোনা রোগীও ভর্তি থাকতো। কিন্তু এতসব রোগীদের ব্যবহৃত এসব কাপড় জীবাণুমুক্ত করতে গিয়ে হিশশিমে পড়তে হয়। ফলে এসব নিনে নানাভাবে সমস্যায় পড়তো হত। তাছাড়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাইরে থেকে এসব কাপড় জীবাণুমুক্ত করে আনা নেওয়ার ক্ষেত্রেও সময়ের প্রয়োজন হতো। তবে আধুনিক এ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপনের ফলে সেই সময়ও এখন আর প্রয়োজন হবে না বলে মত সংশ্লিষ্টদের।

প্ল্যান্ট স্থাপন সংশ্লিষ্টদের মতে, মাত্র ৩ ঘণ্টার মধ্যেই ১ কেজি কাপড় ওয়াশ হয়ে তা আয়রণ (ইস্ত্রি) হয়ে যাবে। এতে তেমন সময়ের প্রয়োজন হবে না। কিংবা আলাদা করে শুকানোরও প্রয়োজন হবে না। আধুনিক এ প্ল্যান্টের মাধ্যমে প্রতিদিনের ব্যবহৃত কাপড় প্রতিদিনই ওয়াশ বা জীবাণুমুক্ত করে তা পুনরায় আয়রণ বা ইস্ত্রি করা সম্ভব হবে।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (উপ-পরিচালক) ডা. সেখ ফজলে রাব্বি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘রোগী ও হাসপাতালে ব্যবহৃত লিলেন সামগ্রী ঠিকাদারদের দিয়ে জীবাণুমুক্ত করানো সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ী নয়। তাছাড়া অনেক সময় তা মান সম্মতও হয় না। কিন্তু এখন নিজস্ব প্ল্যান্টে তা দ্রুত সময়ের মধ্যেই জীবাণুমুক্ত করে সহজে তা উপযোগী করা যাবে। ইতোমধ্যে প্ল্যান্ট স্থাপনের সকল কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। আমরা চেয়েছি প্ল্যান্টটি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শিক্ষা উপমন্ত্রীকে দিয়ে উদ্বোধন করতে। এরপরই আমরা কাজ শুরু করব। আশা করছি খুব শীঘ্রই আধুনিক এ ওয়াশিং প্ল্যান্ট চালু করা যাবে।’

 

পূর্বকোণ/এস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট