কর্ণফুলী উপজেলায় এক বেসরকারি হাসপাতালের বিল দিতে ভূমিষ্ট হওয়া এক নবজাতককে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের জামালপাড়া এলাকার সাউথ চট্টগ্রাম হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক লিমিটেডে এ ঘটনাটি ঘটে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি অভাবের তাড়নায় ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতকের স্বজনরাই এক ব্যক্তির কাছে স্বেচ্ছায় দত্তক দিয়েছেন। হাসপাতালে নবজাতক বিক্রির ঘটনায় আলোচনার ঝড় উঠেছে কর্ণফুলীজুড়ে।
গত শনিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার (১৪ জুন) সকাল আটটার দিকে পাশ্ববর্তী উপজেলার বিজয় দাশের স্ত্রী জয়া দাশ তার মা-বাবার সঙ্গে প্রসব বেদনা নিয়ে কর্ণফুলীর সাউথ চট্টগ্রাম হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিকে ভর্তি হন। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে হাসপাতালে পুত্র সন্তান ভূমিষ্ট হয় তার।
নবজাতকের নানা পরিমল দাশ বলেন, মেয়ের সঙ্গে স্বামীর ছাড়াছাড়ি হয়েছে, তাদের সংসারে একটা বাচ্চা আছে। মেয়ে চাকরি করত; এখন চাকরিও নেই। অভাবের কারণে নবজাতক পুত্র শিশুকে অন্যের কাছে দত্তক দিতে হয়েছে। বিনিময়ে হাসপাতালের বিল আর অল্প কিছু টাকা দিয়েছে। শিশুটাকে ওই হাসপাতালের একজন নার্স নিয়েছেন, তার নিঃসন্তান আত্মীয়ের জন্য। নার্সের সহায়তায় কাজটি করেছি আমরা।
জয়া দাশের স্বজনরা জানান, সন্তান প্রসবের পরই টাকা না থাকার কথাটি হাসপাতালের নার্সকে জানানোর পর তিনি নবজাতকে বিক্রির প্রস্তাব দেন। পরে নার্সের সহায়তায় তার নিঃসন্তার এক আত্মীয়ের কথা বলে হাসপাতালের ১২ হাজার টাকা বিল পরিশোধ এবং তাদের ৫ হাজার টাকা দিয়ে বাচ্চাটি নিয়ে নেন নার্স। এসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম বিষয়টি অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরতরা এসে একটি লিখিত নিয়ে বাচ্চাটিকে এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে দত্তক দিয়েছেন। দুই পরিবারের সমঝোতায় এটি হয়েছে।
কর্ণফুলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জেবুনেচ্ছা বলেন, ‘ঘটনাটি জানতে পেরে হাসপাতালটিতে আমাদের একটি টিমকে পাঠিয়েছি। দুইপক্ষের সমঝোতায় কাজটি হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। তিনি এটি আইনি প্রক্রিয়ায় হওয়া উচিত ছিলো বলে মন্তব্য করেন।
পূর্বকোণ/ইবনুর