চট্টগ্রাম শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪

ফার্নিচার বাণিজ্যের জন্য প্রয়োজন নীতি সহায়তা

মো. মাকসুদুর রহমান,সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি (চট্টগ্রাম বিভাগ)

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৫ এপ্রিল, ২০২৪ | ১১:৪৯ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশে ফার্নিচার খাত শ্রম, পুঁজি ও প্রযুক্তিঘন। জনবহুল বাংলাদেশে এ পণ্যের সম্ভাবনার ব্যাপকতা থাকলেও রপ্তানি খুব একটা সম্প্রসারিত হচ্ছে না। ফার্নিচারের প্রধান বাজার ইউএসএ এবং ইইউ দেশসমূহে বাংলাদেশের রপ্তানি মাত্র ০.১০%। শ্রমমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় চীন এ খাত থেকে ক্রমশ সরে যাচ্ছে। সরকারের নীতি সহায়তা পেলে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারে বাংলাদেশ।

 

আসন্ন জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫ প্রসঙ্গে বাজেট ভাবনা নিয়ে আলোচনায় বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি চট্টগ্রাম বিভাগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাকসুদুর রহমান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ফার্নিচারের বিশ্ববাণিজ্যে চীনের কারণে সৃষ্ট এ শূন্যতা পূরণে শ্রম উদৃত্ত বাংলাদেশ সক্ষম। নীতিগত সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে ভিয়েতনাম ফার্নিচার খাতে দ্রুত উন্নয়ন সাধন করছে। কিন্তু বাংলাদেশের ফার্নিচার খাত ১০০% রপ্তানিমুখী না হওয়ায় বন্ড সুবিধা পাচ্ছে না।

 

ফার্নিচার রপ্তানিকারক সমিতি থেকে ফার্নিচার শিল্পে আংশিক রপ্তানিমুখী শিল্প খাত হিসেবে শতভাগ ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে শুল্ক বন্ড সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তুতা বাস্তবায়ন করা হয়নি। কাঁচামাল আমদানি নির্ভর পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক বন্ড সুবিধা সম্প্রসারণ রপ্তানি পণ্য মূল্য প্রতিযোগিতার অন্যতম কৌশল হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন চুলচেরা বিশ্লেষণসহ প্রতিবেদন প্রণয়ন করেছে।

 

এসব প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আংশিক রপ্তানিমুখী কাঁচামাল আমদানি নির্ভর সম্ভাবনাময় পণ্য খাতসমূহকে জামানত হিসেবে ১০০% ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে শুল্ক বন্ড সুবিধা প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বিষয়টি রপ্তানি সংশ্লিষ্ট বিধায় রাজস্ব হ্রাস/বৃদ্ধির সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এবং শতভাগ নিরাপদ মর্মে মত দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয় বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোসহ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উন্নয়নে জড়িত প্রতিষ্ঠানসমূহের সুপারিশ এবং প্রতিবেদনে প্রতিফলিত হয়েছে।

 

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রপ্তানি সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির ১১তম সভায় তৈরি পোশাক শিল্পের ন্যায় সকল শিল্পখাতে বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধা প্রদান সংক্রান্ত বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাস্তবায়নে কার্যকর কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। যার কারণে রপ্তানি আয় সম্প্রসারণে পরিপূর্ণ ইতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

 

বন্ধ খাতে সূচনালগ্নে কিছু যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত যেমন : কাটিং ও মেকিং চার্জ ভিত্তিতে ন্যূনতম ২৫% মূল্য সংযোজনপূর্বক রপ্তানির সুযোগদান, এল/সিকে মর্টগেজ হিসেবে বিবেচনা, স্পেশালাইজড বন্ড সুবিধা প্রদান ইত্যাদির কারণে বস্ত্রখাত নির্ভরশীল পণ্য খাত হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছে।

 

ফার্নিচার খাতে প্রস্তাবিত সুবিধা প্রদান করা হলে ফার্নিচারও কর্মসংস্থান ও রপ্তানিতে দেশের অর্থনীতিতে নির্ভরশীল পণ্যখাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। বেসরকারি খাতের একক প্রচেষ্টার ফলেই খাতটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। বস্ত্রখাতের ন্যায় ফার্নিচার খাতে বর্ণিত সুবিধা প্রদান করা হলে দেশের মজবুত অর্থনৈতিক ভিত রচনায় ফার্নিচার খাত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, ২০৪১ বাস্তবায়নে খাতটি অবদান রাখবে যা উন্নত দেশের মর্যাদা অর্জনে সহায়ক হবে।

পূর্বকোণ/এসএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট