চট্টগ্রাম বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

এক কালভার্টেই নাকাল
এক কালভার্টেই নাকাল

প্রবর্তক মোড়ের ৫ মাসের সেই কাজ শেষ হয়নি ৮ মাসেও

এক কালভার্টেই নাকাল

ইমরান বিন ছবুর

৫ মার্চ, ২০২০ | ৩:৫৩ পূর্বাহ্ণ

নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা প্রবর্তক মোড়। এ এলাকা থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) ও চকবাজার যাতায়াতের প্রধান সড়কটি বন্ধ গত আট মাস ধরে। ফলে চমেক হাসপাতালসহ, বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাতায়াতকারী রোগী ও স্বজনদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। জলাবদ্ধতা প্রকল্পের অংশ হিসেবে গত ২০১৯ সালের জুলাই মাসে নির্মাণ কাজ শুরু হয় কালভার্টটির। প্রকল্পের মেয়াদ পাঁচ মাস হলেও আট মাসেও শেষ হয়নি এ কাজ। এলাকাবাসীর অভিযোগ ধীরগতির কাজের দরুন আট মাসেও নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি।
চমেক হাসপাতালে রোগী দেখতে আসা মো. কামাল জানান, পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হলেও এখনো এই কালভার্টটি দৃশ্যমান হচ্ছে না। কালভার্টটির ফলে দীর্ঘদিন ধরে এই পথে যাতায়াতকারী অসংখ্য রোগী ও স্বজনরা ভোগান্তিতে পড়ছে। আশা করছি কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নজর দিবে। এপিক হেলথ কেয়ারের চাকরিজীবী সাইফুল এ সাইফ জানান, গত বছর কালভার্টটির নির্মাণ কাজ শুরু হলে প্রবর্তক থেকে চকবাজারমুখী সড়কটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কাজের ধীরগতির ফলে নির্মাণ কাজ শেষ না। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের যোগাযোগের অন্যতম প্রধান সড়ক এটি। এই সড়কটি বন্ধ থাকায় দীর্ঘদিন ধরে রোগী ও স্বজনদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শুধুমাত্র রোগীদের কথা চিন্তা করে হলেও কালভার্টটির কাজ দ্রুত শেষ করে সড়কটি উন্মুক্ত করে দেয়া হোক।
তিনি আরো বলেন, কালভার্টে কাজ চলাকালীন সময়ে পথচারীদের যাতায়াতের জন্য একটি ছোট বিকল্প পথ তৈরি করে দিয়েছে। এই হাঁটার পথটি এতোই ছোট যে একসাথে দু’জন হাঁটা যায় না। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের এসব ব্যাপারে নজর দেয়া উচিত।
সরেজমিন দেখা যায়, চকবাজার থেকে ২নং গেটগামী টেম্পুসহ অধিকাংশ যানবাহন পাঁচলাইশ আবাসিকের মধ্য দিয়ে প্রবর্তক মোড় যাচ্ছে। ছোট এ সড়কটি একইসাথে অনেক পরিবহন ও লোকজন ব্যবহার করছে। ফলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল গেটের বাইরে দিনের বেশির ভাগ সময় যানজট লেগে থাকে। এছাড়াও প্রবর্তক মোড় হয়ে ছোট যানবাহনগুলো মেডিকেল কলেজের পশ্চিম গেট দিয়ে ভেতরের সড়কটি ব্যবহার করছে। যার ফলে হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে দিনের বেলায় ছোট যানবাহনের চাপ সৃষ্টি হয়। এসব যানবাহনের ফলে মেডিকেলে আসা রোগী ও স্বজনদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দাবি, নানা জটিলতা ও প্রতিবন্ধকতায় কাজ শেষ করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। এছাড়া, রমজানের আগেই অর্থাৎ এপ্রিলে কালভার্টটির নির্মাণ কাজ শেষ করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্রিগেড প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, কালভার্টটি নির্মাণ করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এই কালভার্টটির নিচে ওয়াসা, বিটিসিএল ও গ্যাসের সংযোগ ছিল। সবগুলো সংযোগ দ্রুত সরানো গেলেও জাইকার একটি পাইপ নিয়ে আমরা বেশ সমস্যায় পড়েছিলাম। জাইকার পাইপটি না থাকলে কালভার্টটির অন্তত আরো দুই মাস আগে কাজ শেষ হতো। এ পাইপটির জন্য আমাদের ড্রইং-ডিজাইন পরিবর্তন করতে হয়েছে। অনেকদিন কাজও বন্ধ রাখতে হয়েছে।
কাজ করতে গিয়ে এলাকাবাসীর বাধার কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, রাতে কাজ করতে গিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় কাজ বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করেন। ঘুমের সমস্যা ও লেখাপড়ার সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমাদের চিঠিও দিয়েছে।
২০১৯ সালের জুলাই মাসে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়া এই কালভার্টটি আগামী এপ্রিলে কাজ শেষ হবে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট