নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের সহযোগিতায় ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। প্রকল্পের শুরুতে ব্যয় ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ধরা হলেও পরবর্তীতে ব্যয় বেড়ে হয় ৮ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
প্রথম সংশোধিত ডিপিপিতে প্রাক্কলিত বর্ধিত ব্যয় ৩ হাজার ১২ কোটি টাকার মধ্যে ৫০ শতাংশ ১ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা সরকার অনুদান হিসেবে দিবে। আর বাকি ৫০ শতাংশ ১ হাজার ৫০৬ কোটি টাকার মধ্যে অর্ধেক অর্থাৎ ৭৫৩ কোটি টাকা সরকারি ঋণ এবং বাকি ৭৫৩ কোটি টাকা সিডিএ’র নিজস্ব ফান্ড থেকে দিতে বলা হয়। এই দেড় হাজার কোটি টাকা নিজের কাঁধ থেকে নামাতে চায় সিডিএ। তাই জিওবি ঋণ ও নিজস্ব ফান্ডের এই দেড় হাজার কোটি টাকা দেওয়ার মত সিডিএ’র আর্থিক সক্ষমতা নেই জানিয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছেন সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম।
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর একটি চিঠি দিয়েছেন সিডিএ চেয়ারম্যান। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সিডিএ’র আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় সিডিএ’র নিজস্ব অর্থায়ন বা ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। কিন্তু ইতিমধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ অতিক্রান্ত হওয়ায় এবং প্রকল্পের কাজ চলমান রাখার স্বার্থে অর্থ বিভাগের শর্তানুযায়ী ১ম সংশোধনী ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়।
বর্তমানে ১ম সংশোধিত ডিপিপি অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে এবং প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ১ম সংশোধিত ডিপিপিভুক্ত অবশিষ্ট কাজসমূহ সম্পন্ন করা হলে প্রকল্পের সম্পূর্ণ সুফল পাওয়া যাবে ও দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী জলাবদ্ধতার কবল হতে অনেকাংশে মুক্ত হবে মর্মে আশা করা যায়। অন্যথায় প্রকল্পের শতভাগ সুফল পাওয়া যাবে না।
এমতাবস্থায়, প্রকল্প ব্যয়ের ২৫ শতাংশ জিওবি ঋণ অর্থাৎ ৭৫৩ কোটি টাকা এবং সিডিএ’র নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ৭৫৩ কোটি টাকার মোড অব ফিন্যান্স পরিবর্তন করে জিওবি অনুদান হতে বরাদ্দ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়। অন্যথায় জিওবি ঋণ ও সিডিএ’র অর্থায়নের ১ হাজার ৫০৬ কোটি টাকার কাজ (ভূমি অধিগ্রহণ ও ভৌত নির্মাণ কাজ) অসমাপ্ত রেখে প্রকল্পটি সমাপ্ত করতে হবে।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম বলেন, মন্ত্রণালয়কে আমরা জানিয়েছি নিজস্ব তহবিল বা ঋণ নিয়ে দেড় হাজার কোটি টাকা দেওয়ার সক্ষমতা সিডিএ’র নেই। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে আমরা মন্ত্রণালয়কে চিঠিও দিয়েছি। চিঠির বিপরীতে মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে কিছু তথ্য চেয়েছে, আমরা সে তথ্যগুলো মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। আমরা আশা করছি, মন্ত্রণালয় থেকে সহায়তা পাবো।
পূর্বকোণ/ইব