চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ ধামে তিন দিনব্যাপী শিব চতুর্দশী মেলা শুরু হয়েছে। মেলাকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার থেকেই দেশ-বিদেশের পূণ্যার্থীদের ঢল নামে তীর্থ ভূমিতে।

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) থেকে শুরু হওয়া এ মেলা শেষে হবে আগামী ১৩ মার্চ।

জানা গেছে, সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ ধামে আনুমানিক সাড়ে তিনশ বছরেরও আগে শিব চতুর্দশী মেলা শুরু হয়। প্রতিবছর ফাল্গুনি চতুর্দশী তিথিতে দেবাধিদেব মহাদেবের (শিব) পূজাকে কেন্দ্র করে এই মেলায় ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তা, সাধু-সন্নাসীসহ ১০ থেকে ১২ লাখ দর্শনার্থীর পদভারে মুখরিত থাকে তীর্থভূমি। এবার সেই পূণ্যক্ষণ শিব চতুর্দশী তিথি শুরু হয়েছে আজ বিকাল ৩টা ১২ মিনিটে। তিথি থাকবে কাল শুক্রবার বিকাল ৩টা ৪৬ মিনিট পর্যন্ত। ভক্তরা এই পূণ্য তিথির মধ্যেই দেবাধিদেব মহাদেবের সন্তুষ্টি সাধনে পূজা অর্চনা করে থাকেন। ফলে আজ ও কাল দুই দিনেই মেলায় প্রতিবছরের মত কমপক্ষে আট থেকে দশ লাখ দর্শনার্থীর আগমন হতে পারে।

এদিকে শিব চতুর্দশী তিথিতে পূজা দিতে গত দুই দিনে সীতাকুণ্ডে এসে পৌঁছেছেন লক্ষাধিক পূণ্যার্থী। চন্দ্রনাথ ধাম মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পলাশ চৌধুরী জানান, হিন্দুশাস্ত্র মতে দেবাধিদেব মহাদেব বলেছেন ‘কলিকালে আমি চন্দ্রনাথে অবস্থান করিব’। এই তীর্থ যিনি দর্শন করবেন তার আর পুনর্জন্ম হবে না, তিনি স্বর্গবাসী হবেন। মূলত মহাদেবের এই বাণীকে মনে প্রাণে ধারণ করে সনাতন ধর্মালম্বীরা জীবনে একবারের জন্য হলেও মহাতীর্থ চন্দ্রনাথ ধামে ছুটে আসেন। এখানে পূণ্যস্নান শেষে অর্ধ শতাধিক মন্দিরে পূজা অর্চনা, পূর্বপূরুষদের আত্নার শান্তির জন্য শ্রাদ্ধ-তর্পনের মধ্য দিয়ে পূণ্য অর্জন করেন। এছাড়া চন্দ্রনাথের অঙ্গতীর্থ বাড়বানল ও লবনাক্ষ দর্শন করেন।

মেলা কমিটির কার্যকরী সভাপতি সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, ‘দেশে হঠাৎ করোনা আবার বাড়ছে। এটি মাথায় রেখেই সবাইকে এবার তীর্থ দর্শন করতে হবে। প্রতিদিন লোকাল ট্রেন ছাড়াও ৬টি আন্তঃনগর ট্রেন সীতাকুণ্ডে থেমে যাত্রী আনা নেওয়া করবে। তিনি আশা করছেন কোনরকম ঝামেলা ছাড়াই মেলা সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হবে।’

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, ‘মেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আড়াই’শ পুলিশ সদস্য ছাড়াও আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। আছেন র‌্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীও। সবাই মিলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছেন তারা।’

পূর্বকোণ/পিআর