চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পহেলা বৈশাখ আজ: সুদিন আসবেই, সেদিনের প্রতীক্ষায়

সাইফুল আলম

১৪ এপ্রিল, ২০২১ | ১১:২৫ পূর্বাহ্ণ

নাচ, গান, মেলা আর মঙ্গল শোভাযাত্রাবিহীন আরেকটি বাংলা নতুন বছর এলো বাঙালির দুয়ারে। মহামারী করোনার কারণে দ্বিতীয় দফা লকডাউনের মধ্যেই মন খারাপ করা এমন একটি বছরের যাত্রা শুরু করতে হচ্ছে এদেশের মানুষকে। লকডাউনের কারণে ঘরবন্দী থেকে রোজার মধ্যে বাঙালির সর্বজনীন উৎসব বৈশাখের প্রথম দিনটি উদযাপন করতে হচ্ছে ঘরোয়া আয়োজনে।

জনসমাগম এড়িয়ে ভার্চুয়ালি নববর্ষ উদযাপনের নির্দেশনা থাকায় বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান হয়তো সীমিত পরিসরে এমন দিন উদযাপন করবে। তবে সেটি উৎসবের মেজাজ পাবে না, সেটা বলাই বাহুল্য।

হঠাৎ করেই করোনা সংক্রমণের উর্ধ্বগতির কারণে এবারও গতবছরের মতো ডিসি হিল, সিআরবির শিরীষতলা কিংবা পাহাড়তলী রেলওয়ে জাদুঘর সংলগ্ন শেখ রাসেল শিশু পার্ক আর বর্ষবরণ অনুষ্ঠান নিয়ে উৎসবমুখর হবে না। বৈশাখকে কেন্দ্র করে বহুকাল থেকে যে মেলার প্রচলন আছে, সেটিও জমবে না। সাহাবউদ্দিনের বলি খেলা দেখার সুযোগ মিলবে না এবারও। কার্যত বাঙালির প্রাণের উৎসব মুখ থুবড়ে পড়েছে চলমান করোনার ছোবলে।

‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা’ এমন কল্যাণ কামনার মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে আজ বৈশাখ। বিগত বছরের মলিনতা মুছে দিয়ে নতুন আলোয় স্নাত বাঙালি জাতি আজ প্রবেশ করেছে নতুন বর্ষে। আজ ১৪২৮ বাংলা সালের প্রথম দিন। আজ শুধুই বাঙালিয়ানায় মেতে ওঠা, গর্বভরে নিজেদের ঐতিহ্য, নিজেদের সংস্কৃতিকে ধারণ করার দিন।  আমরা যে বাঙালি, বিশ্বের বুকে এক গর্বিত জাতি, পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণে আমাদের মধ্যে এই স্বাজাত্যবোধ এবং বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণ পায়, উজ্জীবিত হয়।

এক সময় নববর্ষ পালিত হতো আর্তব উৎসব বা ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে। তখন এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল কৃষির, কারণ কৃষিকাজ ছিল ঋতুনির্ভর। পরে কৃষিকাজ ও খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য মোঘল সম আকবরের সময়ে বাংলা সন গণনার শুরু হয়। হিজরি চান্দ্রসন ও বাংলা সৌর সনের ওপর ভিত্তি করে প্রবর্তিত হয় নতুন এই বাংলা সন।

আবহমান কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ বাঙালির একটি সর্বজনীন লোকউৎসব। এদিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেওয়া হয় নতুন বছরকে। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে সংক্রমণ অনেক বেশি হওয়ায় গত বছরের মতো এবারও বর্ষবরণ উৎসবের উপর সরকার বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

দেশবাসীকে বৈশাখী শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী গতকাল রাতে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেছেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে লকডাউন এবং বৈশাখী উৎসব উদযাপনে বিধিনিষেধ আরোপ করতে হয়েছে। তিনি বলেন, মানুষের জীবন সর্বাগ্রে। বেঁচে থাকলে আবার সব কিছু গুছিয়ে নিতে পারব।

ঠিক তাই। জীবনটা আগে। জীবন যদি রক্ষা পায় তাহলে এমন উৎসব- আয়োজন আরও করা যাবে। উৎসব- পার্বণে মুখর হবে বাঙালির এমন অনেক সর্বজনীন আয়োজন। করোনাকালের পহেলা বৈশাখে আমরা আগামীতে তেমনই একটি দিনের সূর্যের প্রতীক্ষায় থাকলাম। শুভ বাংলা নববর্ষ।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট