‘আমার মেয়ে কই, আমার মেয়েকে আনো।’ হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা চিকিৎসাধীন মায়ের এই প্রশ্নের উত্তর জানা নেই কারো। চিকিৎসকরা মিথ্যে সান্ত্বনায় ভুলিয়ে রেখেছেন জুবাইরা ফেরদৌস ইশরাকে।
গত বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতে কালুরঘাট সেতুতে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে দুই বছর বয়সী মেহেরিমা নূর আয়েশা। ঈদুল আজহা উপলক্ষে সিএনজি অটোরিকশায় বোয়ালখালীতে আসছিলেন স্ত্রী জুবাইরা ও দুই বছরের মেয়ে সাজ্জাদুন নূর মিঠু। এসময় কালুরঘাট সেতুতে দুর্ঘটনা শিকার হন তারা। এতে আয়েশা ও জুবাইরা ইশরা গুরুতর আহত হন। ওইদিন নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হলে আয়েশাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
দুর্ঘটনায় মেয়েকে হারিয়ে পাগল প্রায় সাজ্জাদুন নূর মিঠু। বোয়ালখালী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাজ্জাদ বারবার কান্না ভেঙে পড়ছেন। বলছেন, ‘আমার মেয়ে ট্রেন পছন্দ করতো। আমি দুললে সেও জিক্ জিক্ করে দুলতো। পেশায় গ্রাফিকস ডিজাইন সাজ্জাদ।
গতকাল শুক্রবার পারিবারিক কবরস্থানে চির নিদ্রায় শায়িত করা হয় আয়েশাকে। তবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা জুবাইরা ফেরদৌস ইশরা জানেন না। মেয়ে আর নেই।
গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম চলছেই। ইশরার প্রশ্নের সম্মুখীন হতে ভয় পাচ্ছেন স্বজনরা। তাই আঁচলে মুখ ঢেকে অশ্রুসিক্ত নয়নে এড়িয়ে যাচ্ছেন তারা।
সাজ্জাদুনের চাচাত ভাই কাউসার বাপ্পি জানান, নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকতেন সাজ্জাদুন। ঈদ উপলক্ষে বাড়ি আসার পথে এ দুর্ঘটনা। আয়েশার দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে তার মাকে বিষয়টি এখনো জানানো হয়নি। দুর্ঘটনায় আয়েশার মা পা ভেঙে গেছে। মানসিক অবস্থাও ভালো নয়। এদিকে সাজ্জাদুনেরও আহাজারি থামছেই না। এ এক কঠিন পরিস্থিতি পার করছি আমরা স্বজনেরা।
পূর্বকোণ/পিআর