চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রেলের উচ্চশব্দের হর্ন সীতাকু-ে শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকু-

১৮ নভেম্বর, ২০১৯ | ২:১৭ পূর্বাহ্ণ

সীতাকু-ে রেল গেইটে স্থাপিত হর্নের চরম শব্দদূষণে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। এতে একদিকে স্থানীয়দের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে, আর অন্যদিকে ক্রমাগত প্রবল শব্দে হৃদরোগ, মানসিক রোগসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। এতে চরম ক্ষোভে এ হর্ণ যন্ত্র উচ্ছেদের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন জানালেও কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অতি সম্প্রতি সীতাকু- পৌরসদর স্টেশনসংলগ্ন মন্দির সড়ক রেল গেইটে রেলওয়ে কর্তৃক ২টি হর্ন স্থাপন করেছে। কোন ট্রেন আসার আরো ১৫-২০ মিনিট আগে গেটম্যান গেট বন্ধ করার পর থেকে এই দুটি হর্ন স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চশব্দে বাজতে শুরু করে। এ শব্দ এত প্রবল যে, হর্ন বাজতে শুরু করলে গেইটের আশপাশে অনেক দূর পর্যন্ত তা ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্থানীয়রা এবং গেটে অপেক্ষমাণ সকল মানুষ প্রবল শব্দদূষণের শিকার হচ্ছেন। সীতাকু- সদর রেল গেইট সংলগ্ন বাসিন্দা সীতাকু- প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লিটন কুমার চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যে হর্নটি বসিয়েছে, তা আসলে মানুষকে অসুস্থ করার একটি ফাঁদ বলে আমি মনে করছি। এ হর্নের শব্দে আমার পরিবারের লোকজন দিনদিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। আশপাশের সকল বাসিন্দা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ট্রেন আসার অন্তত ১৫-২০ মিনিট আগে গেট বন্ধ হয়। ঐ সময় থেকে ট্রেন চলে যাওয়া পর্যন্ত প্রবল শব্দে হর্নটি বাজতে থাকে। শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকাবাসী রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে এসব হর্ন বন্ধ করার জন্য আবেদন জানালেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তিনি বলেন, এখানে হৃদরোগ ও মাথা ব্যাথার রোগীরা চরম কষ্ট পাচ্ছে। ছাত্রদের পড়াশুনা ব্যাহত হচ্ছে। একই এলাকার বাসিন্দা সীতাকু- পৌরসদরের ব্যবসায়ী রাজীব সোম তার ফেসবুকে এ নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করে লেখেন, এ কেমন হর্ন? এতো শব্দ তো সহ্য হচ্ছে না। এভাবেই সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে উঠেছে এই হর্নের শব্দে। স্থানীয়দের তথ্যমতে, প্রতিদিন ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে এই লাইনে প্রায় ৩৫টির বেশি আন্তঃনগর. মেইল, লোকাল ও মালবাহী গাড়ি চলাচল করে। এসব গাড়িকে অতিক্রম করানোর জন্য বেশ কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকে গেট। এই দীর্ঘসময় এভাবে হর্ন বাজতেই থাকে।

সীতাকু- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মো. নুর উদ্দিন জানান, এভাবে ক্রমাগত শব্দ দূষণ হলে উচ্চমাত্রার শব্দ মানুষের শ্রবণশক্তি ও স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলবে। এছাড়া ঘুম কম হবে। ফলে বিরক্তির মাত্রা বেড়ে যায়। শব্দের কারণে শিশুদের শেখার ক্ষমতা কমে যায়। হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদিও হয় দীর্ঘ মেয়াদে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকু- রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মতিলাল বড়–য়া বলেন, এলাকাবাসী এই হর্নগুলো বন্ধ রাখতে যে আবেদন করেছে, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। এখন তারা কী সিদ্ধান্ত নেন তা দেখতে হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট