চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নগরীর চারটি ক্লাবে অভিযান

জুয়ার সরঞ্জাম উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:২৭ পূর্বাহ্ণ

নগরীর মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদ, আবাহনী, মোহামেডান ও ফ্রেন্ডস ক্লাবে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাপিড একশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব)। সেখানে জুয়া খেলার আলামত মিলেছে। ঢাকায় জুয়া ও ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের মধ্যে গতকাল শনিবার সন্ধ্যার পর নগরীর তিনটি ক্লাব ঘিরে অবস্থান নেন র‌্যাব সদস্যরা। প্রথমে নগরীর আইস ফ্যাক্টরি রোডের মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদে ঢুকে র‌্যাব সদস্যরা তল্লাশি শুরু করে। একই সময়ে সদরঘাট এলাকার মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এবং হালিশহর এলাকার আবাহনী লিমিটেড ক্লাবও ঘিরে রাখে র‌্যাব। অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘এখানে জুয়া খেলা হত- এটা আমরা নিশ্চিত হয়েছি। জুয়া খেলার চিপ, কার্ড ও খাতাপত্র পেয়েছি। কিছু টেবিল পাওয়া গেছে সেগুলোতে জুয়ার আসর বসত বলে ধারণা করছি’। ক্লাবটিতে পাঁচটি কক্ষ রয়েছে। র‌্যাব আসার আগে খবর পেয়ে মেঝেতে থাকা কার্পেট তুলে সেখানে পানি ঢেলে রাখা হয়েছে। প্রতিটি কক্ষের ভেতর থাকা টেবিলগুলো বাইরে রাখা হয়েছে। ক্লাবের নিরাপত্তারক্ষী র‌্যাবকে তালা খুলে দেন।

সদরঘাটের মোহামেডান ক্লাবে দেখা যায় জুয়া খেলার জন্য টেবিলগুলোতে তাস, গুটি ও খাতাপত্র রয়েছে। ক্লাবটিতে চারটি কক্ষ রয়েছে। ভেতরে কাউকে পাওয়া যায়নি।

নিরাপত্তারক্ষী শহীদুল্লাহ জানান, দুদিন ধরে ক্লাবে কেউ আসেনা। আগে গভীর রাত পর্যন্ত লোকজন থাকতো। সেই সময় জুয়া, মদ চলতো কিনা প্রশ্ন করা হলে কোন জবাব দেয়নি নিরাপত্তারক্ষী।
ঢাকা থেকে নগরীতে আসা র‌্যাবের এই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, অভিযান হতে পারে বুঝতে পেরে ক্লাব থেকে জুয়ার সরঞ্জাম সরিয়ে রাখা হয়েছে। ‘আমরা সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করছি’। তবে অভিযানের সময় ক্লাবে কাউকে পাওয়া যায়নি। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্লাব পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে আছেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সম্পাদকম-লীর সদস্য হারুন-আর-রসিদ। আর কমিটির সাধারণ সম্পাদক নগর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের কমান্ডার মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, আগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা ইউনিট ক্লাবটি পরিচালনা করত। ‘বছর তিনেক আগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল এর নিয়ন্ত্রণ নেয়’।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মহানগরের সহ-কমান্ডার খোরশেদ আলম বলেন, তিন বছর আগে খসরু নামে একজনকে প্রতিদিনর ১০ হাজার টাকায় ক্লাবটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। বেশ কিছুদিন ধরে বৃষ্টি হলে পেছনের নালা দিয়ে ক্লাবে পানি ঢোকে। ‘ক্লাবটি মেরামত করে না দেওয়ায় ছয় মাস আগে আর চুক্তি নবায়ন করেননি খোরশেদ। এরপর কয়েক মাস ধরে এখানে আর কার্ড খেলা হয় না’।

র‌্যাব জানান, আবাহনী আর মোহামেডান ক্লাবে জুয়া খেলার বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। গত বুধবার ঢাকার ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়াচক্রসহ চারটি ক্লাবে অভিযান চালিয়ে ক্যাসিনোর সরঞ্জাম, মদ, বিয়ার ও জুয়ার কয়েক লাখ টাকা উদ্ধার করে র‌্যাব। ক্যাসিনো চালানোয় যুবলীগের ঢাকা মহানগরের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবারও কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ও ধানমন্ডি ক্লাবে অভিযান চালায় র‌্যাব। কলাবাগান ক্রীড়াচক্র থেকে ক্লাবের সভাপতি কৃষকলীগ নেতা সফিকুল আলম ফিরোজসহ পাঁচজনকে অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে গতকাল শনিবার রাতে নগরীর এসএস খালেদ রোডের ফ্রেন্ডস ক্লাবে অভিযান চালায় কোতোয়ালি থানা পুলিশ। সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে জুয়া খেলার সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট