চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘অন্তর্বর্তী সরকার ও জনপ্রত্যাশা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন

দুর্নীতিবাজ সকল পুলিশ কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় আনা অত্যাবশ্যক

চবি সংবাদদাতা

৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১১:৪০ অপরাহ্ণ

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের বাকি কর্মকর্তাদের অনতিবিলম্বে বরখাস্ত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা জরুরি। তাদের দুর্নীতি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অনতিবিলম্বে পুলিশ বাহিনীকে পুনর্গঠন করে এ বাহিনীকে জনবান্ধব করার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার। পুলিশের হারানো গৌরব বিশেষ করে তাদের আইডেন্টিটি ক্রাইসিস নিরসনের ব্যবস্থা করা। দুর্নীতিবাজ সকল পুলিশ কর্মকর্তা এবং সিপাহিদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা অত্যাবশ্যক। অনতিবিলম্বে পুলিশ বাহিনীতে সিপাহি ও কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়ে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা সময়ের দাবি।

অন্তর্বর্তী সরকারের একমাস পূর্তি উপলক্ষে ‘অন্তর্বর্তী সরকার ও জনপ্রত্যাশা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সমাজ ও রাষ্ট্র চিন্তা কেন্দ্রের উদ্যোগে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে উপস্থিত ছিলেন সমাজ ও রাষ্ট্রচিন্তা কেন্দ্রের পরিচালক ও রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শহীদুল হক, দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোর্শেদুল হক।

ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী আরও বলেন, কোটা সংস্কারের মতো যৌক্তিক আন্দোলন দমন করার জন্য হাসিনা সরকার সর্বশক্তি প্রয়োগ করে। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ লাভ করে এবং শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যান। পতনের দিনও তার পেটুয়া বাহিনী পুলিশের গুলিতে শতাধিক ছাত্র জনতা শহীদ হন। সহস্রাধিক মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়। পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যগণ পালিয়ে যান। জনতার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে এবং সাড়ে চারশ’ পুলিশ স্টেশন আক্রান্ত হয়। সর্বোপরি এক ধ্বংসস্তূপের উপর ড. ইউনুসের সরকার দায়িত্ব পালন শুরু করে।

আহতদের সুচিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে নৃশংসতার শিকার গুলিবিদ্ধ (চোখে, মুখে পায়ে) মানুষদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। জীবন ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের উন্নততর চিকিৎসার জন্য বিদেশ প্রেরণ করা উচিত। শহীদ, আহত এবং নির্যাতিত ব্যক্তিদের পরিবারদের সর্বাগ্রে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আমলে প্রায় সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন প্রকারের দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের বিরুদ্ধে ইউজিসি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছিল, কিন্তু সঠিকভাবে তদন্ত হয়নি এবং কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত হলেও তদন্ত রিপোর্ট অনুসারে কোন শাস্তি কার্যকর হয়নি। তাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের দুর্নীতি তদন্ত করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশের জন্য ‘উচ্চশিক্ষা দুর্নীতি দমন কমিশন’ গঠন করা হোক।

যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শহীদুল হক বলেন, সাম্প্রদায়িক ইস্যুগুলো বারবার সামনে আসছে। হিন্দুরা অবস্থান কর্মসূচি করবে এবং পুরো ঢাকা অচল করে দিবে। এই বিষয়গুলোর সুন্দর সুরাহা হওয়া জরুরি। আমরা দেখেছি ওসি প্রদীপ একাই আড়াইশ জন মানুষকে হত্যা করেছে। হত্যার শিকার ম্যাক্সিমাম ছিলো শিবির কর্মী। তার মানে প্রদীপ মুসলমান টার্গেট করে মেরেছে। আমরা কিন্তু তখন বলিনি যে সে সাম্প্রদায়িক কাজ করছে। তাই আমার মনে হয় সংখ্যালঘুদের গত সরকারে অবস্থান কি ছিলো এটা নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি হওয়া জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা নতুন বাংলাদেশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

পূর্বকোণ/জুনায়েদ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট