চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

লেখকের দৃষ্টিতে বইমেলা

২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৪:৫৮ পূর্বাহ্ণ

মোদাচ্ছের আলী, শিশু সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক। লেখালেখিই যার ধ্যান-জ্ঞান। চাকরির পাশাপাশি পুরো সময় ব্যয় করেন লেখালেখি আর পড়াশোনাতে। এবারের বইমেলায় চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন ‘দেশের ছড়া দশের ছড়া’ ও আদিগন্ত প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে ‘গল্পটি মুক্তিযুদ্ধের’। শিশুতোষ লেখালেখির পাশাপাশি নিয়মিত কলাম ও প্রবন্ধ লিখে চলেছেন দৈনিকে। সম্প্রতি পূর্বকোণের পক্ষ হতে লেখকের কাছে কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল। লেখক খুব সুন্দর করে তার উত্তর দিয়েছেন। পাঠকদের জন্য উত্তরগুলো তুলে ধরা হলো। কেন বই প্রকাশ করেন প্রশ্নের জবাবে বলেন, বই হচ্ছে একজন লেখকের সৃষ্টির মুদ্রিত প্রতিফলন। আমার চিন্তার প্রতিফলন আমার লেখা, যেটি অন্য অনেকের সাথে মিল নাও থাকতে পারে। তাই লেখক হিসেবে আমি বই

প্রকাশ করার পক্ষে। দ্বিতীয়ত বঙ্গবন্ধু, দেশ, মুক্তিযুদ্ধ আমার লেখার মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। সেক্ষেত্রে এই বিষয় নিয়ে বই যত বেশি প্রকাশ হবে মানুষ তত ঋদ্ধ হবে।

বই প্রকাশের অনুভূতি নিয়ে লেখক বলেন, প্রথম বই প্রকাশ’র অনুভূতি রোমাঞ্চকর। আমি বলি প্রথম সন্তানের মতো। কিন্তু প্রতিটি বই আমার কাছে সন্তানের মতো। এখনো প্রতিটি নতুন বই প্রকাশের পর কপি হাতে নিয়ে গন্ধ নেই। এই গন্ধ লক্ষ টাকা দামের সুগন্ধির চেয়েও অধিক।
বই প্রকাশে জটিলতা নিয়ে লেখক জানান, এটি সব লেখককেই কম বেশি পোহাতে হয়েছে। অঙ্কন শিল্পী থেকে কাভার পেতে দেরি হওয়া, মুদ্রণ ত্রুটি, বানান বিভ্রাট, ঠিক সময়ে বই হাতে না পাওয়া এগুলো তো আছে এবং এগুলো থাকবে। তবে সমস্যাকে জয় করে এগিয়ে যাওয়া উচিৎ।
বই বিক্রির ব্যাপারে লেখক বলেন, অনেকে হতাশ হন। কিন্ত আমি মনে করি এতে হতাশ হওয়ার কারণ নেই। আপনার লেখা পাঠককে ছুঁতে পারলেই হতাশা দূর হবে। বই মেলায় অনেককেই দেখি একটু পরিচিত হলেই সেই সূত্র ধরে নিজের বই কিনতে বলেন। আমি এর বিপক্ষে। আমার বই অমুক প্রকাশনে পাবেন। এতটুকু বলা যায়। স্টলে আসলে দেখতে দেয়া যায়। কিনতে জোর করাটা অর্থাৎ হাতে ধরিয়ে দেয়াটা আমার পছন্দ নয়।
তরুণ লেখকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘এক কথায় আমি তরুণদের বন্ধু। তরুণরাই সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে একটি কথাই শুধু বলবো ‘পড়া’। এর বিকল্প নেই। পড়া ও লেখালেখি পাশাপাশি চলতে হবে।

প্রকাশিত বই নিয়ে বলেন, ‘এবার চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে ছড়ার বই ‘দেশের ছড়া দশের ছড়া’ এর প্রতিটি ছড়া বর্তমান সময়কে ধারণ করে। যারা ভ-, দেশবিরোধী, বিভিন্ন সামাজিক অনাচার নিয়ে ছড়াগুলো লেখা। ছড়াগুলো ইতোমধ্যেই আমি কয়েকটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে পড়েছি এবং শ্রোতা দর্শকদের কাছে বেশ সাড়া পেয়েছি। আর একটি বই প্রকাশ করেছে আদিগন্ত প্রকাশন। বইয়ের নাম ‘গল্পটি মুক্তিযুদ্ধের’। ছোটদের জন্য লেখা আমার শৈশবে দেখা মুক্তিযুদ্ধের সত্য ঘটনা নিয়ে। বইটি শিশু কিশোরদের ভালো লাগবে বলে আমার বিশ্বাস।
বইমেলা নিয়ে তিনি বলেন, গেলবার চট্টগ্রামে সম্মিলিত মেলা ছিল প্রথম বার। তাই ভুলত্রুটি থাকবেই। আয়োজক সিটি কর্পোরেশন এবং মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন যথেষ্ট আন্তরিক। এইবার দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সবাই মতামত দিয়েছে। সাংস্কৃতিক ও আলোচনা অনুষ্ঠান স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়ামে স্থানান্তর করায় মাঠে স্টলের সংখ্যা বেড়েছে। চলাচলের পথ প্রশস্ত হয়েছে। মানুষ নির্বিঘেœ এক স্টল থেকে আরেক স্টলে যাচ্ছে। স্টলের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বইয়ের সংখ্যাও বেড়েছে। ফলে এবারের মেলার পরিসর বেশ বড়। যেটি চট্টগ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট