জিমনেসিয়াম ব্যবসার আড়ালে মানুষকে আটকে রেখে মুক্তিপন আদায়ের দায়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব ৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক নুরুল আবছার।
গ্রেপ্তারকৃতারা হলেন: মো. ইমতিয়াজ উদ্দিন তোফায়েল (৩৪), আনোয়ার হোসেন (২৫),আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৬),জাহিদ হোসেন (১৫) ও রফিকুল ইসলাম আরিফ (২১)।
তিনি জানান, গত ২৪ আগস্ট দুপুরে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কুমিল্লা শাখায় কর্মরত ভিকটিম ফেনীর ট্রাংক রোডে অফিসের কাজ শেষে মদিনা বাস স্ট্যান্ড থেকে চৌদ্দগ্রাম এর উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বাস ছাড়ার আনুমানিক ১৫ মিনিট পর বিসিক রাস্তার মোড়ে দুই জন স্টুডেন্টসহ তিনজন ব্যক্তি উক্ত বাসকে সিগন্যাল দিয়ে থামিয়ে ভিকটিমকে গাড়ি থেকে নামতে বলেন। ভিকটিম গাড়ি থেকে নামার পর তারা তাকে সিএনজির মাধ্যমে ফেনী মডেল থানাধীন একটি জিম সেন্টারের নিচ তলার রুমে নিয়ে আটকে রাখে এবং অপহরণকারীরা তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি দেয় এবং তার কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করে।
তিনি জানান, পরবর্তীতে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল হতে অপহরণকারীরা তার স্ত্রীর কাছে ফোন করে টাকা না দিলে তার স্বামীকে মেরে ফেলা হবে বলে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। তখন ভিকটিমের স্ত্রী কোন উপায় না পেয়ে ভয়ে তাৎক্ষনিভাবে বিকাশের মাধ্যমে ৩ হাজার টাকা প্রেরণ করে। মাত্র ৩ হাজার টাকা পেয়ে অপহরণকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিমের সাথে একটি মেয়ের আপত্তিকর ভিডিওচিত্র মোবাইলে ফোনের মাধ্যমে ধারণ করে এবং ভিকটিমকে এসএস পাইপ দিয়ে পিটিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত করে এবং তার স্ত্রীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে ‘‘যেখান থেকে পারেন টাকা এনে দেন, টাকা দিলে আপনার স্বামীকে ফেরত পাবেন’’ এবং টাকার সাথে আপনার স্বামীর এনআইডি কার্ড এবং ডিবিবিএল এটিএম কার্ড সাথে নিয়ে আসবেন।
এই কথা শুনে ভিকটিমের স্ত্রী কোন উপায় না পেয়ে ২৫ আগস্ট রাত ১টার সময় নগদ ২৫ হাজার টাকা এবং এনআইডি কার্ড, এটিএম কার্ড নিয়ে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে। তখন অপহরণকারী উক্ত টাকা এবং এনআইডি কার্ড, এটিএম কার্ড বুঝে নিয়ে পরবর্তীতে আরো ৫০ হাজার টাকা দাবি করে সাদা কাগজে ভিকটিমের স্বাক্ষর নিয়ে কোন প্রকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানালে ধারণকৃত সাজানো ভিডিও চিত্রগুলো সোস্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দিবে বলে হুমকী প্রদান করে ভিকটিমকে ছেড়ে দেয়।
পরে তিনি র্যাবের কাছে এসে অভিযোগ করেন। র্যাব অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ মুক্তিপনের জন্য মানুষকে অপহরণ করে পরবর্তীতে তাদের জিম্মি করে পরিবার পরিজনের নিকট হতে মুক্তিপন আদায় করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
পূর্বকোণ/রাজীব/পারভেজ