চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রমজানকে সামনে রেখে বেপরোয়া ভোগ্যপণ্য সিন্ডিকেট: সুজন

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ | ৮:০৮ অপরাহ্ণ

রমজানকে সামনে রেখে ভোগ্যপণ্য সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

আজ মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ অভিযোগ করেন।

এসময় তিনি বলেন, প্রতি বছর রমজান আসে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে। কিন্তু পবিত্র রমজান মাসের সে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বার্তাকে ভন্ডুল করতে তৎপর থাকে একটি অসাধু সিন্ডিকেট চক্র, বর্তমানেও তৎপর রয়েছে তারা। বিশেষ করে ডলার সংকট এবং নতুন এলসি ইস্যু না করার সুযোগ নিয়েছে চক্রটি। একদিকে ছোট আমদানিকারকরা নতুন এলসি ইস্যু নিয়ে যখন জটিলতায় পড়ছেন সে-সময় ভোগ্যপণ্য সিন্ডিকেট চক্রটি নতুন এলসি ইস্যু করে তাদের চাহিদা মাফিক পণ্য আমদানি করে জাহাজজাত করছে। তাদেরকে নানাভাবে সহযোগিতা করছে কিছু সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকসমূহ।

তিনি আরও বলেন, আবার এসব সিন্ডিকেট চক্রগুলোও কিছু ব্যাংকের মালিক কিংবা শেয়ার হোল্ডার। ফলত ব্যাংকিং কার্যক্রমের সম্পূর্ণ সুফল ভোগ করছে অসাধু চক্রটি। এভাবে প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন কৌশলে সরকার এবং ভোক্তাদের বিভ্রান্ত করছে তারা। আমরা বিশ্বস্ত সূত্র এবং গণমাধ্যম মারফত জানতে পেরেছি ইতোমধ্যে ভোগ্যপণ্য সিন্ডিকেট চক্রটি আগেভাগে এলসি খুলেই রমজানের চাহিদার সমপরিমাণ পণ্য দেশে আমদানি করেছে। তাদের সে পণ্য দেশের জলসীমায় বিভিন্ন জাহাজে মজুদ করা আছে।

সুজন বলেন, তাদের কৌশলের অংশ হিসেবে ধীরে ধীরে বাজারে একেকটি পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে তারা। বর্তমানে সে অপচেষ্টার অংশ হিসেবে চিনির দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এভাবে তারা বাজারে একেকটি পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করবে এবং সংকটের পরপরই সে পণ্যসমূহ জাহাজ থেকে খালাস করে বাজারে বিক্রয় করে ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করবে। ফলে এদের কারসাজির কাছে পুরোপুরি অসহায় হয়ে পড়েছে ছোট আমদানিকারক এবং সাধারণ ভোক্তাগণ।

এমন অবস্থা চলতে থাকলে নিত্যপণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায় ঘাটতি হওয়ারও আশঙ্কা রয়ে যায় বলে মন্তব্য করেছেন খোরশেদ আলম সুজন। তিনি বলেন, আসন্ন রমজানের পুরো বাজারটিই ভোগ্যপণ্য সিন্ডিকেট জিম্মি করে রাখবে। এরইমধ্যে রমজানে চাহিদার উর্দ্ধে থাকা ছোলা, খেজুর, মসলাসহ বিভিন্ন ডালের বাজার চড়া হতে শুরু করেছে।

তিনি আরো বলেন, হিজরি মাসগুলোর মধ্যে একটি বিশেষ ও মহিমান্বিত মাস হচ্ছে রজব মাস। এ মাস আসে রমজানের আগমনী বার্তা নিয়ে। তাই ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ এ মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি শুরু করে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে ভোগ্যপণ্য সিন্ডিকেট চক্রটি এ মাস থেকেই জনগণকে জিম্মি করার প্রস্তুতি শুরু করেছে। এসব কর্পোরেট সিন্ডিকেট কোম্পানির একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণের ফলে জিম্মি দেশের সাধারণ নাগরিক। তাই এ অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

সুজন বলেন, কালবিলম্ব না করে এখনই ছোট আমদানিকারকদের নতুন এলসি ইস্যু করার সুযোগ দিতে হবে যাতে করে রমজানে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকে। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংককে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারির জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি। তাহলেই রমজানের বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।

পাশাপাশি রমজানে টিসিবি, ওএমএস বা খোলাবাজারে নিত্যপণ্য বিক্রির কার্যক্রমও জোরদার করার অনুরোধ জানান। তিনি আরো বলেন, রমজানে ব্যবহৃত নুডুলস, সেমাইসহ অন্যান্য ভেজাল খাদ্যপণ্য এখন থেকেই উৎপাদনের প্রস্তুতি শুরু করেছে ভেজাল পণ্য উৎপাদনের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীরা। তারা শহরের অদূরে বিভিন্ন নির্জন বাসাবাড়ি কিংবা ফ্ল্যাটে ভেজাল পণ্য উৎপাদন এবং বিপণনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে যাতে করে আইনশৃংখলা বাহিনীর চোখ এড়িয়ে এসব ভেজাল পণ্য বাজারে সরবরাহ করা যায়। এদেরকে এখনই প্রতিহত করা না গেলে তাদের ভেজাল পণ্যে বাজার সয়লাব হয়ে যাবে। তাই এদের বিরুদ্ধে এখন থেকেই বিএসটিআই, নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর, র‌্যাব এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দের নেতৃত্বে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনার অনুরোধ জানান সুজন।

তিনি সকলকে এসব ভেজাল খাদ্য উৎপাদন এবং বিপণনকারীদের বিরুদ্ধে সজাগ হওয়া এবং এ সংক্রান্ত সংবাদ স্থানীয় প্রশাসন কিংবা নাগরিক উদ্যোগকেও জানানোর অনুরোধ জানান।

 

পূর্বকোণ/মামুন/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট