চট্টগ্রাম রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

সপ্তাহের সর্বোচ্চ গরমের দিনে ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং

নিজস্ব প্রতিবেদক

৯ মে, ২০২৩ | ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ

একদিকে জ্বালানি সমস্যায় কমে গেছে উৎপাদন, অন্যদিকে গরমের কারণে বেড়ে গেছে চাহিদা। উৎপাদন এবং চাহিদার মধ্যে বড় ধরনের ব্যবধান তৈরি হওয়ায় ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং দেখা দিয়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায়। সপ্তাহের সর্বোচ্চ গরমের দিনে ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিংয়ের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিশু-বৃদ্ধসহ নানা বয়সী মানুষ। বিদ্যুৎ না পাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে কারখানার উৎপাদন কার্যক্রমও।

বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- গতকাল (সোমবার) দিনে (অফ পিক আওয়ারে) দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৫ হাজার মেগাওয়াট। তবে জ্বালানির সঙ্কট, গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে চাহিদার চেয়ে প্রায় ৩ হাজার মেগাওয়াট কম। এই সময়ে চট্টগ্রামে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটের কাছাকাছি। তবে চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ মিলছে ২৫০-৩০০ মেগাওয়াট কম ।

চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় রবিবার দিনগত রাত থেকে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং শুরু হয়। সোমবার দিনভরও চলে এই লোডশেডিং। বৃষ্টি না হলে এই পরিস্থিতি দীর্ঘ সময় চলতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা। তীব্র গরমের মধ্যে লোডশেডিং অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে সবখানে। দেশ যখন শতভাগ বিদ্যুতায়নের পথে- তখন এরকম লোডশেডিংয়ে ক্ষুব্ধ সবাই। টেক্সটাইল এলাকায় থাকেন ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন। হঠাৎ করে ঘণ্টায় ঘণ্টায় দেখা দেওয়া লোডশেডিংয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তিনি। জসিম পূর্বকোণকে জানান, শিল্প এলাকা হওয়ায় এখানে তেমন বিদ্যুৎ যায় না। তবে গত কয়েকদিনে পাল্টে গেছে এই দৃশ্য। ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে ভয়াবহ এই লোডশেডিং বৃদ্ধা মা আর দুই শিশুকে বিপাকে ফেলেছে বেশি।

শুধু খুলশী বিতরণ বিভাগের অধীন টেক্সটাইল এলাকা নয়- গতকাল (সোমবার) ঘণ্টায় ঘণ্টায় দেখা দেওয়া লোডশেডিংয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরীর পাথরঘাটা, স্টেডিয়াম, ষোলশহর, কালুরঘাট, বাকলিয়া, মাদারবাড়ী, আগ্রাবাদ, হালিশহর, পাহাড়তলী, খুলশী, রামপুর, নিউমুরিংসহ পিডিবির সব বিতরণ বিভাগের গ্রাহকরাও। ব্যাহত হচ্ছে শিল্প কারখানার উৎপাদনও।
বিদ্যুৎ ব্যবহারে কৃচ্ছতা সাধন বর্তমান লোডশেডিং পরিস্থিতি থেকে কিছুটা মুক্তি দিতে পারে বলে মনে করছেন চট্টগ্রামের বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা। পিডিবির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, এই মুহূর্তে চট্টগ্রামে চাহিদার চেয়ে ২৫০-৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম পাচ্ছি আমরা। বিদ্যুৎ ব্যবহারে কৃচ্ছতা সাধন এই ঘাটতি কমিয়ে আনতে পারে। বৃষ্টি হলেও বিদ্যুৎ চাহিদা কমে আসবে। লোডশেডিং কমবে।

সোমবার সপ্তাহের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা :
গত সাত দিনের মধ্যে চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল গতকাল (সোমবার)। পতেঙ্গা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ মেঘনাথ তঞ্চঙ্গ্যা পূর্বকোণকে বলেন, সোমবার চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

পূর্বকোণ/এ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট