চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘বন্দুকযুদ্ধে’ ইয়াবা ডন সাইফুলসহ দু’জন নিহত

৯ টি এলজি, দুইলাখ ১০ হাজার ইয়াবা ও বিপুল পরিমাণ কার্তুজ উদ্ধার

নিজস্ব সংবাদদাতা , কক্সবাজার

১ জুন, ২০১৯ | ২:৫৬ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশ ও বিজিবি’র সাথে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই ইয়াবা কারবারি নিহত হয়েছে। এরমধ্যে একজনের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। অপরজন হল বহুল আলোচিত ও দেশের ১ নম্বার ইয়াবা কারবারি টেকনাফের হাজি সাইফুল করিম। পৃথক ঘটনাস্থল থেকে দুই লাখ ১০ হাজার ইয়াবা, ৯ টি এলজি ও বিপুল পরিমাণ কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
গতকাল (শুক্রবার) ভোররাত ৩টার দিকে টেকনাফ নাফ নদীর স্থলবন্দর সংলগ্ন এলাকায় এই ‘বন্দুকযুদ্ধ’র ঘটনা ঘটে। নিহত সাইফুল করিম টেকনাফের শীলবনিয়া এলাকার ডা. হানিফের ছেলে। দেশের ইয়াবার কারবারিদের তালিকায় তিনি এক নম্বরে ছিলেন। টেকনাফ পুলিশ জানায়, স্থলবন্দরের দক্ষিণ পাশে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার বড় চালান আসছে, এমন খবর পেয়ে অভিযানে যায় পুলিশের একটি দল। পুলিশের অবস্থান টের পেয়ে ইয়াবা কারবারিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পরে ঘটনাস্থলে সাইফুলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। সেখান থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। ঘটনা স্থল থেকে এক লাখ ইয়াবা ও বিপুল পরিমাণ কার্তুজ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, নিহত সাইফুলের বিরুদ্ধে প্রায় দুই ডজনেরও বেশি মাদক মামলা রয়েছে। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে প্রথম ইয়াবার বড় চালান আসে তার হাত ধরেই।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, কাগজেকলমে সাইফুল করিম টেকনাফ স্থলবন্দরের একজন সিএন্ডএফ (আমদানি-রপ্তানিকারক) ব্যবসায়ী। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে কাঠ আমদানি করে সে। তবে কাঠ আনার আড়ালে ইয়াবার চালান নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয়ে করা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সর্বশেষ তালিকায় ‘এক নম্বর ইয়াবা ব্যবসায়ী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে টেকনাফের শীলবনিয়া পাড়ার এই হাজি সাইফুল করিমকে। প্রত্যেক গোয়েন্দা রিপোর্টের শীর্ষে সাইফুল করিম এবং তার পরিবারের সদস্যদের নাম রয়েছে। গত মাসেও দুদকের পক্ষ থেকে তার নামে মামলা দায়ের করা হয়। তারা ৮ ভাইয়ের মধ্যে একজন দেশের বাইরে থাকেন, বাকি ৭ জনের বিরুদ্ধেও ইয়াবা ব্যবসায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
সর্বশেষ টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাসের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ৩ মে সাইফুলের ছোট ভাই মাহবুব ও রাশেদকে টেকনাফ নিজ বাড়ি থেকে ১০ হাজার ইয়াবা ও ৪টি অস্ত্রসহ আটক করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে টেকনাফ ২ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল ফয়সল হাসান খান জানান, ইয়াবার একটি বড় চালান মিয়ানমার হতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে এমন সংবাদে বৃহস্পতিবার রাতে টেকনাফ বিওপি’র একটি বিশেষ টহলদল ওই এলাকায় অবস্থান নেয়। টহলদল দূর থেকে কয়েকজন লোককে হস্তচালিত নৌকা নিয়ে নাফ নদী পার হয়ে নৌকাটি আসতে দেখে। বিজিবি টহলদলের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক চোরাকারবারিরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে বিজিবি পাল্টা গুলি চালায়। উভয় পক্ষের মধ্যে ৮-১০মিনিট গুলি বিনিময় হয়। একপর্যায়ে চোরাকারবারিরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল তল্লাশি করে অজ্ঞাত একব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কাদার মধ্যে পরে থাকতে দেখে। পরে নৌকাটি তল্লাশি করে এক লাখ ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও ১টি লোহার ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট