কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে অতি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে ঈদগাঁও নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের মনজুর মৌলভীর দোকান পয়েন্ট দিয়ে নদীর পানি ঢুকে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
তন্মধ্যে ৬টি বাড়ি বন্যার পানিতে সম্পূর্ণরুপে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে ৷ বিধ্বস্ত বাড়ির মালিকেরা হলেন বেলাল আহমদ, সাহেদ উল্লাহ, এরশাদ উল্লাহ, একরাম, জাফর আলম এবং জাহানারা বেগম৷
অপর ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলো কোমর সমান পানিতে নিমজ্জিত ছিল। ভোর রাত থেকে আস্তে আস্তে বন্যার পানি নামতে শুরু করে এবং এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত বন্যার পানি সম্পূর্ণরূপে নেমে গেছে। পানির প্রবল স্রোতে জালালাবাদ ফরাজি পাড়া, পোকখালী সড়ক ভেঙে গেলে বর্তমানে ঈদগাঁওর সাথে ফরাজি পাড়া ও পোকখালী সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
রাতে ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর তাজ জনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে রান্না করা খাবার এবং ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেছেন। স্থানীয়দের সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে রাতে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিমল চাকমা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তের মাঝে জরুরি সহায়তার জন্য বিস্তারিত জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত স্থানটি মেরামতের জন্য এলজিআরডির পক্ষ থেকে মাসখানেক আগে বাঁধ কেটে নদীর পাড়ে পাইলিং করে বল্লী পুঁতে দেয়া হয়। মূলত ওই অংশ দিয়েই বন্যার পানি প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। তারা আরও জানান, বর্ষায় বিষয়টি মাথায় না রেখে বাঁধ কেটে ফেলায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এলজিআরডির উপজেলা প্রকৌশলী আল মাঈন শাহরিয়ার বলেন, আজকেই (৩১ মে) আমাদের একটি টিম ক্ষতিগ্রস্ত স্থানটি পরিদর্শনে যাবে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে দ্রুত সড়ক যোগাযোগ পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি এ উপজেলায় দু’সপ্তাহ আগে যোগদান করেছেন তাই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম এবং প্রকল্পের ব্যয় ও মেয়াদকাল সম্পর্কে কোন তথ্য দিতে পারেননি। বিষয়টি তিনি এলজিআরডির জেলা প্রকৌশলীকে অবহিত করেছেন বলে জানান।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফলতির কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি বলে জানান জালালাবাদের ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর তাজ জনি।
কোরবানি ঈদের আগে দ্রুত সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত না হলে ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করবে বলে জানান ইজিবাইক চালক আবদুল হাকিম।
অপরদিকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ঈদগাঁও নদী থেকে আসা বন্যার পানি ঢুকে এবং বৃষ্টির পানির কারণে ঈদগাঁও বাজারের বিভিন্ন অলিগলি হাঁটু পানির নিচে তলিয়ে যায়। প্রায় ৫০ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় বসতবাড়ির লোকজনকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
পূর্বকোণ/তারেক/জেইউ/পারভেজ