ব্যাপক চাহিদা থাকার পরও শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে ওমানের জাতীয় বিমান সংস্থা ‘ওমান এয়ার’। গতকাল (শুক্রবার) চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানটির শেষ ফ্লাইট ছেড়ে যায়। শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টায় ২৪০ জন যাত্রী নিয়ে উড্ডয়ন করে ওমান এয়ারের শেষ ফ্লাইটি। যার কারণে আজকের পর চট্টগ্রাম থেকে যাত্রী পরিবহন বন্ধ থাকবে এয়ারলাইন্সটির।
এর আগে চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাইট গুটিয়ে নেয় কুয়েতভিত্তিক এয়ারলাইন্স জাজিরা এয়ারওয়েজ। এ নিয়ে মাত্র দু’মাসের ব্যবধানে চট্টগ্রাম থেকে দুটি আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নিল।
এদিকে, বিমানটির সংশ্লিষ্টরা ‘নেটওয়ার্ক রি-রাউটিং’র কারণে চট্টগ্রামের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধের দাবি করলেও চট্টগ্রামে ওমান এয়ারের ফ্লাইট বন্ধ হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের রুটে বিমান ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শুধু তাই নয়- চট্টগ্রাম থেকে মধ্যপ্রাচ্য রুটের ফ্লাইট কমে আসায় এ রুটের যাত্রীদেরও চরম দুর্ভোগে পড়ার শঙ্কা করছেন যাত্রী ও বিমানের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা। যদিও বিমান সংশ্লিষ্টদের আশাবাদ- পুনরায় চট্টগ্রাম রুটে কার্যক্রম চালু করবে ওমান এয়ার।
খবর নিয়ে জানা গেছে, গতকাল (শুক্রবার) রাত সাড়ে নয়টার দিকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মাস্কটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ওমানের ‘ডব্লিওওয়াই৩১৪’ ফ্লাইটটি। ২৭১ আসন ধারণ ক্ষমতা বিশিষ্ট বিমানটিতে যাত্রী ছিল ২৪০ জন।
আশানুরূপ যাত্রী থাকার পরও কার্যক্রম বন্ধের বিষয়ে ওমান এয়ার চট্টগ্রাম স্টেশন প্রধান মো. আসিফ চৌধুরী বলেন, শুধুমাত্র ‘নেটওয়ার্ক রি-রাউটিং’র কারণে সাময়িক বন্ধ। তবে ঢাকা থেকে যথারীতি ফ্লাইট পরিচালিত হবে। যাত্রীদের কাছে ওমান এয়ারের প্রচুর জনপ্রিয়তা রয়েছে। শেষ ফ্লাইটেও প্রায় ৯০ শতাংশ যাত্রী ছিল। আমরা আশা করছি শীঘ্রই ফিরে আসবে ওমান এয়ার।’
জানা যায়, ২০০৭ সালে চট্টগ্রাম-মাস্কট রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালুর কার্যক্রম শুরু করে ওমান এয়ার। যার ফলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে অবস্থানরত চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রবাসীদের যাতায়াত সুবিধাও অনেকটা বৃদ্ধি পায়। শুরুর দিকে সপ্তাহে পাঁচদিন ফ্লাইট পরিচালনা করলেও পরবর্তীতে প্রতিদিনই ফ্লাইট চালু করে এয়ারলাইন্সটি। যদিও চালু হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার এ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করেছিল ওমান এয়ার। সর্বশেষ মহামারী কোভিডের সময় কিছুদিন ফ্লাইট বন্ধ ছিল। তবে এবারের বন্ধের ঘোষণা অনেকটাই ‘রহস্যময়’ বলে ধারণা সেবা প্রদানকারী এজেন্সিগুলোর।
জেড. আই. ট্রাভেল্স এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রামের সিংহভাগ প্রবাসীর অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে। যারা চট্টগ্রাম থেকেই স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারতেন। কিন্তু একে একে আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সগুলো ফ্লাইট বন্ধ হতে থাকলে প্রবাসীরা আর্থিকভাবে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তেমনি চরম দুর্ভোগেও পড়তে হবে।’
পূর্বকোণ/এসি