চট্টগ্রাম শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

সর্বশেষ:

বর্ষার আগেই প্রকল্পের ৮৪% কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা

ইমরান বিন ছবুর

২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ

পুরোদমে চলছে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ। এ বছর বর্ষার আগেই প্রকল্পের কমপক্ষে ৮৪ শতাংশ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে পদে পদে রয়েছে বিভিন্ন বাধা।

 

আইনি জটিলতা এবং খাল দখলের কারণে অনেক খালে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের। দ্রুতসময়ের মধ্যে এ জটিলতা কাটিয়ে উঠতে না পারলে প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতার শঙ্কা করছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর ১৯ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ডের ইসহাক সওদাগর পুলের দু’পাশে কাজ করছে পাঁচ থেকে ৬টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চাক্তাই খালের এ অংশে জলাবদ্ধতার কাজে প্রথমে উচ্ছেদ করতে হয়েছে বহুতল ভবন। সেখানে বর্তমানে রিটেইনিং ওয়ালের কাজ চলছে। একইভাবে চাক্তাই খালের বাকলিয়া এক্সেস রোড (জানে আলম দোভাষ সড়ক) অংশে কাজ করছে শেখ আনাস এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেখানে এ প্রতিষ্ঠান রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের কাজ করছে।

 

এদিকে, চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে আগামী বর্ষার আগে করণীয় হিসেবে পাহাড় কাটা বন্ধসহ ১১ দফা কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করে দিয়েছে অন্তবর্তী সরকারের গঠিত উচ্চপর্যায়ের মনিটরিং টিম। গত ১৯ জানুয়ারি নগরীর সার্কিট হাউসে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোকে আগামী মে পর্যন্ত চার মাস সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে সভায়।

 

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফেরদৌস আহমেদ বলেন, বর্তমানে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেয়ার মোক্ষম সময়। বর্ষার আগেই প্রকল্পের কাজ কমপক্ষে ৮৪ শতাংশ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা কাজ করছি। বর্তমানে বিভিন্ন খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। আগামী মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত কাজ চালিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে মে মাসের মধ্যে খালের কাজ বন্ধ করা হবে।

 

তিনি আরও বলেন, আইনি জটিলতার কারণে প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও আমরা অনেক খালে কাজ করতে পারছি না। তবে যেসব খালে কোন আইনি জটিলতা নেই সেখানে আমাদের রিটেইনিং ওয়াল, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ড্রেন সম্প্রসারণ, নতুন ড্রেন নির্মাণ, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।

 

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৯ আগস্ট ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিডিএ’র ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় শেষ হয় ২০২০ সালের জুন মাসে। সর্বশেষ অনুমোদন পাওয়া নতুন আরডিপিপি অনুযায়ী জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের ব্যয় ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা এবং সময় ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।

 

প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষর করে সিডিএ। এরপর ২৮ এপ্রিল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। বর্তমানে প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৭৭ শতাংশের বেশি এবং ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার মতো।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট