চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কালের কবিতা

শাহিদ হাসান

২৪ জানুয়ারি, ২০২০ | ৮:০৭ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিপ্লবের যুগে মানব সমাজের প্রাত্যহিক জীবনে ব্যাপক পবিবর্তন এসেছে সংগত কারণে। এ পরিবর্তন বিশেষ করে ইংরেজি ভাষায় রচিত কবিতার ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিপ্লবের যুগে আমরা অতি সহজে বিশ্বসাহিত্য সম্পর্কে জানতে পারি। তাদের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত আমাদের মনে নানাভাবে রেখাপাত করে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বদৌলতে আজকের মেজাজ-মর্জি-সূচি-রুচি-চিন্তা নগরের মতো সমান তালে সহজে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঢুকে পড়েছে এবং তরুণের মনে ও করোটির কোষে কোষে সদা বিরাজমান। এক্ষেত্রে গ্রাম ও নগরের দূরত্ব আগের মতো আর নয়। ইন্টারনেটের কল্যাণে দুক্ষেত্রের জনগণের সামনে সবকিছু দিবালোকের মতো স্পষ্ট। আগের মতো মানুষকে অন্ধকারে রাখার কোন সুযোগ নেই।
বর্তমান সময়ের সচেতন কবি “বাঁশ বাগানের মাথা ওপর চাঁদ উঠেছে ঐ” এ ধরনের পঙ্ক্তি কখনো রচনা করবে না । কারণ, আজকের কবির সে অভিজ্ঞতা নেই। জনবসতি বেড়ে যাবার কারণে গ্রাম অঞ্চলে বাঁশ বাগান আগের মতো দৃশ্যমান নয়। আজকের কবি সগৌরবে উচ্চারণ করে, “অ্যাপার্টমেন্টের পাশে হয়তো বা দেখা যাবে ফর্মালিন-চাঁদ।” (শাহিদ হাসান)
আজকের এসময়ে কবিতার বেলায় বাঁশ বাগানের জন্যে শোক করার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। শৈশবে মো. রফির অনেক গান শুনেছি এলাকার চা-খানায় অথবা ছায়াছবি শুরু হবার আগে সিনেমা হলে। রফি’র একটি গান বারবার বাজাতো সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ। গানটি প্রথম কলি, “চাঁদ না বদলে সুরুজ না বদলে বদল গিয়া ইনসান, ইত্না বদল গিয়া ইনসান।” চলচ্চিত্রে গানটি নেতিবাচক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছিল। কথা হচ্ছে, মানুষের চিন্তা-চেতনা যদি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন না হয় সে ক্ষেত্রে সমাজ স্থবির হতে বাধ্য এবং বিনির্মাণের মাধ্যমে নতুন ভাবনার প্রসার ঘটবে না। গানটির কথা আজকের দিনে আমরা ইতিবাচক অর্থে যদি ধরি তা হলে নতুন পথের সন্ধান মিলবে। এক্ষেত্রে নাট্যকার মুনীর চৌধুরীর ভাষা বলতে হয়Ñ “মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়, কারণে-অকারণে বদলায়।” কোন না কোভাবে বদলানো মানুষের চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
বিশে^র কবিতার সাথে বাংলা কবিতাও পরিবর্তন করেছে সময়ের প্রেক্ষাপটে তার স্বরূপ। বাংলা কবিতায় মাইকেল মধুসূদন দত্ত থেকে হাল আমল পর্যন্ত সচেতন কবিরা কবিতার সূচি ও রুচির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়েছে এবং ঘটাচ্ছে। তাদের কবিতা পাঠ করলে তা সহজে অনুমান করা যায়।
বিগত দিনের সমাজব্যবস্থা আজকের কবি-র বাস্তব অভিজ্ঞতার সম্পূর্ণ বাহিরে। তার নিউরোন কোষে প্রতিনিয়ত বহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-শাসিত বর্তমান জীবনব্যবস্থার নানা অনুষঙ্গ। আজকের দৈশিক ও বৈশি^ক বিষয়গুলো এ প্রজন্মের কবিতায় ব্যবহার অনিবার্য উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রযুক্তির সংস্পর্শে থাকার কারণে গুটি কয়েক কবি নতুন শব্দ তাদের কবিতায় লক্ষণীয় যেমন, তোমাকে ‘ডিলিট’ অথবা ‘ফর্মেট’ করে দেবো।
এ ধরনের শব্দকে প্রয়োজনে ব্যবহার ছাড়া পাশ কাটিয়ে যাবার কোন উপায় নেই এ প্রজন্মের সচেতন কবিদের। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-প্রজন্মের কতিপয় কবিদের জানা-শোনা ও পাঠের বিষয় অগ্রজ কবিদের চেয়ে সংগত কারণে অগ্রসর এবং চিন্তাগত দিক থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তারা নিত্যদিন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আবহে বসবাস, জানার চেষ্টা এবং তাদের চিন্তন প্রক্রিয়ায় সমন্বয় সাধন করে চলেছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-প্রজন্মের অধিকাংশ কবি মুক্ত গদ্যে কবিতা রচনা করতে পছন্দ করেন। এ ধরনের কবিতায় কাহিনীর কিছুটা বিস্তার থাকে। অনেকটা প্রতিবেদনধর্মী। গদ্যছন্দ থাকে না। এ গোত্রের কবিরা মনের করে ভাব প্রকাশে ছন্দ বড় বাধা। তাই যদি হয়, মাইকেল মধুসূদন দত্তের মহাকাব্য ও সনেটগুলো ভাব প্রকাশের ক্ষেত্রে ছন্দ বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে তো মনে হয় না। ভাব-প্রকাশে ছন্দ বাধা হলে মাইকেল মধুসূদন দত্তের মতো সচেতন ও প্রজ্ঞাবান কবি তার কাব্যে ছন্দ ব্যবহার করতেন না। মূলকথা হচ্ছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-প্রজন্মের অনেক কবি ছন্দ জানে না। ছন্দ গাণিতিক হিসেবের ওপর নির্ভরশীল এবং অনেক ছন্দশাস্ত্রকার ছন্দকে ‘ছন্দবিজ্ঞান’ বলে থাকে। কবিতা পড়লে সচেতন পাঠক সহজে বুঝতে পারে আজকের তরুণ কবিদের ছন্দজ্ঞান সম্পর্কে । এ সময়ের কবিদের ছন্দহীনতার অন্যতম কারণ হচ্ছে কতিপয় অগ্রজ কবি ছন্দের পরিবর্তে কথনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এ সূত্রটি তাদের ক্ষেত্রে প্রয়োজন যারা ছন্দজ্ঞান সম্পন্ন। তারা সহজে বুঝতে পারে অপ্রয়োজনীয় কথনের কারণে ছন্দের পতন ঘটে। কথনের লাগাম টেনে ধরার জন্য ছন্দের করণ-কৌশল কবিতায় প্রধান ভূমিকা রাখে।
সাম্প্রতিক সময়ের প্রায় কবি ‘লাভ পোয়েম’ এবং ‘রোমান্টিক পোয়েম’-এর পার্থক্য বোঝে না। তারা ‘লাভ পোয়েম’কে ‘রোমান্টিক পোয়েম’ বলে থাকে। এ বিষয়ে নেটে অনেক আলোচনা রয়েছে। ‘লাভ পোয়েম’-এ দর্শন থাকতে পারে, না-ও পারে। রোমান্টিক দর্শন ওপর ভিত্তি করে রোমান্টিক কবিতা রচিত। রোমান্টিকতার অন্যতম অনুষঙ্গ প্রকৃতিকে কেন্দ্র করে অদৃশ্য শক্তি বা পরম পুরুষকে পাবার বাসনা। যেমন, রবীন্দ্রনাথ ‘জীবন-দেবতা’র ভেতর দিয়ে নিজের ও প্রকৃতির স্বরূপ উদ্ঘাটনের চেষ্টা করেছেন আমৃত্যু।
অনেক প্রবীণ ও নবীন কবিরা বলে থাকে পুরনো শব্দ ব্যবহারে প্রয়োজন নেই। শব্দ যে পুরনো হয় হালের কবিদের আড্ডায় বেশ শোনা যায়। তাহলে মা-বাবা, খালা-খালু , পদ্ম, কমল, শরম, বিষয়, বিকাশ, প্রকাশ মেধা, মনন ইত্যাদি পুরনো শব্দ। তাদের মতে, এ ধরনের শব্দ কবিতায় ব্যবহার করা অমার্জনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। তা হলে কোন্ কোন্ শব্দ কবিতায় ব্যবহার করা যাবে সে বিষয় একটা তালিকা প্রণয়ন অথবা চিকিৎসকদের মতো ব্যবস্থাপত্র দেয়া প্রয়োজন। আসলে শব্দ কখনো পুরনো হয় না। কবিতার বিষয়বস্তু ও পঙ্ক্তি সাথে মানিয়ে শব্দ যদি সময়োপযোগী নতুন আবহ বা অর্থ নির্দেশ করে সে ক্ষেত্রে শব্দের গুরুত্ব বাড়েÑ নতুন মাত্রায় আর অন্য রকম ব্যঞ্জনায়। কবিতায় শব্দ ব্যবহার নিয়ে গেল শতাব্দীর চল্লিশ দশকের কবি সৈয়দ আলী আহসানের ‘আধুনিক কবিতা : শব্দের অনুসঙ্গ’ গ্রন্থটি সাম্প্রতিক তরুণ কবিদের পাঠ করা জরুরি।
আজকের তরুণ কবিতাকর্মীরা প্রতিবেদনধর্মী কবিতা রচনায় আগ্রহী। এসব কবিতায় ইংগিত থাকে না। সরাসরি কথা বলা তাদের কবিতার অন্যতম বিন্যাস। কবিতায় একটা চিরায়ত কাঠামো থাকে। কাঠামোর অন্যতম বিষয়গুলো হচ্ছে, ১. সময় চেতনা, ২. প্রার্থিত আড়াল, ৩. বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রয়োজনে ভাষার গাম্ভীর্যবোধ এবং ৪. ছন্দহীনতা থেকে মুক্তি।
ইংরেজি কবিতায় বিজ্ঞানের বিষয়-আশয় অনেক আগে প্রবেশ করেছে। বিজ্ঞানকে অনুষঙ্গ বা কেন্দ্র করে অনেকে কবিতা রচিত হয়েছে ইংরেজি ভাষায়। অতএব কবিতায় বিজ্ঞানের ব্যবহার প্রাচীন। এবার সাম্প্রতিক কালের কবি ও সচেতন পাঠকের জন্য বিজ্ঞানকে অনুষঙ্গ করে কটি ইংরেজি কবিতার উদ্ধৃতি উপস্থাপন করছি। ইংরেজি কাব্যে অন্যতম কবি জন ডান কবিতায় প্রথম বিজ্ঞানের প্রকাশ ঘটানÑ
১. অহফ হবি ঢ়যরষড়ংড়ঢ়যু পধষষ ধষষ রহ ফড়ঁনঃ,/ঞযব ঊষবসবহঃ ড়ভ ভরৎব রং য়ঁরঃব ঢ়ঁঃ ড়ঁঃ;/ঞযব ংঁহ রং ষড়ংঃ, ধহফ ঃয’বধৎঃয ধহফ হড় সধহং রিঃ/ঈধহ বিষষ ফৎরবপঃ যরস যিবৎব ঃড় ষড়ড়শব ভড়ৎ রঃ.
(দি অ্যানাটমি অব দি ওয়াল্ড)
নতুন দর্শন বলে সব কিছু সন্দেহের মূলে,/নেভানো হয়েছে জানি মৌলিক আগুন;/ কিরণ হারিয়ে গেছে এবং পৃথিবী;/ চিন্তন প্রক্রিয়া নেই বলে তাকে খুঁজে পায় না কোথাও।)
কবি শেলি ‘অ্যাডোনিস’ কবিতায় বিজ্ঞান সম্পর্কে উল্লেক করেনÑ
২. খরভব, ষরশব ধ ফড়সব ড়ভ সধহু-পড়ষড়ঁৎবফ মষধংং,/ঝঃধরহং ঃযব যিরঃব ৎধফরধহপব ড়ভ ঊঃবৎহরঃু,/টহঃরষ উবধঃয ঃৎধসঢ়ষবং রঃ ভৎধমসবহঃ.
(অফড়হরংয) (অ্যাডোনিস)
(জীবন, বিবিধবর্ণ কাচের গম্বুজ/অনন্তের শুভ্র আলো করে আলোকিত/যতক্ষণ মৃত্যু তাকে ভগ্নাংশে রূপান্তর নাই বা করে।
বাংলাদেশে গুটি কয়েকের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক কবিতা নিয়ে কথাবার্তা চলছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক কবিতার স্বরূপ ও রূপরেখা সম্পর্কে জানতে হলে সাম্প্রতিক রচিত কটি কবিতার ইংরেজি নমুনা উপস্থাপন করতে পারিÑ
১.ঞযব ঐড়ৎৎরফ ঠড়রপব ড়ভ ঝপরবহপব – ঠধপযবষ খরহফংধু
“ঞযবৎব’ং সধপযরহবৎু রহ ঃযব নঁঃঃবৎভষু;/ঞযবৎব’ং ধ সধরহংঢ়ৎরহম ঃড় ঃযব নবব;/ঞযবৎব’ং যুফৎধঁষরপং ঃড় ধ ফধরংু,/অহফ পড়হঃৎধঢ়ঃরড়হং ঃড় ধ ঃৎবব./“ওভ বি পড়ঁষফ ংবব ঃযব নরৎফরব/ঞযধঃ সধশবং ঃযব পযরৎঢ়রহম ংড়ঁহফ/ডরঃয ী-ৎধু, ংপরবহঃরভরপ বুবং,/ডব পড়ঁষফ ংবব ঃযব যিববষং মড় ৎড়ঁহফ.”/অহফ ও যড়ঢ়ব ধষষ সবহ/ডযড় ঃযরহশ ষরশব ঃযরং/ডরষষ ংড়ড়হ ষরব/টহফবৎমৎড়ঁহফ.

২.ঘবঃিড়হ’ং খধি – ঘধহফরঃধ উধং
ও ধিং রহধঃঃবহঃরাব রহ ঝপরবহপব পষধংং ড়হব ফধু/ডযবহ ঃযব ঃবধপযবৎ ধঃ ৎধহফড়স ষড়ড়শবফ সু ধিু/ও ফরফহ’ঃ ষড়ড়শ ঁঢ়, ও ড়িঁষফহ’ঃ ফধৎব/ঞযবৎব’ং হড় বংপধঢ়রহম ঃযধঃ রহঃবহংব মষধৎব./অংশবফ সব ঃড় বীঢ়ষধরহ ঃড় ঃযব পষধংং/ঘবঃিড়হ’ং খধি ড়ভ এৎধারঃু ধহফ সধংং/গু সরহফ ধিং ধ নষধহশ, যবধৎঃনবধঃং ষড়ঁফবৎ/ঋড়ৎ ধহ ধহংবিৎ ও ংঃধৎঃবফ ঃড় ভষড়ঁহফবৎ./ও ংঃড়ড়ফ নবভড়ৎব ঃযব পষধংং ঃৎবসনষরহম রিঃয ভবধৎ/”এৎধারঃু” ও ংধরফ…ধহফ ঃযবহ ড়য ফবধৎ!!!/ও ভবষষ ড়ভভ ঃযব ংঃধমব ড়হ ঃড় ঃযব ভষড়ড়ৎ/ ঐড়ি ঃযব পষধংং রিঃয ষধঁমযঃবৎ ফরফ ৎড়ধৎ./ঞযব পযরষফৎবহ ঃরঃঃবৎবফ রহ মৎবধঃ ধসঁংবসবহঃ/ঞযবু ফরফহ’ঃ শহড়ি সু ংধফ ঢ়ৎবফরপধসবহঃ/ঞযব ঃবধপযবৎ ংধরফ, “ণড়ঁ’াব ফবসড়হংঃৎধঃবফ মৎধারঃু”/”অষঃযড়ঁময ুড়ঁ ফরফ রঃ রিঃয সঁপয ষবারঃু”./অঃ ষবহমঃয ও ৎবঃঁৎহবফ ঃড় সু ংবধঃ/ডরঃয সধহু ধঢ়ঢ়ষধঁংব ফরফ ঃযবু মৎববঃ/ঘড়ি ও ষড়ড়শ নধপশ ঁঢ়ড়হ ঃযরং ধহফ ঢ়ড়হফবৎ/ও ফবপরফব ঃড় ষরংঃবহ ধহফ হড়ঃ ষবঃ সু সরহফ ধিহফবৎ.

৩.খঙঠঊ’ঝ ঈঐঊগওঈঅখ উঊজওঠঅঞওঠঊঝ – ঘবঃঃব ঙহপষধঁফ
ঈধহ ষড়াব ঃযবহ, নব নধংবফ/ড়হ ধহ রহফবী ড়ভ বষবসবহঃং/ভৎড়স যিরপয ড়হব লড়ুভঁষষু ঃঁসনষবং,/ড়ৎ ফৎরভঃং রহঃড় বয়ঁধঃরড়হং, ধং বি ধিহফবৎ/ঃড়ধিৎফ ধ ৎঁংয ড়ভ ংবৎবহফরঢ়রঃু …/ধ সবঃধঢ়যুংরপধষ সবৎমরহম ড়ভ ধৎফড়ৎ/ৎিরঃযরহম রহ ধ ংযধৎবফ পড়সসঁহরড়হ/ ষরশব ঃঁহবভঁষ যিরংঢ়বৎং রহ নৎবধঃযং ড়ভ যবষরঁস,/ঁহধননৎবারধঃবফ ড়ীুমবহ ৎযধঢ়ংড়ফরবং ভৎড়স ঁহনরফফবহ ষধঁমযঃবৎ,/রহারমড়ৎধঃরহম ঃযব ধিৎসঃয ড়ভ পড়-ড়হিবফ ংঃধৎং/ড়হ যবধাবহ’ং ফবংঃরহবফ ড়ৎধপষব?/খড়াব ঃৎধহংপবহফং পযবসরপধষ ফবৎরাধঃরাবং ড়ভ ভৎধপঃধষং ড়ৎ সবধংঁৎবসবহঃ,/নবঃবিবহ ড়ঁৎ ধঃড়সং, ৎবষধীবফ/রহ ঃযব ংযঁভভষব ড়ভ বসড়ঃরড়হধষ বষবপঃৎড়হং
ধং বি য়ঁরাবৎ বিরমযঃষবংং…/ঃযব যবধৎঃ’ং বসনৎধপব ংঁংঢ়বহফবফ ঃড়মবঃযবৎ/রহ ঃযব ধভভবপঃরড়হধঃব পড়ংসড়ং
ড়ভ ধ ফববঢ় শরংং.
তিনটি কবিতাপাঠ শেষে বোঝা যায়, তাদের কবিতায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির বিষয়-আশয় ও অনুষঙ্গের সাথে দর্শন-ইতিহাস-ঐতিহ্য-পুরান-লোককথার যৌক্তিকপূর্ণ নবায়নে সমন্বয় সাধন কবিতার শরীরের পরতে পরতে করতে পারলে তা অন্যমাত্রা পাবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শাসিত চিন্তন প্রক্রিয়া ও দর্শনের সঙ্গে কবিদের জানা-শোনা আজকের দিনে অবশ্যই জরুরি।
অনেকে মনে করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিষয় ব্যবহারে কবিতার পাঠক কমে যাবে। ইংরেজি কাব্যের আলোকে তা মনে হয় না। সচেতন পাঠকসমাজ জানে, কোন কালে কবিতার পাঠক কখনো খুব বেশি ছিল না। সময়ের প্রয়োজনে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ভাবনা ও দর্শন অবশ্যই কবিতায় ব্যবহার করতে হবে। কবিদের মনে রাখতে হবে আজকের পাঠক অবশ্যই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শাসনে শাসিত। এ সমাজের জীবন-যাপন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বাইরে নয়। এর ফলে কবিতার রস, রঙ, রূপ ও গন্ধ আর আগের মতো থাকবে না। সময়ের কারণে না থাকাটাই স্বাভাবিক ও অনিবার্য। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘১৪০০ সাল’ কবিতায় ভবিষ্যতে কবিতার সামগ্রিক রূপ কেমন হবে তা বলতে পারেছেন না। তবে কবিতা যে পরিবর্তন হবে সেটি তিনি জানেন। তাই কবিতাটির শুরুতে বলছেনÑ
“আজি হতে শতবর্ষ পরে/কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি/কৌতূহলভরেÑ/আজি হতে শতবর্ষ পরে।/আজি নববসন্তের প্রভাতের আনন্দের/লেশমাত্র ভাগÑআজিকার কোনো ফুল, বিহঙ্গের কোনো গান,/আজিকার কোনো রক্তরাগ/অনুরাগে সিক্ত করি পারিব না পাঠাইতে/তোমাদের করে/আজি হতে শতবর্ষ পরে।/তবু তুমি একবার খুলিয়া দক্ষিণদ্বার/বসি বাতায়নে/সুদূর দিগন্তে চাহি কল্পনায় অবগাহি/ভেবে দেখো মনেÑ/একদিন শতবর্ষ আগে/চঞ্চল পুলকরাশি কোন্ স্বর্গ হতে ভাসি/নিখিলের মর্মে আসি লাগেÑ/নবীন ফাল্গুনদিন সকল বন্ধনহীন/উন্মত্ত অধীরÑ/উড়ায়ে চঞ্চল পাখা পুষ্পরেণুগন্ধমাখা/দক্ষিণসমীরÑ/সহসা আসিয়া ত্বরা রাঙায়ে দিয়েছে ধরা/যৌবনের রাগে/তোমাদের শতবর্ষ আগে।/সেদিন উতলা প্রাণে, হৃদয় মগন গানে,/কবি এক জাগেÑ/কত কথা পুষ্পপ্রায় বিকশি তুলিতে চায়/কত অনুরাগে/একদিন শতবর্ষ আগে।/আজি হতে শতবর্ষ পরে/এখন করিছে গান সে কোন্ নূতন কবি/তোমাদের ঘরে?/আজিকার বসন্তের আনন্দ-অভিবাদন/পাঠায়ে দিলাম তাঁর করে।/আমার বসন্তগান তোমার বসন্তদিনে/ধ্বনিত হউক ক্ষণতরে/হৃদয়স্পন্দনে তব ভ্রমরগুঞ্জনে নব/পল্লবমর্মরে/আজি হতে শতবর্ষ পরে।”
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বুঝতে পেরেছেন আজকের চিন্তন প্রক্রিয়ার পাঠকের ওপর তাঁর কবিতা আগের মতো তেমন কোন প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। তবুও তিনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মনস্ক পাঠককে সবিনয়ে অনুরোধ করেছেন আজকের বিষয়-আশয় নয়, শতবর্ষ আগের বিষয়-আশয় স্মরণ করে তাঁর কবিতা পাঠ করতে। যেমনÑ “তবু তুমি একবার খুলিয়া দক্ষিণদ্বার/বসি বাতায়নে/সুদূর দিগন্তে চাহি কল্পনায় অবগাহি/ভেবে দেখো মনেÑ/একদিন শতবর্ষ আগে/চঞ্চল পুলকরাশি কোন্ স্বর্গ হতে ভাসি/নিখিলের মর্মে আসি লাগেÑ/নবীন ফাল্গুনদিন সকল বন্ধনহীন/উন্মত্ত অধীরÑ/উড়ায়ে চঞ্চল পাখা পুষ্পরেণুগন্ধমাখা/দক্ষিণসমীরÑ/সহসা আসিয়া ত্বরা রাঙায়ে দিয়েছে ধরা/যৌবনের রাগে/তোমাদের শতবর্ষ আগে।” তাঁকে স্মরণ করার ব্যাপারটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মনস্ক মন ও মননের ইচ্ছা ও অনিচ্ছার অধীন। সময়ে চিন্তাসূত্রের ব্যাপক পরিবর্তনের কারণে তাঁর কবিতার প্রভাব দিনের পর দিন কমতে থাকবে। পৃথিবীর কাব্যসাহিত্যে এমন ঘটনা বিরল নয়। সময়ের কারণে অনিবার্য সত্যটি মেনে নিতে হবে।
পৃথিবীর প্রথম শিল্পবিপ্লবটি হয়েছিল ১৭৮৪ সালে বাষ্পীয় ইঞ্জিনের মাধ্যমে আর দ্বিতীয়টি ১৮৭০ সালে বিদ্যুৎ আবিষ্কারের মাধ্যমে। শিল্প-বিপ্লবের সময় থেকে শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতির ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। ইংরেজি কবিতাও পরিবর্তনের ধারায় শামিল হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে ১৯৬৯ সালে ইন্টারনেট, সাম্প্রতিক কালে ডিজিটাল আবিষ্কার এবং ব্যবহারের মাধ্যমে মানবসমাজের চিন্তা ও দর্শনের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। এ ধারায় শামিল হতে হলে সংগত কারণে আজকের কবিতার পরিবর্তন আনতে হবে। আগামী সময়ে কবিতা নিয়ে বেঁচে থাকার জন্যে অন্যান্য প্রসঙ্গ ও অনুষঙ্গের সাথে কবিতায় যুক্ত করতে হবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মনস্ক নানা ভাবনা ও দর্শন। যারা এ ধারায় যুক্ত হতে পারবে না, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মানসিকতা সম্পন্ন প্রজন্মের কাছে তাদের কবিতা গ্রহণযোগ্য হবার সম্ভাবনা কম। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হলে পুরনো ঘরানার ভাববাদ, অদৃষ্ট বা আধ্যাত্মিকবাদ এবং দলীয় রাজনীতির বন্দনা পরিত্যাগ করে কবিরা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-মনস্ক অগ্রণী ভূমিকা পালন যাবতীয় চিন্তা কবিতায় অনিবার্যভাবে ব্যবহার করতে হবে, যা সময়ের দাবি। আজকের দিনে কবিতা রচনা করতে হলে এ থেকে পরিত্রাণ পাবার কোন সুযোগ নেই। সুতরাং বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয় এবং তার দর্শনের ভূমিকা-গতি-প্রকৃতি জানার কোন বিকল্প নেই।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট