চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জিন রহস্যের উন্মোচন হবে ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে

ইমাম হোসাইন রাজু

৭ ডিসেম্বর, ২০২১ | ১:১৯ অপরাহ্ণ

জিনের রহস্য উন্মোচনে এতদিন ঢাকায় দ্বারস্থ হতে হলেও এবার তা চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়েই (সিভাসু) করা সম্ভব হবে। জিনের রহস্য উন্মোচনের আধুনিক যন্ত্র জিনোম সিকোয়েন্সিং মেশিন বসানো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে। ইতোমধ্যে মেশিনটি স্থাপনের জন্য প্রাথমিক কার্যক্রমও শেষ করেছে কর্তৃপক্ষ।
সিভাসু কর্তৃপক্ষ বলছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ছয় মাসের মধ্যেই চালু করতে চান তাঁরা। আর মেশিনটি স্থাপন হলে চট্টগ্রামে গবেষণার কাজও অনেকাংশে এগিয়ে যাবে বলে মত সংশ্লিষ্টদের। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জিন সম্পর্কে জানতে বা শনাক্ত করার জন্য প্রথমে তার জিনোম সিকোয়েন্সিং করতে হয়। কিন্তু সিভাসুতে জনগুরুত্বপূর্ণ গবেষণা কাজ হয়ে আসলেও শুধুমাত্র জিনোম সিকোয়েন্সিং করার জন্য দ্বারস্থ হতে হয় ঢাকার অন্য ল্যাবগুলোতে। সব ধরণের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এতদিন মেশিনটি স্থাপন করা যায়নি। তবে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মেশিনটি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত বিষয়ে কার্যক্রমও শুরু করেছেন কর্তৃপক্ষ।
সিভাসু সূত্রে জানা যায়, মেশিন ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্স এন্ড এনিম্যাল ব্রিডিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আশুতোষ দাসকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়। ইতোমধ্যে কমিটি বিভিন্ন দেশের তৈরি জিনোম সিকোয়েন্সিং মেশিনের তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করেছেন বলে জানা গেছে। যা আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে ক্রয়ের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ পূর্বকোণকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে জিনোম সিকোয়েন্সিং মেশিন স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যে সকল কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। একটি কমিটিও গঠন করে দেয়া হয়েছে। মেশিন ক্রয় করার জন্য প্রাথমিক ধাপগুলোর কাজ শেষ। আশা করছি আগামী ছয় মাসের মধ্যেই আমরা মেশিনটি চালু করতে পারবো। এটি চালু করা গেল গবেষণার কাজও আর অনেক দূর এগিয়ে যাবে।’
জিনোম সিকোয়েন্সিং মেশিনের সঙ্গে সকল ধরণের যন্ত্রাংশও ক্রয় করা হবে জানিয়ে ভিসি গৌতম বুদ্ধ দাশ আরও বলেন, ‘মেশিনটি প্রাথমিকভাবে বাজার মূল্য ধরা হয়েছে সাড়ে তিন কোটি টাকা। তবে আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে আমরা ই-টেন্ডারিংয়ের যাব। টেন্ডারের মাধ্যমেই ক্রয় করা হবে।’
গবেষকরা জানান, কোন জীবের শরীরের বিষয় জানতে, তার ক্রুটি শনাক্ত বা দূর করতে হলে আগে তার জিন সম্পর্কে জানতে হয়। আর জিন সম্পর্কে জানতে বা শনাক্ত করার জন্য প্রথমে তার জিনোম সিকোয়েন্সিং করতে হয়। আর জিনোম সিকোয়েন্সিং করার অর্থ হলো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ডিএনএ অণুর ভেতর বেইসগুলো কিভাবে আছে, তা বের করা। বর্তমানে আধুনিক মেশিনের সাহায্যে সেটি দ্রুত বের করা হয়। এটা করে জীব বা প্রাণীর ভেতরের জীবন নকশা বের করা হয়। ফলে এরপর বিজ্ঞানীরা সেই জিনোম বা ডিএনএতে পরিবর্তন এনে ক্ষতিকর উপাদান বা ঝুঁকি হ্রাস করার চেষ্টা করতে পারেন।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট