চট্টগ্রাম বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

অনলাইন আবেদন শুরু ২৮ জানুয়ারি

মালয়েশিয়ায় বৃক্ষরোপণ খাতে কর্মী যাবে ৩২ হাজার

মোহাম্মদ আলী

১৬ জানুয়ারি, ২০২২ | ১:০০ অপরাহ্ণ

মোহাম্মদ আলী

আগামী ২৮ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মী নিয়োগে অনলাইন আবেদন শুরু হবে। প্রথমে প্ল্যান্টেশন খাতে আবেদন করতে হবে। বৃক্ষরোপণ খাতসহ অন্যান্য খাতে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বিদেশি কর্মী নিয়োগে নিয়োগকর্তারা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
১৫ জানুয়ারি মানব সম্পদমন্ত্রী স্বাক্ষরিত এক নোটিশে বলা হয়েছে, দেশটিতে বৃক্ষরোপণ খাতে শ্রমিক ঘাটতি কমাতে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৩২ হাজার বিদেশি শ্রমিক আনার জন্য সরকার বিশেষ অনুমোদন দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবার কর্মী প্রেরণে বাধ্যতামূলক বিমা এবং দেশে ফেরার ব্যবস্থাও থাকছে। এসব খরচ বহন করবেন মালয়েশিয়ান নিয়োগদাতা। চুক্তি মেয়াদে কর্মীদের দায়িত্ব নিতে হবে মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সিকেও। মালয়েশিয়া প্রেরণে কর্মীদের বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত। তাছাড়া মালয়েশিয়ায় আসার পর বাংলাদেশি কর্মীর ইমিগ্রেশন ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ, ইন্সুরেন্স সংক্রান্ত খরচ, করোনা পরীক্ষার খরচ, কোয়ারেন্টিন সংক্রান্ত খরচসহ সব ব্যয় বহন করবে মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি। নিয়োগকর্তা কর্মীর মানসম্মত আবাসন, চিকিৎসা ও কল্যাণ নিশ্চিত করবেন। তাতে বাংলাদেশি কর্মীদের অভিবাসন খরচ অনেক কমে যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, মানবসম্পদ মন্ত্রী, নিয়োগকর্তাদের সরকার থেকে নির্ধারিত বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) মেনে চলার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন। সমস্ত বিদেশি কর্মীদের ৭ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। যার মধ্যে তাদের কোভিড-১৯ এর জন্য দুইবার স্ক্রিন করা হবে এবং নিয়োগকর্তারা এর খরচ বহন করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ ডিসেম্বর কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে শ্রম বাজার নিয়ে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়। এ সময় উভয় দেশের দুই মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি, আধুনিক জীবনযাত্রা, ভালো উপার্জন আর সাংস্কৃতিক মিল থাকায় নিরিবিলি বসবাসের স্বপ্ন নিয়ে প্রতি বছর মালয়েশিয়ায় যান অসংখ্য কর্মী। বর্তমানে দেশটিতে রয়েছেন ১০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি। সবশেষ ২০১৮ সালে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার। কিন্তু ওই বছরই সেপ্টেম্বরে দেশটির নতুন সরকার কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় এবং গত প্রায় দুই বছর ধরে করোনাভাইরাসের কারণে সেখানে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা ছিল নামমাত্র। দীর্ঘ তিন বছর বন্ধ থাকার পর গত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে অনুমোদন দেয় মালয়েশিয়া। সব সেক্টরে কর্মী নেওয়ার অনুমোদন দেয় দেশটির মন্ত্রী পরিষদ। বিশেষ করে গৃহকর্মী, বাগান, কৃষি, উৎপাদন, পরিষেবা, খনি ও খনন এবং নির্মাণ খাতে বাংলাদেশি কর্মী নেবে দেশটি। চুক্তি সই সম্পন্ন হওয়ায় এসব খাতে বাংলাদেশি কর্মীরা দেশটিতে যেতে পারবে।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার চেষ্টা বারবার ব্যাহত করেছে ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সি। তাদের তৈরি সিন্ডিকেট অবৈধভাবে এ বাজার দখলের চেষ্টায় ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এটি বন্ধ হয়ে যায়। তবে কর্মী প্রেরণে আবারও সিন্ডিকেটের সক্রিয় হয়ে ওঠার শঙ্কা করছেন এ খাতে জড়িত সংশ্লিষ্টরা।
জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজারের নতুন করে কর্মী প্রেরণে যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তাকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। সেদেশে যেতে ইচ্ছুক কর্মীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়া হবে।’

 

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট