চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিজ্ঞানে ৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৪ জন শিক্ষক, ২ জন প্রদর্শক

চন্দনাইশ সাতবাড়িয়া অলি আহমদ কলেজে জ্যেষ্ঠতা লংঘনের অভিযোগ

চন্দনাইশ সংবাদদাতা

১৮ অক্টোবর, ২০১৯ | ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ

চন্দনাইশ উপজেলার সাতবাড়িয়া অলি আহমদ বীর বিক্রম কলেজে জ্যেষ্ঠতা লংঘন করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। বিজ্ঞান বিভাগে দুই বর্ষে ৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৪ জন শিক্ষক, ২ জন প্রদর্শক রয়েছে। স্বীকৃতি নাই ২০০৮ সাল থেকে। কলেজে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, ১৯৮৪ সালে এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষে তৎকালীন সরকার সাতবাড়িয়া-বৈলতলী দায়েমিয়া কলেজ প্রতিষ্টা করেন। পরবর্তীতে বিএনপি সরকারের শাসন আমলে কর্ণেল অলি নাম পরিবর্তন করে তার নিজ নামে সাতবাড়িয়া অলি আহমদ বীর বিক্রম কলেজ হিসেবে নামকরণ করেন। শুরু থেকে কলেজে শিক্ষার্থী সংকট ছিল। সে সাথে অধিকাংশ শিক্ষক নিয়মিত কলেজে অনুপস্থিত থাকার কারণে শিক্ষার্থীর সংকট দিন দিন বাড়তে থাকে বলে অভিযোগ অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের।

গত বছর ১ ডিসেম্বর কলেজ অধ্যক্ষ সুজিত ঘোষ পদত্যাগ করার পর জ্যেষ্টতা লংঘন করে সিনিয়র ৩ শিক্ষককে বাদ দিয়ে জীববিদ্যা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক নুরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। গত বছর ৭ ডিসেম্বর কলেজ পরিচালনা পরিষদের এ সিন্ধান্তের বিরুদ্ধে জ্যেষ্টতা লংঘনের অভিযোগ এনে বাংলা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক শিখা রানী দে। গত ১৬ এপ্রিল কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, ৩ জুলাই শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক বরাবরে বিধি মোতাবেক জ্যেষ্টতার ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দায়িত্ব প্রদানের আবেদন জানান। আবেদনের প্রেক্ষিতে বোর্ড কতৃপক্ষ কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ করেন এবং তারা শোকজের জবাবও দিয়েছেন। কিন্তু সভাপতির জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় পুনরায় সভাপতি বরাবরে চিঠি প্রেরণ করেছেন বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক শিখা রানী দে।

এদিকে কলেজে চলতি শিক্ষা বর্ষে মানবিকে ৬৪,ব্যবসা শিক্ষায় ১৮, বিজ্ঞানে ২ জনসহ ৮৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। অন্যদিকে ২য় বর্ষে মানবিকে ৪৫, ব্যবসা শিক্ষায় ১৪,বিজ্ঞানে ২ জনসহ ৬১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এসকল শিক্ষার্থীর জন্য ১৪ জন শিক্ষক ২ জন প্রদর্শক, ২য়, ৩য়, ৪র্থ শ্রেণির ৪ জন কর্মচারীসহ ২০ জনের বেতন ভাতা ৫ লক্ষ ১৩ হাজার ১’শ টাকা। বিজ্ঞান বিভাগে ২টি বর্র্ষে ৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য গণিত, জীববিদ্যা, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিভাগে ৪ জন শিক্ষক, ২ জন প্রদর্শক রয়েছে। এসকল শিক্ষক ও প্রদর্শকদের বেতন ভাতা ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৪’শ টাকা সরকারকে প্রদান করতে হয়। গত ২০০৬ সালে ১৯ অক্টোবর বোর্ড কতৃপক্ষ ৩০ জুন’০৮ পর্যন্ত কলেজের অস্থায়ী স্বীকৃতি নবায়ন করেন। দীর্ঘ ১১ বছর কলেজের স্বীকৃতি নবায়ন করা হয়নি বলে জানা যায়।

এসকল ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত কলেজ অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম বলেছেন, পূর্বের অধ্যক্ষ মহোদয় স্বীকৃতির জন্য আবেদন না করায় তিনি দায়িত্ব পেয়ে ৪ মাস আগে স্বীকৃতি নবায়নের জন্য আবেদন করেছেন। বোর্ড কতৃপক্ষ কলেজ পরিদর্শন করে কিছু শর্ত দিয়েছেন,তা ইতিমধ্যে পুরণ করে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান। তাছাড়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের ব্যাপারে জ্যেষ্টতার বিষয়টি পরিচালনা পরিষদ তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন এবং তিনি তা পালন করছেন। শিক্ষার্থী সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, সারাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষার্থীর সংকট রয়েছে। শিক্ষকদের অনুপস্থিতির বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি কর আইনজীবী আসহাব উদ্দিন বলেছেন, পূর্বের অধ্যক্ষ বিভিন্ন সময়ে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে সহকারি অধ্যাপক নুরুল ইসলামকে প্রয়োজনে দায়িত্ব দিতেন। সে হিসেবে তার পদত্যাগের পর কলেজ পরিচালনা পরিষদ অধ্যাপক নুরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছেন। তাছাড়া পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হলে বিধি মোতাবেক অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়ার কথা বলেছেন আবেদন কারীকে। কলেজ স্বীকৃতির ব্যাপারটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।

পরিচালনা পরিষদের শিক্ষানুরাগী সদস্য আবুল বশর ভূঁইয়া শিক্ষার্থী সংকট ও শিক্ষকদের নিয়মিত অনুপস্থিতির বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, দীর্ঘদিন যাবত কলেজে কিছু শিক্ষক অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি অবগত হয়ে গতবছর পরিচালনা পরিষদের সভায় একটি সিন্ধান্ত নেয়া হয়। কোন শিক্ষক সপ্তাহে একদিনের বেশি অনুপস্থিত থাকলে সিএল,এক সপ্তাহ বা ১৫ দিনের অধিক অনুপস্থিত থাকলে বেতন কর্তন করা হবে। এ সিন্ধান্তের পর অধ্যক্ষ সুজিত ঘোষ শাররিক অসুস্থতা দেখিয়ে পদ ত্যাগ করেন। সে সাথে প্রতিটি এলাকায় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এলাকা ভিত্তিক সভা করে গত সেশনে শিক্ষার্থী ভর্তি বৃদ্ধি করা হয়েছে। সে সাথে কলেজটি ডিগ্রি কলেজে রুপান্তরের জন্য কাজ এগিয়ে চলছে।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট