রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন প্রশাসনিক-একাডেমিক ভবনের কাজে চাঁদা দাবি করে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার হুমকি দিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে এ দুটি ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। এটি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মচারী এবং নির্মাণ সংশ্লিষ্টদের মানসিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে বলে জানা গেছে।
একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে ভারী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীদের অবাধ বিচরণ, চাঁদা দাবি, হুমকিসহ মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পুরো ক্যাম্পাসজুড়েই আতঙ্কের পাশাপাশি রাবিপ্রবি’র শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার-পরিজনদের মধ্যে উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। এই ধরনের একটি সশস্ত্র মহড়ার ঘটনায় সার্বিক নিরাপত্তা গ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোতোয়ালী থানায় জিডি করেছে। রাবিপ্রবি’র সহকারী অধ্যাপক ও প্রক্টর সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে এই সাধারণ ডায়েরি করেছেন বলে প্রতিবেদককে তিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ক্যাম্পাসে বর্তমানে ১৬ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন তলা প্রশাসনিক ভবন ও ১৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন তলা একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ভবন দুটির নির্মাণ চলছে। উভয় ভবনের নির্মাণকাজ পেয়েছে চট্টগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমই-আরবিজেবি। গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সাতজনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী ক্যাম্পাসে ঢুকে ঠিকাদারের কর্মচারীদের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। পরে সন্ত্রাসীরা নির্মাণ শ্রমিকদের থাকার জন্য তৈরি করা টিনশেডের ঘরে ঢুকে তাদের ১০ থেকে ১২টি মোবাইল ফোনসেট ছিনিয়ে নেয়।
সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার আগে চাঁদা না দিলে নির্মাণকাজ বন্ধের হুমকি দেয়। চাঁদা না দিয়ে কাজ চলমান রাখলে পরবর্তী সময়ে ক্ষতি হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পর ঠিকাদারের লোকজন ও শ্রমিকরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানায়।
রাঙামাটি কোতোয়ালী থানার ওসি সাহেদ উদ্দীন জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আতিয়ার রহমান এ ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন, এর আগে সিসিটিভি ফুটেজ না থাকায় কারা চাঁদা চাইতে এসেছিল জানা যায়নি। তবে এবার কারা এসেছে আমরা জানতে পেরেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে দেখবেন।
এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণা এবং অবকাঠামোগত অগ্রগতি মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এটি ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার এখনই উপযুক্ত সময় বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সচেতনমহল।
পূর্বকোণ/ইবনুর