মহেশখালী উপজেলার (বড় মহেশখালী ইউনিয়নের) দেবাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ আরিফ (২৬) নামে এক প্রবাসী যুবক মারা গেছেন বলে খবর ছড়িয়ে পড়লেও তিনি বেঁচে আছেন বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে কাজ করতে গিয়ে মোহাম্মদ ওসমান নামে এক রুমমেটের লোহার দণ্ডের আঘাতে মৃত্যু বরণ করেন।
বুধবার (২৮ মে) রাতে তুচ্ছ বিষয়ে সৃষ্ট ঘটনা সহিংসতায় রূপ নিলে রবিবার (১ জুন) রুমমেটের লোহার দণ্ডের আঘাতে গুরুতর আহত হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর সোমবার (২ জুন) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এ খবর এলাকায় পৌঁছালে চারদিকে শোকের ছায়া নেমে আসে।
সোমবার রাতে আরিফের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন আরিফের ভাগিনা ইফতাদুল হাসান তামিম। তবে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) তিনি বেঁচে আছেন বলে জানান তার ভাগিন ইফতাদুল হাসান তামিম।
পরিবারের আর্থিক সংকট দূর করতে মাত্র দুই মাস আগে ভাগ্য ফেরানোর আশায় দুবাইয়ে পাড়ি জমান নিহত প্রবাসী মোহাম্মদ আরিফ। যাবার সময় বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ধারদেনা করে ভিসা, টিকিট ও অন্যান্য খরচ জোগাড় করেন তিনি। প্রবাস জীবনে গিয়ে এক কারখানায় কাজ শুরু করেছিলেন। হামলাকারী রুমমেট একই উপজেলার ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের লম্বাঘোনা এলাকার মোহাম্মদ বাদশার ছেলে। কিছুদিন ধরে সামান্য বিষয় নিয়ে দু’জনের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল বলে জানা যায়। একপর্যায়ে সেই উত্তেজনা রূপ নেয় সহিংসতায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তুচ্ছ কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে অভিযুক্ত রুমমেট পেছন থেকে রড দিয়ে আরিফের মাথায় আঘাত করেন। সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। গুরুতর আহতবস্থায় তাকে বাকি রুমমেটরা দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয় তাকে। দীর্ঘ ৫দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে শেষমেশ তিনি না ফেরার দেশে চলে যান বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসকরা জানান, মাথায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে।
আরিফের ভাগিনা ইফতাদুল হাসান তামিম বলেন, আমার মামা মোহাম্মদ আরিফক ২৭ মে সকালে রুমে ঘুমন্ত অবস্থায় লম্বাঘোনার ওসমান নামে এক ছেলের হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হন। ঘটনার আগে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথাকাটাকাটি হলেও বিষয়টি মিটমাট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরদিন ঘুমন্ত অবস্থায় মামার ওপর ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে হামলাকারী পালিয়ে যায়। এরপর হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনি পাঁচদিন কোমায় ছিলেন। এমন নির্মম হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
উল্লেখ্য, এদিকে আজ রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় আরিফের পারিবারিক সূত্র জানিয়েছেন- ‘আলহামদুলিল্লাহ, আরিফ আবার নিঃশ্বাস নিচ্ছেন। গতকাল ডাক্তাররা আরিফ মারা গেছে বলে জানালেও আজকে আবার নিঃশ্বাস নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন। বর্তমানে আরিফকে আইসিও থেকে হসপিটালের বেডে স্থানান্তর করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে দোয়া কামনা করেছেন।’
পূর্বকোণ/হুবাইব/জেইউ/পারভেজ