রাজধানীর বনানীতে গ্যাস লাইটার বিস্ফোরণে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কনিষ্ঠ নাতি বাবুল কাজী (৫৯) দগ্ধ হয়েছেন। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ভোর পৌনে ৭টায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান। তিনি জানান, বাবুল কাজী শনিবার ভোর পাঁচটার দিকে বনানীর বাসায় বাথরুমে গ্যাস লাইটার বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন বলে জেনেছেন তারা।
ডা. শাওন বিন রহমান বলেন, দগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সকালে বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে। তার শরীরের ৭৪ শতাংশ পুড়ে গেছে, শ্বাসনালীও পুড়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এজন্য তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে বাবুল কাজীর বোন খিলখিল কাজীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। সারোয়ারি নামের এক স্বজন সেই কল রিসিভ করে বলেন, খিলখিল কাজী ব্যস্ত আছেন। এই মুহূর্তে কথা বলতে পারবেন না। তার ভাই হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি।
১৮৯৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম নেওয়া কাজী নজরুল ইসলাম ২৫ বছর বয়সে কলকাতায় প্রমীলা দেবীকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে চার ছেলে সন্তানের জন্ম হয়, যাদের মধ্যে প্রথম সন্তান কৃষ্ণ মোহাম্মদ মারা যায় খুব ছোট বয়সে।
দ্বিতীয় সন্তান অরিন্দম খালেদ বুলবুলের মৃত্যু হয় মাত্র চার বছর বয়সে। অপর দুই সন্তানের মধ্যে কাজী সব্যসাচী ও কাজী অনিরুদ্ধ কেউই দীর্ঘায়ু পাননি। আবৃত্তিকার কাজী সব্যসাচী ও উমা কাজীর ছেলে তিন সন্তানের মধ্যে সবার ছোট বাবুল কাজী।
বাবুল কাজীর বড় দুই বোন খিলখিল কাজী ও মিষ্টি কাজী; তারা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। জাতীয় কবির আরেক ছেলে কাজী অনিরুদ্ধের পরিবারের বসবাস কলকাতায়। তার স্ত্রী কল্যাণী কাজী লেখক ও সংগীতশিল্পী ।
তাদের তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে কাজী অনির্বাণ সুইজারল্যান্ডে ঘুরতে গিয়ে গত ২ অক্টোবর মারা যান। অনির্বাণের ভাই কাজী অরিন্দম (সুবর্ণ) থাকেন কলকাতায়, আর তাদের বোন অনিন্দিতা কাজী নিউজার্সি প্রবাসী। তাদের বাবা অনিরুদ্ধ ১৯৭৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কাজী নজরুল জীবিত থাকতেই মারা যান।
পূর্বকোণ/মাহমুদ