গত কয়েকদিন ধরে ঈদের আবেশ ছিল আবুল মনছুরের বাড়িতে। পছন্দ করে কিনেছিলেন কোরবানি দেওয়ার জন্য গরু। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতে সেই আনন্দ মিলিয়ে গেছে কালো মেঘে। কালুরঘাট সেতুতে ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া একটি সিএনজি অটোরিকশার চালক ছিলেন ছেলে তৌহিদ ইসলাম তুষার। ছেলের মৃত্যুতে সব আনন্দ শেষ হয়ে গেছে।
বোয়ালখালী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর গোমদণ্ডী বাংলাপাড়ার প্রবাসী আবুল মনছুরের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম তুষার। গত বৃহস্পতিবার রাতে কালুরঘাট সেতুতে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত হয় তুষার। শুক্রবার তুষারকে নামাজে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।
তুষারের বাবা আবুল মনছুর বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে ও এক ছেলে। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। তুষার অটোরিকশা চালিয়ে যা আয় করতো তা দিয়েই সংসার চলে। তার এতো স্মৃতি কি করে ভুলি।’
তুষারের বড় বোন রুমা আক্তার বলেন, ‘জানি না কেন এমন হলো। কি থেকে কি হয়ে গেল বুঝতেই পারছি না।’
আজ ঈদের দিন হলেও তুষারদের সেমিপাকা ঘরে শোকের বিলাপে আচ্ছন্ন। ছেলে হারা আবুল মনছুর ও রিজিয়া বেগমের শোকের কোনো শান্তনা নেই। তারপরও প্রতিবেশি, আত্মীয় স্বজনরা অশ্রুসিক্ত এই পরিবারটিকে বোঝাচ্ছিলেন কেউই চিরস্থায়ী নয়।
তুষারে বড় বোন রুমা আক্তার জানান, ছয় দিন আগে চাচাতো বোন খালেদা বেগম হার্ট এ্যাটাকে মারা গেছে। এরমধ্যে দুর্ঘটনায় ভাইকে হারালাম।
তুষারের বাবা আবুল মনছুর দীর্ঘদিন দুবাইয়ে ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালে দেশে ফিরে আসেন। এরপর জমানো ও ঋণের টাকায় একটা সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিনেন। সেটি চালিয়ে সংসারের হাল ধরে তুষার।
আবুল মনছুর বলেন, অসুস্থ হওয়ার কারণে ভালোভাবে হাঁটাচলা করতে পারি না। তুষারের ওপরই নির্ভর ছিলো পরিবার।
পূর্বকোণ/পিআর