চট্টগ্রাম সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪

আইসোলেশন সেন্টারে ফের বাড়ছে করোনা রোগীর চাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ জুন, ২০২১ | ১২:০৪ অপরাহ্ণ

লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। ছাড়িয়ে যাচ্ছে অতীতের সব রেকর্ড। অন্যদিকে, গত এক বছরের তুলনায় প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। দীর্ঘদিন ফাঁকা থাকলেও নগরীর দুই আইসোলেশন সেন্টার এখন করোনা রোগীতে পূর্ণ হতে শুরু করেছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আইসোলেশন সেন্টারে শয্যা খালি থাকলেও রোগীতে প্রায় পূর্ণ হয়ে আছে বিদ্যানন্দ হাসপাতাল। ৬০ শয্যার মধ্যে ৫০ জন এখন ভর্তি রয়েছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার পর গত ১৩ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় চালু করা হয় বিদ্যানন্দ হাসপাতাল। নগরীর পাহাড়তলী থানাধীন বিটাক মোড় এলাকায় প্রিমিয়ার বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ৭০ শয্যার এ হাসপাতাল চালু করা হয়। শুরুতেই এখানে ৫০ শয্যার আইসোলেশন করা হলেও শয্যা সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৬০টিতে উন্নীত করা হয়েছে। সহসা শয্যা সংখ্যা আরও ১০টি বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিদ্যানন্দ আইসোলেশন সেন্টার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হঠাৎ গত এক সপ্তাহ ধরে সেখানে রোগীর চাপ বাড়তে শুরু করেছে। অন্যদিকে, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নগরীর লালদিঘির দক্ষিণ পাড়ে গত ৬ এপ্রিল থেকে চালু হওয়া চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ৫০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টারেও রোগী বাড়ছে।
জানতে চাইলে বিদ্যানন্দ হাসপাতালের সমন্বয়ক মো. জামাল উদ্দিন বলেন, প্রথমদিকে রোগীর সংখ্যা কিছুটা কম থাকলেও ক্রমান্বয়ে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। রোগীর চাপ না থাকায় শুরুতে আমরা ঢালাওভাবে সব করোনা রোগীকে ভর্তি করিয়েছি। কিন্তু আসন সংকটের কথা ভেবে সম্প্রতি জরুরি রোগী ছাড়া আমরা ভর্তি করাচ্ছি না। অর্থাৎ যাদের অক্সিজেন বা ইনজেকশনের প্রয়োজন রয়েছে তাদের ভর্তি করানো হচ্ছে।
বিদ্যানন্দ হাসপাতালের সুবিধার কথা উল্লেখ করে জামাল উদ্দিন আরো বলেন, একজন রোগী ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে সুস্থ হওয়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। দুইজন অভিজ্ঞ কনসালটেন্ট এবং ৯ জন ডাক্তার সার্বক্ষণিক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত মোট ২২৩ জনের মত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এখানে আমাদের সাধ্যমত চিকিৎসা দিচ্ছি। তবে কোন রোগীর অবস্থা খারাপ হলে আমরা নিজেদের উদ্যোগে চমেকে পাঠিয়ে দিই এবং আমাদের এম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও রয়েছে।
বিদ্যানন্দ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৭০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালে সার্বক্ষণিক দুইজন অভিজ্ঞ কনসালটেন্ট, ১০ জন ডাক্তার, ৮ জন নার্স, ৩০ জন ভলান্টিয়ার সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা, ওষুধ, ল্যাব, টেস্ট, খাবার, এম্বুলেন্স সবকিছুই বিনামূল্যে রোগীরা পাচ্ছেন। এছাড়াও, রয়েছে হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলা ও অক্সিজেন কন্সেন্ট্রেটর। ২৮০ স্কোয়ার ফুটের প্রতিটি কক্ষে তিনটি বেড রয়েছে। কভিড টেস্ট, ল্যাব টেস্ট ও এক্সরে করানোর জন্য রোগীকে বাইরে কোথাও যেতে হয় না।
এদিকে, চসিকের আইসোলেশন সেন্টার সূত্র থেকে জানা যায়, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট আইসোলেশন সেন্টারে বর্তমানে সাতজন রোগী ভর্তি রয়েছেন। অন্যদিকে, এ পর্যন্ত মোট ৭০ জনের মত রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। লাইব্রেরি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় আইসোলেশন তৈরি করা হয়েছে। সেখানে মোট ১২ জন ডাক্তার এবং ১৪ জন ফার্মাসিস্ট রয়েছেন। রুটিন মাফিক তারা রোগীদের সেবা দিচ্ছেন।
চসিক আইসোলেশন সেন্টারের কো-অর্ডিনেটর ডা. মো. মুজিবুল আলম চৌধুরী বলেন, এখানে আইসিইউ সুবিধা ছাড়া সব ব্যবস্থা রয়েছে। সব করোনা রোগীর তো আইসিইউ প্রয়োজন হয় না। আমাদের এখানে পর্যাপ্ত সেবা ও সুবিধা রয়েছে। যেসব করোনা রোগী সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তাদের বড় একটি অংশ চাইলে চসিকের আইসোলেশন সেন্টারে সেবা নিতে পারেন।

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট