আজ নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হবে চট্টগ্রাম বন্দরে। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বন্দরের জেটিতে ভিড়বে ২শ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ। আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি-১ নম্বর জেটিতে ২শ মিটার লম্বা ‘কমন এটলাস’ নামের কার্গো জাহাজটিকে বার্থিং দেওয়া হবে। আনুষ্ঠানিকতায় উপস্থিত থাকবেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীসহ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বন্দর চেয়ারম্যান ও বন্দরের সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং শিপিং বাণিজ্যে সংশ্লিষ্টরা।
মার্সাল আইল্যান্ড পতাকাবাহী ২শ মিটার লম্বা ‘কমন এটলাস’ নামের কার্গো জাহাজটি মেঘনা গ্রুপের চিনি নিয়ে ব্রাজিলের সান্টোস বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। গত ১০ জানুয়ারি জাহাজটি সাড়ে ৬০ হাজার টন র সুগার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৌঁছে। জাহাজটি আজ সোমবার চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি-১ জেটিতে বার্থিং করার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে বর্তমানে সাড়ে নয় মিটার গভীরতার (পানির নিচে থাকা জাহাজের অংশ) এবং ১৯০ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়তে পারে। এরকম জাহাজগুলো সাধারণত ২৫শ থেকে ২৬শ টিইউউএস কনটেইনার বহন করতে পারে।
তবে এবার দশ মিটার গভীরতার ও ২শ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়লে বন্দরে ৩৮শ থেকে ৪ হাজার কনটেইনার পরিবহন করতে পারবে। এতে সুফল পাবে ব্যবসায়ীরা। কারণ বেশি পরিমাণ কনটেইনার নিয়ে জাহাজ ভিড়তে খরচ কমে যায়। ফলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়ার পাশাপাশি পণ্য পরিবহন খাতে সাশ্রয় হবে কোটি কোটি ডলার।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক পূর্বকোণকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়লে বর্তমানের চেয়ে বেশি পরিমানে কার্গো পরিবহন করা যাবে। এতে বন্দরে টার্ন এরাউন্ড টাইম কমে আসবে। কারণ একটি কম পরিমাণ কনটেইনার বহনকারী জাহাজকে বার্থিং দিলে সেই জাহাজ জেটিতে ভিড়ানো, পণ্য উঠা-নামা করানো, এরপর আবার জোয়ারের ওপর নির্ভর করে জাহাজ ছেড়ে যাওয়া ইত্যাদির কারণে সময় লেগে যায়। ফলে বড় জাহাজ ভিড়লে একসাথে অনেক কনটেইনার আসবে, এতে খরচও কম হবে, প্রডাক্টিভিটিও বাড়বে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে ২০২০ সালে কর্ণফুলী নদী এবং বন্দর চ্যানেলে নিয়ে হাইড্রোগ্রাফিক ও হাইড্রোলজিক্যাল স্টাডি চালায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। সমীক্ষা পরিচালনায় দায়িত্ব দেওয়া হয় যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এইচআর ওয়েলিংফোর্ড নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে।
তারই ধারাবাহিকতায় বন্দরের হাইড্রোগ্রাফিক বিভাগ বন্দর চ্যানেল পর্যবেক্ষণ করে ২০০ মিটার গভীরতার জাহাজ ভেড়ানোর পরিকল্পনা করে। বন্দরের হারবার ও মেরিন বিভাগের তত্বাবধানে সোমবার প্রথম ২০০ মিটার জাহাজটি জেটিতে ভেড়ানো হবে।
পূর্বকোণ/আরএ