চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে উত্তাল হয়ে উঠে রাজপথ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১:১৬ অপরাহ্ণ

১৯৫২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্রধর্মঘট ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের পর ২১ ফেব্রুয়ারি হরতালের ঘোষণা দেয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। সরকার ২১ ফেব্রুয়ারির হরতাল বানচালের জন্য ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট কোরেশী সমগ্র শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেন। ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে পুরো দেশ। এ অবস্থায় আবুল হাশিমের সভাপতিত্বে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মধ্যরাত পর্যন্ত বৈঠক হলেও কোনো সিদ্ধান্তে কেউ ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব দ্বিধাদ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভাঙার পক্ষেই অবস্থান নিয়েছিলেন। সিদ্ধান্ত ছিল ১০ জন করে একেকটি দল গঠন করে মিছিল বের করবে, যাতে পুলিশ একসঙ্গে সবাইকে পাকড়াও করতে না পারে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বের হতে থাকে ছাত্ররা। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ লাঠিচার্জ এবং কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। ততক্ষণে আমতলা পরিণত হয় জনারণ্যে। ছাত্রদের সঙ্গে এসে যোগ দেন পেশাজীবী শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ। এরপর পুলিশ গুলিতে ঝরে তাজাপ্রাণ, রক্তে রঞ্জিত হয় রাজপথ। ভাষার জন্য ছাত্রদের এ আন্দোলনে সাধারণ মানুষের মধ্যে কতটা আন্দোলিত করতে পেরেছিল তা শহীদদের নামের তালিকা দেখে বোঝা যায়। একমাত্র ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র  আবুল বরকত ছাড়া বাকি সবাই বাইরের। ভাষা আন্দোলনে শহীদ রফিকউদ্দিন আহমেদ ছাপাখানার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বাড়ি মানিকগঞ্জের সারিল গ্রামে। ২১ ফেব্রুয়ারি তিনিও কলাভবনের সামনের মিছিলে যোগ দেন এবং পুলিশের গুলিতে নিহত হন। আবদুস সালাম ছিলেন শিল্প অধিদপ্তরের কর্মচারী। তার বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞায়। আবদুল জব্বারের বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে। গ্রাম প্রতিরক্ষা দলের কমান্ডার ছিলেন। শাশুড়িকে চিকিৎসা করাতে নিয়ে এসেছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাসপাতাল গেটে মিছিল দেখতে গিয়ে তিনিও তাতে শামিল হন। তার হাতে রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই স্লোগান সংবলিত একটি ব্যানারও ছিল।

 

সফিউর রহমান ছিলেন হাইকোর্টের কর্মচারী, পাশাপাশি রাতে আইন বিষয়েও পড়াশোনা করতেন। তার পৈতৃক বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার কন্যাঘরে। নবাবপুর রথখোলার কাছে পাকিস্তানি সেনারা গুলি করলে তিনি শহীদ হন। ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র ও রাজনৈতিক নেতাদের ছাপিয়ে রাজপথে নায়ক ছিলেন সাধারণ মানুষ। এ দিন জনসাধারণের বিভিন্ন অংশ শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে দলবদ্ধ হয়ে শোভাযাত্রা বের করে আর ১৪৪ ধারা অগ্রাহ্য করে বর্বর হত্যাকা-ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। গ্রাম থেকে গাড়িওয়ালা, মাঝিমাল্লা আর কৃষক- মজুর, ছাত্র-শিক্ষকরা এসে শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট