বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠনে কাজ করে যাচ্ছে। অতীতের জামায়াত আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুজাহিদ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। অথচ জোট সরকারের আমলে তাদের পরিচালনাধীন মন্ত্রণালয়গুলো দুর্নীতিমুক্ত ছিল বলে ফ্যাসিবাদের সময়ও সেটা ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছেন। জামায়াতে ইসলামী মূলতঃ সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল স্তরে সৎ ও যোগ্য লোকের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
শুক্রবার (৩০ মে) সকাল ৮টায় চট্টগ্রামের বাকলিয়ার সিলভার প্যালেস কমিউনিটি সেন্টারে দক্ষিণ জেলা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত সদস্য (রুকন) শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষাশিবিরে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক জাফর সাদেক, চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। এতে দারসুল কুরআন পেশ করেন জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম-১৩ সংসদীয় আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক মাহমুদুল হাছান চৌধুরী।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার আমীর আনোয়ারুল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শিক্ষাশিবিরে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ, ড. হেলাল উদ্দীন মুহাম্মদ নোমান, জেলা এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ জাকারিয়া, চট্টগ্রাম-১৬ আসনের জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা জহিরুল ইসলাম, এডভোকেট আবু নাছের, সাংগঠনিক সেক্রেটারি মাওলানা নুরুল হোসাইন, অধ্যাপক মাহমুদুল হাছান চৌধুরী, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা কামাল উদ্দীন, নুরুল হক, ইঞ্জিনিয়ার শহীদুল মোস্তফা, আরিফুর রশীদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথি ডা. তাহের আরও বলেন, ১৯৭১ সালে যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, স্বাধীনতা পরবর্তী শেখ মুজিব বাকশাল কায়েম করে পুনরায় ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছে। এভাবে জাতির উপর একের পর দেশ বিরোধী শাসক দেশকে অতল গহবরে নিয়ে যায়। সর্বশেষ ফ্যাসিস্ট নেত্রীর সাথে দেশের সম্পদ লুট করে ৩০০ আসনের এমপিরাও পলাতক রয়েছে। এমনকি উপজেলা ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানগণও পলায়ন করেছেন। ইতিহাসে এরকম ঘটনা সম্ভবত কোথাও ঘটেনি। এখন জনগণ জামায়াতের দিকে আস্থা বিশ্বাস নিয়ে তাকিয়ে আছে। সেই বিশ্বাসের জায়গা থেকে আমাদের জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে। আশা করি দেশ নৈতিকভাবে পরিচালিত হলে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ উজ্জ্বল হয়ে উদ্ভাসিত হবে, ইনশাআল্লাহ।
শিক্ষাশিবিরে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, সদস্যদের শপথের আলোকে জীবন গঠন করতে হবে। জনগণ দায়িত্বশীলদের যে পথে চলাটা কাম্য করে না, কোন অবস্থায় জামায়াতের রুকনদেরও সে পথে চলা যাবে না। সাহাবায়ে কেরামদের মতো নিজেদের কুরআন সুন্নাহর আলোকে পরিচালিত করতে হবে। শপথের দাবি হিসেবে ব্যক্তির জীবনে ৩টি জিনিসকে গুরুত্ব দিতে হবে। এক, নিজেদের মান অনুযায়ী ইলম অর্জন বা পড়াশোনা করতে হবে। দুই, উচ্চমানের ইবাদাত বন্দেগীর মাধ্যমে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির চেষ্টা করা। তিন, শপথের দাবি অনুযায়ী ব্যক্তির ব্যক্তিত্বকে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক জাফর সাদেক বলেন, সাহাবায়ে কেরামগণ নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে হিজরত করেছেন। তাদের ত্যাগ কুরবানি নজিরবহীন। তাদের ত্যাগের নজরানার জন্য আল্লাহ যেমনি সন্তুষ্ট, তেমনি মক্কা মদিনাবাসীদের কাছেও তারা প্রাণাধিক প্রিয় ব্যক্তিত্ব হয়েছিল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম বলেন, আদর্শকে ধারণ করতে নিজের নফসকে তাযকিয়া বা পরিশুদ্ধ করা শপথের মূল দাবি।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা আমির বলেন, সদস্যগণ সংগঠনের সর্বোচ্চ শপথ নিয়ে নিজের জীবনকে রবের নিকট সমর্পন করেন। অতএব, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমরা জীবনকে গঠন করতে চেষ্টা করার আহবান জানাচ্ছি।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ