চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

২০ এপ্রিল, ২০২০ | ৪:২৫ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারে নারায়ণগঞ্জ ফেরত
৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত
নিজস্ব সংবাদদাতা হ কক্সবাজার

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবে ৬৩ জন রোগীর করোনার স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে। এরমধ্যে মধ্য ৪ জনের করোনা ‘পজিটিভ’ ধরা পড়েছে। গতকাল রবিবার প্রাপ্ত ফলাফলে ৪ জনের করোনা ‘পজিটিভ’ ধরা পড়েছে। সেখানে ৩ জন মহেশখালীর এবং ১ জন টেকনাফের বাসিন্দা। কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারি অধ্যাপক (ট্রপিক্যাল মেডিসিন ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ) ডা. মোহাম্মদ শাহজাহান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই ৪ জন নারায়ণগঞ্জ থেকে ফিরেছে বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে স্থাপিত আইইডিসিআর ল্যাবে ৪০৬ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে নাইক্ষ্যংছড়ির ১ জনসহ ৫ জনের রিপোর্ট ‘পজেটিভ’ এসেছে।

করোনা উপসর্গ নিয়ে
বৃদ্ধের মৃত্যু চট্টগ্রামে

নিজস্ব প্রতিবেদক হ

করোনা উপসর্গ নিয়ে চট্টগ্রামে আরও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রবিবার সকালে ফৌজদারহাটে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
জানা যায়, মৃত্যু হওয়া ৫৫ বছর বয়সী ওই রোগী জ¦র-সর্দি ও শ^াসকষ্ট নিয়ে গত শনিবার বিকেলে বিআইটআইডি হাসপাতালে ভর্তি হয়। ভর্তি হওয়া ওই রোগী নগরীর পাহাড়তলী থানাধীন মুরগির ফার্ম এলাকার বাসিন্দা। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বিআইটিআইডি হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ হাসান চৌধুরী বলেন, ‘সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ওই রোগীর মৃত্যু হয়। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরপরই চিকিৎসক তার নমুনা সংগ্রহ করেন। ওই রোগী সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। নমুনা পরীক্ষা শেষে রির্পোট আসলে জানা যাবে তিনি করোনায় আক্রান্ত কিনা’।
এদিকে, মৃত্যু হওয়া ওই ব্যক্তির মরদেহ এখন পর্যন্ত হস্তান্তর করা হয়নি জানিয়ে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি পূর্বকোণকে বলেন, ‘নমুনা পরীক্ষার ফলাফল না আসা পর্যন্ত বিআইটিআইডি হাসপাতালের মরদেহটি রাখা হয়েছে। ফলাফল আসলে তারপর মরদেহটি হস্তান্তর করা হবে। অথবা কিভাবে তা দাফন করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে’।
উল্লেখ্য: চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া শ^াসকষ্টসহ নানান সমস্যা নিয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, বিআইটিআইডি হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়ে মৃত্যু হয়েছে একাধিকজনের। যাদের নমুনা পরীক্ষা করা হলেও তারা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না বলে জানান স্বাস্থ্য বিভাগ।

সংস্পর্শেই বাড়লো করোনা রোগী
­হ ১১৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯ জন শনাক্ত
­হ চট্টগ্রামে চার, লক্ষ্মীপুরে চার ও নোয়াখালীতে একজন
­হ একই পরিবারের ভাই-বোন, আছেন পুলিশ সদস্যও
নিজস্ব প্রতিবেদক হ

টানা তিনদিন চট্টগ্রামে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা মাত্র একজন করে হলেও হঠাৎ করেই গতকাল তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চারজনে। আর নতুন শনাক্ত এ চারজন নতুন কোন এলাকার নয়। বরং অতীতে আক্রান্ত হওয়ার পরিবারের সদস্য সকলেই। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, শনাক্ত হওয়া সকলেই সংস্পর্শের মাধ্যমেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
গতকাল রবিবার চট্টগ্রামের একমাত্র করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষাগার চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি হাসপাতালে ১১৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। যারমধ্যে দশটি নমুনার ফল পজেটিভ আসে। এদেরমধ্যে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা নয়জন। বাকি একজনের দ্বিতীয় দফায় পরীক্ষা পজেটিভ আসে। যিনি সাতকানিয়া এলাকার ইছামতির বাসিন্দা। নতুন শনাক্ত হওয়া নয়জনের মধ্যে মধ্যে চট্টগ্রামে চারজন, লক্ষ্মীপুর জেলার চারজন এবং নোয়াখালী জেলার একজন রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রামে নতুন আক্রান্ত হওয়াদের মধ্যে একই পরিবারের দুই জন রয়েছে। যারা নগরীর উত্তর কাট্টলী এলাকার ঈশান মহাজনঘাটের মেরিডিয়ান গ্রুপের মালিকের জায়গা পাহারাদরের ২৫ বছর বয়সী ছেলে ও ২৮ বছর বয়সী মেয়ে। আক্রান্ত হওয়া দুইজনেই বাসায় অবস্থানে ছিল। যদিও রাতে তাদের ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আক্রান্ত এ দুইজনের পিতা গত সপ্তাহে করোনা আক্রান্ত হয়ে বিআইটিআইডি হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া আক্রান্ত হয়েছেন নগর পুলিশের ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল। যার বয়স ৪৫ বছর। তিনি এতদিন নগরীর মনছুরাবাদ পুলিশ লাইনে হোম কোরেন্টাইনে ছিলেন। কিছুদিন আগে তার জ¦র-সর্দিও শ^াসকষ্ট দেখা দিলে তার নমুনা সংগ্রহ করে বিআইটিআইডি ল্যাবের চিকিৎসকরা। এর বাইরে জেলার সাতকানিয়া উপজেলার রূপনগর এলাকার ৪৩ বছর বয়সী ফরিদুল আলম। গত ১৬ এপ্রিল সাতকানিয়ায় ৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় তিনি করোনা আক্রান্ত বলে জানা যায়। এছাড়াও তিনি গত ৯ তারিখে সাতকানিায়ায় করোনায় মৃত সিরাজুল ইসলামের জামাতা। এ চারজনসহ চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯ জনে। যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের।
নতুন শনাক্ত হওয়া অন্যরা হলেন: লক্ষ্মীপুর জেলার সদর এলাকার ২৩ বছর বয়সী এক নারী, ৩৪ বছর বয়সী এক যুবক, ৩১ বছর বয়সী একজন, সদরের হাফিজ উল্লা পাটোয়ারী বাড়ির ২৬ বছর বয়সী যুবক। আর নোয়াখালী সদরের চর মটুয়া এলাকার ২০ বছর বয়সী যুবক রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ।
গতকাল রবিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য দপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির পূর্বকোণকে বলেন, ‘ শনিবার চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের বিশেষায়িত হাসপাতাল ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) ল্যাবে মোট ১১৩ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তারমধ্যে দশটি পজেটিভ আসে। এদের মধ্যে একজন পুরানো আক্রান্ত রোগী। নতুন শনাক্ত হয় নয়জন। যাদের মধ্যে চট্টগ্রামে চারজন, লক্ষ্মীপুরের চারজন ও নোয়াখালীতে একজন রয়েছেন।
আক্রান্ত পুলিশ সদস্যের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) আবু বকর পূর্বকোণকে গতরাতে বলেন, ‘শনাক্ত হওয়া পুলিশের ওই সদস্য ট্রাফিকের উত্তর বিভাগে কর্মরত। তিনি বর্তমানে মনছুরাবাদ পুলিশ লাইনে কোয়ারেন্টাইনে আছেন। রাতেই তাকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে’।
অন্যদিকে, কাট্টলী এলাকার একই পরিবারের দুইজনকেও রাতে বিআইটিআইডি হাসপাতালের আইসোলেশনের পাঠানোর ব্যবস্থার কথা জানিয়েছে আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘আগে থেকেই তাদের বাড়ি লকডাউন করা আছে। নতুন করে করতে হবে না। আক্রান্ত দুই ভাইবোনকেও পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। রাতেই তাদের বিআইটিআইডি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে’।
এদিকে চট্টগ্রামে নতুন করে শনাক্ত হওয়া সকলেই সামাজিক সংক্রমণ বা সংস্পর্শের শিকার উল্লেখ করে জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি পূর্বকোণকে বলেন, ‘যারাই আক্রান্ত হয়েছে, সকলেই আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে থেকেই শিকার। সামাজিক সংক্রমণ রোধ করা না গেলে, আক্রান্ত বাড়তে থাকবে’।
গত ২৪ ঘন্টায় পরীক্ষা করা ১১৩ জনসহ বিআইটিআইডিতে এ নিয়ে ১ হাজার ৪৫১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তার মধ্যে এ পর্যন্ত ৬৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। অন্যদিকে, চট্টগ্রামে শনাক্ত করোনা রোগীদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে তিনজন করোনা শনাক্ত হওয়ার আগেই মৃত্যু বরণ করেন। আরেকজন শনাক্ত হওয়ার মাত্র কয়েকঘণ্টা পর মৃত্যু হয়। অন্যজন বিআইটিআইডি হাসপাতালে শনাক্তে ১২ ঘণ্টা পর মৃত্যু হয়।

৩৩৩ নম্বরে ফোন
করলে ত্রাণও মিলবে
করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে ৩৩৩ হটলাইন নম্বরে ফোন করে স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সেবার পাশাপাশি অভাবী মানুষরা যাতে ত্রাণ সহায়তাও নিতে পারেন, সেই উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। হটলাইনকে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত করা এবং ত্রাণের জন্য ডেটাবেইজ তৈরি শেষে সপ্তাহখানেকের মধ্যে এমন একটি ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হবে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান জানিয়েছেন।-বিডিনিউজ
গতকাল রবিবার তিনি বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে খাদ্যের কষ্টে মানুষদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ।
“আইসিটিমন্ত্রী এবং বিশেষজ্ঞদের সাথে আজ আমরা সভা করেছি, রেজুলেশন হয়েছে, ইতোমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের খাদ্য সহায়তার বিষয়ে ৩৩৩ নম্বরকে সংযুক্ত করা হবে। ৩৩৩ নম্বরের সঙ্গে ত্রাণ মন্ত্রণালয় ‘কানেকটেড’ হয়ে গেলে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।”
ব্যবস্থাটি পূর্ণাঙ্গরূপে চালু করতে সাতদিন লাগতে পারে জানিয়ে ডা. এনামুর বলেন, “সারা দেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে যেন কানেক্ট করা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ হচ্ছে। এটা বড় কাজ, দুয়েকদিনের মধ্যে সম্ভব নয়, এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। “বাংলাদেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি লম্বা সময় ধরে, অন্তত মে মাস পর্যন্ত এক্সটেন্ড করবে- এটা ধরে নিয়ে কাজ করছি।”
এই ব্যবস্থা চালুর জন্য আইসিটিসি বিভাগে ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের জন্য আলাদা লোকবলও নিয়োগ দিতে হবে বলে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ত্রাণ সহায়তা পাওয়ার যোগ্য মানুষদের সবাইকে যুক্ত করে একটি ডেটাবেইজ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। “আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এটা নিয়েও আলাচনা হয়েছে। তারা অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করছে, সোমবার থেকে এই কাজ শুরু হবে।”
৩৩৩ হটলাইনের মাধ্যমে সকল সরকারি সেবা প্রাপ্তির পদ্ধতির তথ্য প্রদান; বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা সম্পর্কিত তথ্য প্রদান; সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগের তথ্য প্রদান এবং সামাজিক সমস্যা প্রতিকারে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দাখিল নিয়ে তথ্যসেবা দেওয়া হয়ে থাকে। নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবাও দেওয়া হচ্ছে।
ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ থাকার পরও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু হতদরিদ্র মানুষ ত্রাণ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এজন্য কারো খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন হলেই যেন ৩৩৩ হটলাইনে করে তা জানাতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। “কেউ ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে ত্রাণ চাইলে আমাদের বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি তা যাচাই করে ত্রাণপ্রার্থীর নিকটবর্তী যাদের অবস্থান হবে তারা তার বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দেবে।”
করেনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মধ্যে গত ২৬ মার্চ থেকে অফিস-আদালতে ছুটি চলছে, আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত এই ছুটি ঘোষণা করা আছে। আর তার আগে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় লকডাউনের পরিধি আরও বাড়তে পারে।
এই লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বেশিরভাগ শ্রমজীবী। এমন পরিস্থিতিতে সরকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তায় ত্রাণ হিসেবে ৪৭ কোটি ৩৫ লাখ ৭২ হাজার ২৬৪ টাকা এবং ৯৪ হাজার ৬৬৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে।
সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ত্রাণ থেকে কেউ বঞ্চিত হলেও যাতে তাদের আওতায় আনা যায় সেজন্য ৩৩৩ হটলাইন নম্বরটিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে বলে জানান ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর।

চট্টগ্রামে ত্রাণ নিয়ে
বিক্ষোভের নেপথ্যে
যারা
পূর্বকোণ ডেস্ক হ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে কর্মহীন হয়েছে অসংখ্য দিনমজুর, শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষ। জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, পুলিশ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের উদ্যোগে এসব অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে নিয়মিত। কিন্তু সম্প্রতি চট্টগ্রাম নগর ও জেলার কয়েকটি জায়গায় ত্রাণের জন্য বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে মানুষ। আর এসব মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায় কিছু ব্যক্তি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন কয়েকজনের নাম। যারা এসব মানুষকে ইন্ধন দিয়ে রাস্তায় নামিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজরদারিতে রেখেছে এসব ব্যক্তিকে। অনুসন্ধানে উঠে আসা কয়েকজনের মধ্যে রয়েছে, বাকলিয়া এলাকায় শ্রমিকদল নেতা মো. মহিউদ্দীন রণি, সীতাকু-ে শিবির ক্যাডার আজাদ, কর্নেলহাট এলাকায় যুবলীগ নেতা মনোয়ার উল আলম নোবেল।
গত ১৭ এপ্রিল ত্রাণের দাবিতে বাকলিয়া তুলাতলী এলাকায় মদিনা ক্লাবের সামনে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করে কিছু লোক। এতে ইন্ধন দেন বলে অভিযোগ রয়েছে ১৮ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ড শ্রমিকদলের সভাপতি মো. মহিউদ্দীন রণির বিরুদ্ধে। একই দিন বিকেলে সীতাকু- উপজেলার ভাটিয়ারি ইউনিয়নের হাসনাবাদ এলাকায় ত্রাণের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে অর্ধশতাধিক লোক। এতে ইন্ধন দেন বলে অভিযোগ রয়েছে শিবির ক্যাডার আজাদের বিরুদ্ধে। তার ভাড়াটিয়াদের দিয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করা হয় বলে তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা।
১৬ এপ্রিল কর্নেলহাট এলাকায় ত্রাণের জন্য বিক্ষোভ করেন শ’খানেক মানুষ। এতে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে যুবলীগ নেতা নামধারী মনোয়ার উল আলম নোবেলের বিরুদ্ধে।মনোয়ার উল আলম নোবেল ওই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে চসিক নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তিনি পলাতক যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের অনুসারী ও সিআরবি জোড়া খুন মামলার অন্যতম আসামি। নোবেলের পরিবারের অন্য সদস্যরা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
১৮ এপ্রিল নগরের হালিশহর বড়পোল এলাকায় রাষ্ট্রয়ত্ব তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েলের জন্য গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়িতে থাকা খাদ্যসামগ্রী ও ফল ছিনিয়ে নেয় কিছু লোক। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে কিছু মালামাল ফেরত পাওয়া যায়।-বাংলানিউজ
হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, কিছু লোক সড়কে অবস্থান নিয়েছিল। তারা একটি গাড়ি থেকে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ফেলেছিল। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে কিছু ফেরত পাওয়া যায়। তিনি বলেন, যারা এসব কাজে ইন্ধন দিচ্ছে তাদের বের করতে কাজ করছি আমরা।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দীন বলেন, বাড়ির মালিক ভাড়া চাওয়ায় কিছু লোক সড়কে নেমে এসেছিল। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়েছে। ওসি নেজাম বলেন, বাকলিয়া এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। ত্রাণের জন্য মানুষের বিক্ষোভ করার প্রশ্নই আসে না।
আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ত্রাণের দাবিতে কিছু লোক বিক্ষোভ করেছে। আমরা তাদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা প্রতিদিন ত্রাণ দিচ্ছি। বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগেও ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তারপরও বিক্ষোভ করেছে কিছু লোক। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে কয়েকজন ব্যক্তি এসব ঘটনায় ইন্ধন দিচ্ছে। আমরা তাদের নজরদারি করছি।

২৪ ঘণ্টায় ৭ জনের মৃত্যু নতুন আক্রান্ত ৩১২ জন
নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

সারা দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ছে। গতকাল রবিবার পর্যন্ত সারা দেশে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৫৬ জন। আর মারা গেছেন ৯১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে রাজধানী ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জেই বেশি। গত শনিবার পর্যন্ত একমাত্র ঢাকাতেই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮৭৩ জন। আর ঢাকার বাইরে যেসব জেলায় আক্রান্তের যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তারমধ্যে অধিকাংশ জনই ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে যাওয়া ব্যক্তি। তাছাড়া করোনাভাইরাসে বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ৭ জন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা ৯১ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩১২ জন। এ নিয়ে মোট ২৪৫৬ জনের শরীরে করোনা ধরা পড়লো।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এসব তথ্য জানান। অনলাইন বুলেটিনে বলা হয়, বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে যাদের ভেন্টিলেটর (কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র) সহায়তা নিতে হয়েছে তাদের প্রায় কাউকেই বাঁচানো যায়নি। আইসিইউ ও ভেন্টিলেটরে নেয়ার রোগীদের বিষয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। এ পর্যন্ত যে ৯ জনকে ভেন্টিলেটরে নিতে হয়েছে তাদের ৮ জনই মারা গেছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আরও বলেছেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে সারা দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। লকডাউন কাজ করছে না সেভাবে। আর লোকজন আক্রান্ত এলাকা থেকে ভালো এলাকায় যাচ্ছে। নতুন লোক আক্রান্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। গত ১২ এপ্রিল পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬২১ জন। এরপর ধীরে ধীরে এর সংখ্যা বাড়ছে। এখন তা দাঁড়িয়েছে ২৪৫৬ জনে। এরমধ্যে গত তিনদিনেই রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮৮৭ জন। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জেই আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সরকার সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। এই ছুটি সময়ে সময়ে বাড়ানো হচ্ছে। বিচ্ছিন্নভাবে স্থানীয় প্রশাসন এরই মধ্যে প্রায় ৫০টি জেলা লকডাউন ঘোষণা করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে মানুষকে ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। প্রতিদিনই সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসন মাইকিং করছে। জনগণকে সতর্ক করে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত ও প্রচারিত হচ্ছে। কিন্তু এসব উপেক্ষা করেই লোকজন বাইরে বের হচ্ছে। ফলে নতুন নতুন ব্যক্তি সংক্রমিত হচ্ছে।
সারা দেশের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলায় রোগী বেশি চিহ্নিত হওয়ায় গত ৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জকে লকডাউন ঘোষণা করে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু এরপরও এই জেলা থেকে লোকজন পালিয়ে অন্য জেলায় (নিজ এলাকা) যাচ্ছেন। স্থানীয় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়ছেন তারা। এরমধ্যে শনিবার রাতে ট্রাকে করে সুনামগঞ্জ যাবার সময় স্থানীয় প্রশাসন ফতুল্লায় ৪৬ জনকে আটক করে। এরপর তাদের আগের জায়গায় ফিরে যেতে বাধ্য করে। কিন্তু প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন পথে মানুষ নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা ছাড়ছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তি উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রতিদিনই পোস্ট দিচ্ছেন। এ পরিস্থিতির মধ্যেও ঢাকা থেকে ট্রেনে করে প্রায় ৫০ জন ব্যক্তি সিলেটে গেছেন। তারা কিভাবে গেলো তা নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে প্রশাসন।
ভেন্টিলেটরে নেয়া ৯ জনের ৮ জনই মারা গেছেন
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে যাদের ভেন্টিলেটর (কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র) সহায়তা নিতে হয়েছে তাদের প্রায় কাউকেই বাঁচানো যায়নি। আইসিইউ ও ভেন্টিলেটরে নেয়ার রোগীদের বিষয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। এ পর্যন্ত যে ৯ জনকে ভেন্টিলেটরে নিতে হয়েছে তাদের ৮ জনই মারা গেছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় আইসিইউয়ে ফলাফল ভালো পাওয়া যায়নি। অত্যান্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, এ পর্যন্ত ভেন্টিলেটরে দেয়া ৯ জনের মধ্যে আটজনই মারা গেছেন। তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা অক্সিজেন থেরাপির ওপরে জোর বেশি দিচ্ছেন। এতে ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যে আরো সাড়ে ৩ হাজার নতুন অক্সিজেন বোতলের অর্ডার দেয়া হয়েছে। এছাড়াও আমাদের বিভিন্ন হাসপাতালে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার অক্সিজেন বোতল মজুদ রয়েছে।

ধান কাটতে শ্রমিক পাঠানো হচ্ছে হাওড়ে
­হ চট্টগ্রাম থেকে গতকাল
পাঠানো হয়েছে একশ, আজ
­ থেকে পাঠানো হবে দেড়
­ হাজার শ্রমিক
নিজস্ব প্রতিবেদক হ

হাওড় অঞ্চলে ধান কাটার জন্য চট্টগ্রাম থেকে শ্রমিক প্রেরণ করা হচ্ছে। গতকাল (রবিবার) বিকেল ৫ টায় প্রথমদিনে বাকলিয়ার বগারবিল ও শান্তিনগর থেকে একশ’ জন শ্রমিককে ৫টি বাসে করে প্রেরণ করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ। এসব শ্রমিক কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম থানা এলাকার হাওড়ে কাজ করবেন। আজ (সোমবার) থেকে এস আলম গ্রুপের ৪০টি বাসে করে মোট দেড় হাজার শ্রমিক হাওড়ে প্রেরণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুসারে পুলিশ কমিশনার মাহবুবর রহমান এই উদ্যোগ নিয়েছেন। বাকলিয়া থানার ওসি নেজাম উদ্দিন জানান, বর্তমানে ধান কাটার মৌসুম শুরু হওয়ায় ঐ এলাকায় শ্রমিক স্বল্পতার কারণে বোরো ধান কাটার শ্রমিক না পাওয়ায় সৃষ্ট অসুবিধার কারণে প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা অনুযায়ী কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ এলাকার হাওড় অঞ্চলে চট্টগ্রাম থেকে শ্রমিক পাঠানো হচ্ছে। এসব শ্রমিকও ঐ এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি আরো জানান, কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানার বাসিন্দা শ্রমিক শ্রেণির লোকজন বাসযোগে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ পূর্বক অষ্টগ্রাম থানা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির তত্ত্বাবধানে থেকে ধান কাটার শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত থাকবেন। তারা এলাকায় একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে থাকবেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এই উদ্বুদ্ধকরণ কাজ দেখে সুনামগঞ্জ জেলায় যাওয়ার জন্য আরো ৪০ জন ধান কাটার শ্রমিক প্রস্তুতি নিয়েছে। এই শ্রমিকদের আজ গন্তব্যস্থলে প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

রমজানে বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থার পরামর্শ
পূর্বকোণ ডেস্ক হ

পবিত্র রমজান মাসকে ঘিরে করোনা মোকাবিলায় কিছু নির্দেশনা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির মতে- ধর্মীয় ও সামাজিক জমায়েত বাতিল করার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে- জনসমাগমকে সীমাবদ্ধ, সংশোধন, স্থগিতকরণ, বাতিল করা বা এগিয়ে যাওয়ায় যে কোনো সিদ্ধান্ত ঝুঁকি মূল্যায়ন করার পরিস্থিতির উপর বিবেচনা করে নেয়া উচিত। এ সিদ্ধান্তগুলো করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি কি হবে সে হিসেবে নেয়া উচিত। যদিও ধর্মীয় ও সামাজিক সমাবেশ বাতিল করা হয় সেক্ষেত্রে বিকল্প ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
রমজানে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার পরামর্শ:
১. মসজিদে নামাজ আদায় করার সময় কমপক্ষে ১ মিটার বা ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ২. কোলাকুলি করা, গায়ের উপর হাত দিয়ে ডাকা, শরীরের উপর হাত রাখা- এসব অভ্যাস ত্যাগ করুন। ৩. রমজানে দোকানে বা বাজারে একসঙ্গে অনেক মানুষ জমায়েত বন্ধ করুন। ৪. অসুস্থ মানুষ এবং করোনার সামান্যতম লক্ষণ আছে তাদের বাসায় থাকতে বলুন। সেইসঙ্গে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলুন। ৫. প্রবীণ এবং অসুস্থদের সমাবেশে অংশ নিতে নিষেধ করুন।
রমজানে যে কোনো প্রকার সমাবেশের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ:
১. বাইরের যেকোনো সমাবেশ পরিত্যাগ করতে হবে এবং একান্ত প্রয়োজন হলে বাড়ির ভিতর খোলামেলা জায়গায় ব্যবস্থা করতে হবে। ২. সমাবেশের সময়সীমা যতটা সম্ভব কম করুন। ৩. বড় বড় সমাবেশে যোগ দেয়ার চেয়ে কম অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে ছোট সমাবেশের আয়োজন করুন। ৪. দাঁড়িয়ে থাকার সময়, নামাজ পড়ার সময়, ওযু করার সময় এবং জুতা সংরক্ষণের স্থানেও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন। ৫. মসজিদে প্রবেশ এবং বের হওয়ার মুহূর্তে সব সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ৬. সমাবেশের মধ্যে যদি কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা যায় তবে তার ঠিকানায় যোগাযোগ করতে হবে। ৭. মসজিদের প্রবেশদ্বারে এবং ভিতরে হ্যান্ড ওয়াশ ও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির ব্যবস্থা থাকতে হবে। সেইসঙ্গে অ্যালকোহল সমৃদ্ধ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৮. পর্যাপ্ত পরিমাণে টিস্যু থাকতে হবে ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। ৯. মসজিদে কার্পেটের উপরে ব্যবহারে জন্য ব্যক্তিগত জায়নামাজ ব্যবহারের বিষয়ে সবাইকে উৎসাহিত করতে হবে। ১০. জীবাণুনাশক এবং ডিটারজেন্ট ব্যবহার করে নামাজের আগে পরে মসজিদ পরিষ্কার রাখতে হবে। ১১. মসজিদের প্রাঙ্গণ, ওযুখানা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সেইসঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

সরকারকে পরামর্শ দিতে
বিশেষজ্ঞ জাতীয় কমিটি
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভুত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি গঠন করেছে সরকার। বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট এবং সিনিয়র শিশু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে সভাপতি করে ১৭ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ১৮ এপ্রিল এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।-বাংলানিউজ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য প্রফেসর ডা. নজরুল ইসলাম (ভাইরোলোজিস্ট), বাংলাদেশ ডায়াবেটিক এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. এ কে আজাদ খান কমিটির সদস্য রয়েছেন। কমিটির সদস্যরা হলেন- সিনিয়র প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. শাহলা খাতুন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভিসি গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. মাহমুদ হাসান, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সদস্য মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য প্রফেসর ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত (নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ), স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ডা. ইকবাল আর্সলান, সিনিয়র প্রসুতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ও অবসটেরিকেল এন্ড গাইনোকলজিকেল সোসাইটি অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ডা রওশন আরা বেগম, আইসিডিডিআর, বিএর মেটারনাল এন্ড চাইল্ড হেলথ রিসার্চের সিনিয়র পরিচালক ডা. শামস এল আরেফিন কমিটির সদস্য হিসেবে সরকারকে পরামর্শ দেবেন। সিনিয়র এনেসথিওলজিস্ট প্রফেসর ডা. খলিলুর রহমান ও সিনিয়র মেডিসিন স্পেশালিস্ট প্রফেসর ডা. তারিকুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি ও ইমিউনোলজি বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. হুমায়ন সাত্তার, জাতীয় ক্যান্সার সদস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. মো. গোলাম মোস্তফা, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন পরিচালক প্রফেসর ডা. মাহমুদুর রহমান, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের প্রাক্তন পরিচালক প্রফেসর ডা. মো. আব্দুল মোহিতকে কমিটিতে রাখা হয়েছে। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন।
বৈশ্বিক মহামারিতে বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ হতে এ পর্যন্ত ২ হাজার ১৪৪ জন আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণ করেছে ৮৪ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ৬৬ জন। আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাওয়ার মধ্যে এই পরামর্শক কমিটি গঠন করলো সরকার।
কমিটির কার্যপরিধি :
এই কমিটি সরকারকে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ বিষয়ে পরামর্শ প্রদান; হাসপাতালের সেবার মান বৃদ্ধির বিষয়ে পরামর্শ প্রদান; যেসব চিকিৎসক স্বাস্থ্য সেবাদান করছেন তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে পরামর্শ দেবে।
স্বাস্থ্য সেবাদানকারী চিকিৎসকসহ অন্যান্যদের উৎসাহ প্রদানে কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ প্রদান; কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন সংক্রান্ত গবেষণার বিষয়ে পরামর্শ দেবে।
গত ২৮ মার্চ ৮ জন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে আদেশে বলা হয়েছে, জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং এ কমিটি উভয় প্রয়োজনবোধে যেকোনো কমিটির এক বা একাধিক সদস্যের সঙ্গে মতবিনিময় করতে পারবেন। কমিটি প্রয়োজনে সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে বলেও আদেশ উল্লেখ করা হয়েছে।

এনআইডি, ভোটার কার্ড না থাকলেও সরকারি ত্রাণ
ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের তালিকা
তৈরির নির্দেশনা মেয়রের
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা ভোটার কার্ড না থাকলেও সরকারি ত্রাণ পাওয়া যাবে, সরকারের এই ঘোষণা বাস্তবায়নে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের তালিকা তৈরির প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন। কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে নির্দেশনায় তিনি বলেন, নগরীতে অবস্থানরত নি¤œজীবী, বেকার শ্রমিক, চা দোকানদার, রেস্টুরেন্ট শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, মোটরযান শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক ও কৃষি শ্রমিক, দোকান কর্মচারী যে-যেখানে অবস্থান করছেন সেই ঠিকানানুযায়ী ত্রাণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং কোন অসচ্ছল পরিবার যাতে বাদ না পড়ে সেই দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে যাতে আইডি কার্ড না থাকা-অন্য আঞ্চলিক অবস্থান বা ভোটার না হওয়া, এসব আমলে না এনে সরকারি ত্রাণ প্রাপ্তির হালনাগাদ তালিকা তৈরী এবং সকল নাগরিকের ঘরে ঘরে যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরকারি ত্রাণ-সামগ্রী পৌঁছে যায় সেজন্য কাউন্সিলরদের শতভাগ সচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি প্রান্তিকস্তরে খাদ্য সহায়তায় সরকারি ওএমএস চাল বিতরণের কার্ড তৈরি এবং সরকারি নির্দেশনার অন্যান্য দিক তুলে ধরে বলেন, কার্ডপ্রাপ্ত সেবা গ্রহীতারা প্রতি মাসে ১০ টাকা মূল্যে মাসিক ২০ কেজি চাল সংগ্রহ করতে পারবেন। তা সরকার নিয়োজিত ডিলারদের কাছ থেকেই তুলে নিতে হবে। ওএমএস-এ কার্ড তালিকায় চট্টগ্রাম নগরীতে শুধুমাত্র আন্দরকিল্লা ও জামাল খান ওয়ার্ডে ২ শত

করে পরিবার অন্তর্ভুক্ত হবেন। অন্য ওয়ার্ডগুলোর প্রতিটিতে ৪ শত করে পরিবারকে ওএমএস কার্ড তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ওএমএস কার্ড প্রত্যাশীদের প্রত্যেককে ২ কপি ছবিসহ আইডি কার্ডের ফটোকপি সংযোজন করে তালিকা প্রস্তুত করার জন্য কাউন্সিলরদের প্রতি নির্দেশনা প্রদান করেন সিটি মেয়র। তিনি ওএমএস’র চাল নিয়ে যাতে করে নয়-ছয় না হয় এবং এই ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্টরা চাল আত্মসাৎ অপচেষ্টায় যাতে লিপ্ত না হয় সে ব্যাপারে নজরদারি রাখার জন্য কাউন্সিলরদের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে কোন অনিয়ম বা দুর্নীতি পরিলক্ষিত হলে তা সিটি কর্পোরেশন ও সংশ্লিষ্ট তদারকি সংস্থাকে অবহিত করতে হবে। তিনি কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, কর্পোরেশন থেকে সরকারি ত্রাণ-সামগ্রী বুঝে নেয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তা তালিকাভুক্ত
ত্রাণ-সামগ্রী গ্রহীতাদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। এ ছাড়াও ত্রাণ গ্রহীতাদের সুবিধা-অসুবিধার খোঁজ নেয়াসহ তারা যেন ঘরে অবস্থান করে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সরকারি নির্দেশনা এবং সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে নেয়, এছাড়া সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজিয়ে রাখার ব্যাপারে কাউন্সিলরদের ডোর-টু ডোর ক্যাম্পেইন চালিয়ে যেতে সিটি মেয়র উপদেশ দেন।-বিজ্ঞপ্তি

ত্রাণের অপেক্ষায় ৪শ জেলে পরিবার
কালুরঘাট
কাজ নেই, খেয়ে না খেয়ে দিন
অতিবাহিত করছে পরিবারগুলো
মরিয়ম জাহান মুন্নী হ

প্রতিদিনই অপেক্ষায় থাকে কেউ আসবে। হয়তো হাতে তুলে দিবে পরিবারের জন্য কিছু আহার। কিন্তু দিন যায় আশা পূরণ হয় না। কেউ আসে না আর হাতেও তুলে দেয়না কোনো খাবার। পরিবার নিয়ে এমনিকষ্টে দিন অতিবাহিত করছে নগরীর কালুরঘাট এলাকার প্রায় ৪শ’ জেলে পরিবার। যাদের জীবিকা ছিল নদীতে মাছ শিকার করা। আর সেই মাছ বাজারে বিক্রি করে সংসারের ভরণপোষণ করা। কিন্তু বৈশি^ক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে আজ কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে রয়েছে ৪শ’ জেলে পরিবারের প্রায় সকলেই। জানা যায়, ৫ নং মোহরা ওয়ার্ডের জেলেপাড়া এলাকার প্রায় ৪শ’ জেলে পরিবার এখনো পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিসহ কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা পায়নি। এতে কাজ বিহীন এ জেলে পরিবারগুলো খেয়ে না খেয়ে দিন অতিবাহিত করছে। বৈশি^ক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অফিস-আদালত থেকে শুরু করে বন্ধ রয়েছে সব রকম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এমন পরিস্থিতিতে শুধু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই নয়, বন্ধ রয়েছে সকল শ্রেণির মানুষের কাজকর্ম। তাই দিন যত বাড়ছে তত অনাহারে দিন কাটাচ্ছে নি¤œ, নি¤œ মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। কাজকর্ম বিহীন এ মানুষগুলো পরিবার-পরিজন নিয়ে এখন কীভাবে দিন পার করবে, তা

নিয়ে তাদের মধ্যে দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। কর্ণফুলী নদীর কিনারে জেলে পাড়া এলাকার কিছু বাসিন্দা জানায়, এখানের প্রায় ৪শ’ টি জেলে পরিবার রয়েছে। তারা সবাই কর্ণফুলী নদীতে মাছ শিকার করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু এখন নদীতে মাছ ধরতে না পারায় ও শহরে মানুষ না থাকায় বাজারে মাছ বিক্রি হচ্ছে না। এতে প্রতিটি পরিবারে অভাব দেখা দিয়েছে। পরিবারগুলোতে প্রায় সবাই বেকার অবস্থায় ঘরে বসে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তারা সরকারের কাছে ত্রাণ সহায়তা চায়। প্রতিদিন ত্রাণের অপেক্ষায় থাকে সবাই। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এলাকার কেউ ত্রাণ পায়নি।
এলাকার বাসিন্দা স্বপন কুমার দাশ ও মো. আবুল কাশেম বলেন, আমাদের এখানে কেউ এখনো পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি কারো পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা পায়নি। পাঁচ সদস্যের পরিবার স্বপন দাশের। পরিবারে তিনি একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। তিনি বলেন, এখন আমার উপার্জন বন্ধ। কাজ না থাকায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। আমরা এখনো পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশন বা সরকারি বেসরকারি কারো পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা পাইনি। আমাদের এখানে ত্রাণ সহায়তা দিলে এমন দুর্দিনে পরিবার নিয়ে খেয়ে বাঁচতে পারবো।
এ ব্যাপারে ৫ নং মোহরা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আজম বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডের নি¤œ, নি¤œ মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। এটি করা হচ্ছে। এর মধ্যে অনেককে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে, জেলা প্রশাসন, পুলিশসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ প্রতিষ্ঠানসহ আমার নিজের পক্ষ থেকে এলাকার কর্ম বিহীন মানুষগুলোর মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছি। এখনো অনেক জায়গায় ত্রাণ দেয়া হয়নি, তবে অল্প সময়ের মধ্যে সবার মধ্যে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হবে। এছাড়া আমরা সরকারের পক্ষ থেকে এখনো যে পরিমাণ ত্রাণ পাচ্ছি তা এলাকার মানুষের তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। তিনি আরো বলেন, মোহরা ওয়ার্ডের আওতাধীন সকল কর্মহীন মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং দলমত নির্বিশেষে মোহরা ওয়ার্ডের স্থায়ী ও অস্থায়ী সকল মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

এমপি লতিফের কোয়ারেন্টিন সেন্টারে
পাঁচ যুবকের স্বেচ্ছায় অবস্থান
এম এ লতিফ এমপির ব্যক্তিগত উদ্যোগে তার নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রাম-১১ আসনের জনসাধারণকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ১০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০০ শয্যার পাঁচটি অস্থায়ী কোয়ারেন্টিন সেন্টার চালু করেন। কোন ব্যাক্তি জ্বর,কাশিও গলা ব্যাথা অনুভব করলে, তিনি তার পরিবার,আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদে রাখতে স্বেচ্ছায় এই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে অবস্থান করতে পারবেন। এমপির পক্ষ থেকে এ সকল সেলফ কোয়ারেন্টিন সেন্টারে স্বেচ্ছায় অবস্থানকারী এলাকাবাসী বিনামূল্যে থাকা, খাওয়া ও প্রাথমিক ওষুধ সুবিধা পাবেন। এম. এ. লতিফ এমপি’র সংসদীয় আসনের আওতাধীন পাঁচটি থানায় প্রতিষ্ঠিত ১০০ শয্যার স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিন সেন্টার গুলো হল, বাংলাদেশ রেলওয়ে কলোনী উচ্চ বিদ্যালয়ে বিদ্যালয় কোতয়ালী থানা, আগ্রাবাদ মহিলা কলেজ, ডবলমুরিং থানা, ব্যারিস্টার সুরতান আহমদ চৌধুরী কলেজ, ইপিজেড থানা, হালিশহর মেহের আফজল উচ্চ বিদ্যালয়, বন্দর থানাপতেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়,

পতেঙ্গা থানা। ইতিমধ্যে স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলো চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন হালিশহর মেহের আফজল উচ্চ বিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যগণ পতেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত কোয়ারেন্টাইন সেন্টার পরিদর্শন করে এর ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলোর মধ্যে পতেঙ্গা থানাধীন ৪০ নং ওয়ার্ডের পতেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ১৭ এপ্রিল স্থানীয় পাঁচ যুবক স্বেচ্ছায় এসে অবস্থান করছেন। তারা হলেন মো. শফিক, মো. সাদ্দাম, মো. মিন্টু ,জয়, মো.মাসুদ। তাদের বয়স ৩০-৩৫ এর মধ্যে। তারা প্রত্যেকে উত্তর পতেঙ্গা হোসেন আহম্মদপাড়া মাজার গল্লির বাসিন্দা। কিন্তু তাদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নেই। তারা বহির্নোঙ্গরে আমেরিকান পতাকাবাহী মাদারভেসেলে ওয়েল্ডিং ও মেকানিক্যাল কাজ করে ফিরে এসে নিজ নিজ পরিবারকে নিরাপদে রাখতে অত্র এলাকার অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইন সেন্টার পতেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের সমন্বয়কারী ৪০ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল বারেক এর সাথে যোগাযোগ করে স্বেচ্ছায় অবস্থান করতে শুরু করে। অবস্থানকারীরা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষার্থে এম.এ.লতিফ এমপি’র গৃহীত পদক্ষেপ এর জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। অবস্থানকারী এই ৫ জন এম.এ. ললিফ এম.পি’র পক্ষ থেকে বিনামূল্যে থাকা, খাওয়া ও প্রাথমিক ওষুধ সুবিধা পাচ্ছেন। -বিজ্ঞপ্তি

মারা গেছেন ‘টম এন্ড
জেরি’র পরিচালক

পূর্বকোণ ডেস্ক হ

অস্কারজয়ী ইলাস্ট্রেটর ও লিজেন্ডারি কার্টুন চরিত্র ‘টম এন্ড জেরি’র অন্যতম পরিচালক জিন ডেইচ মারা গেছেন। গত ১৬ এপ্রিল ৯৫ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর খবরটি গতকাল (১৮ এপ্রিল) টুইটারে জানিয়েছেন প্রকাশক পেট্র হিমেল। জিন ‘পপাই দ্য সেইলর’ নামের কার্টুন সিরিজেরও পরিচালক ছিলেন। অন্যদিকে ‘টম এন্ড জেরি’ সিরিজটিতে আটজন পরিচালক কাজ করেছেন। ১৯৬১-৬২ মৌসুমে জিন এতে যুক্ত ছিলেন। তার মৃত্যুর আগে বাকি সাত পরিচালকও মারা গেছেন। কর্মজীবনের প্রথম ভাগে জিন নর্থ আমেরিকান এভিয়েশনে নকশাকার হিসেবে কাজ করতেন। পাইলট হিসেবেও ট্রেনিংপ্রাপ্ত ছিলেন তিনি। মেডিক্যাল

পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে ১৯৪৪ সালে এ কাজে তাকে ইস্তফা দিতে হয়। এরপর তিনি যুক্ত হয়ে যান শিল্প দুনিয়ায়। ‘‘সিডনি’স ফ্যামিলি ট্রি’’ চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৫৮ সালে অস্কারের জন্য মনোনীত হন।
১৯৬০ সালে জিনের সিনেমা ‘মানরো’ সেরা এনিমেটেড শর্ট ফিল্ম ক্যাটাগরিতে অস্কার জিতে নেয়। ১৯৬৪ সালে একই ক্যাটাগরিতে ‘নাডনিক’ ও ‘হাউ টু এভয়েড ফ্রেন্ডশিপ’ ছবির জন্য অস্কারে মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি।
কর্মজীবনে এই এনিমেটর টেরিটুনস, আন্ডার ২০ সেঞ্চুরি ফক্সের শিল্প নির্দেশক হিসেবে কাজ করেছেন। এ সময়টাতে তিনি তৈরি করেন সিডনি এলিফ্যান্ট, গ্যাস্টন লে ক্রাইওন, ক্লিন্ট ক্লোবার এবং টেরেবল থম্পসনের মতো চরিত্র।

রোহিঙ্গাবোঝাই আরও দুই
ট্রলার বাংলাদেশের দিকে
ঠেলে দিচ্ছে মিয়ানমার

নিজস্ব সংবাদদাতা হ উখিয়া

কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূল থেকে উদ্ধার ৩৯৬ রোহিঙ্গাকে ১৪ দিনের সংঘনিরোধে পাঠানো হয়েছে। এসব রোহিঙ্গা উদ্ধারের ক’দিন যেতে না যেতেই আরও কয়েকশ রোহিঙ্গা বোঝাই দুটো ট্রলার বাংলাদেশ অভিমুখে ঠেলে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড এ দুটো ট্রলার করোনা মহামারীর কারণে তাদের সীমানায় ঢুকতে দেয়নি। মিয়ানমার নৌবাহিনী রোহিঙ্গাবোঝাই ট্রলার দুটো বাংলাদেশ জলসীমার

দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে জানা যায়। মানবাধিকার সংস্থা ফরটিফাই রাইটস শুক্রবার বলেছে, সমুদ্রে ভাসমান রোহিঙ্গা বহনকারী বোটগুলো অনুসন্ধান ও উদ্ধারের জন্য আঞ্চলিক সরকারগুলোর সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করতে মালয়েশিয়ার প্রতি আহ্বান জানান। প্রসঙ্গত গত ১৬ এপ্রিল ৩৯৬ রোহিঙ্গাকে টেকনাফ উপকূল থেকে উদ্ধার করেন বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সদস্যরা। প্রায় দুই মাস আগে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে করোনা মহামারীতে কয়েকদফা চেষ্টা করেও বোটটি মালয়েশিয়া বা থাইল্যান্ডে ঢুকতে পারেনি। মালয়েশিয়া বোটটিতে রসদপাতি দিয়ে গভীর সমুদ্রে ঠেলে দিয়েছিল। পরবর্তীতে বোটটিকে মিয়ানমার নৌবাহিনী তাদের সমুদ্রসীমা থেকে স্কট করে বাংলাদেশ সমুদ্রসীমায় ঠেলে দেয়।
রোহিঙ্গারা ফরটিফাই রাইটসকে বলেছে, কমপক্ষে আরও দুটি নৌকা বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যবর্তী সমুদ্রে ভেসে রয়েছে। ফরটিফাই রাইটসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথু স্মিথ বলেন, ‘শরণার্থীদের স্বল্প রসদপাতি দিয়ে নৌযানকে অনিশ্চিত সমুদ্র যাত্রায় ঠেলে দেয়া বেআইনি এবং মৃত্যুদ-ের মতো।’
মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ ১৬ এপ্রিল দুই শতাধিক রোহিঙ্গা থাকা আরেকটি নৌকা শনাক্ত করে এবং সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সমুদ্রের দিকে ফেরত পাঠিয়ে দেয় বলে সংগঠনটির দাবি।
রয়্যাল মালয়েশিয়ান এয়াার ফোর্স (আরএমএএফ) এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা এবং রয়্যাল মালয়েশিয়ান নৌবাহিনী নৌকাটিকে দেশের জলসীমায় প্রবেশে বাধা দিয়েছে এবং সমুদ্রে এ জাতীয় নজরদারি কার্যক্রম জোরদার করবে।
উখিয়ার ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, মার্চের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সমুদ্র উপকূল থেকে ৪/৫ বড় ফিশিং ও কার্গো ট্রলার ছেড়ে যায়। এতে হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা রওয়ানা দেয় মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে। তন্মধ্যে দুটো ট্রলার গত ২৭ মার্চ থাইল্যান্ডের মেরিনার্স বর্ডারে ঢুকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরদিন জাহাজ দুটো মালয়েশিয়া উপকূলে ভিড়তে চেষ্টা করে।
কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সেখানে কঠোরতা থাকায় কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী রোহিঙ্গা বোঝাই জাহাজ দুটো মালয়েশিয়া উপকূল ভিড়তে দেয়নি। অবশেষে দালালরা রহস্যজনক উপায়ে ২০২ জনের রোহিঙ্গা বহনকারী একটি বোটকে গত ৪ এপ্রিল মালয়েশিয়ার লঙ্কাউই দ্বীপ উপকূলে ভিড়াতে সক্ষম হয়েছে। অন্যটি গত বুধবার রাতে ৩৯৬ জন রোহিঙ্গা নিয়ে টেকনাফের শামলাপুর উপকূলে ভিড়ে।

৬ কোটি টাকার ইয়াবা উদ্ধার
টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে
মাদক কারবারি নিহত

নিজস্ব সংবাদদাতা হ টেকনাফ

টেকনাফ সীমান্তের শাহপরীরদ্বীপে বন্দুকযুদ্ধে এক মাদক কারবারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বিজিবির ২ জন সদস্য আহত হন। ঘটনাস্থল হতে ৬ কোটি টাকা মূল্যের ২ লাখ পিস ইয়াবা, অস্ত্র, বুলেট ও কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে। টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান পিএসসি অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘শাহপরীরদ্বীপ গোলারচর নাফনদী সীমান্ত এলাকা দিয়ে মাদকের একটি বড় চালান প্রবেশ করার গোপন সংবাদের

ভিত্তিতে শনিবার দিবাগত রাতে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের শাহপরীরদ্বীপ বিওপির বিশেষ টহল দল গোলার চরে টহলে যায়। কিছুক্ষণ পর ৩/৪ জন লোক বোঝাই একটি নৌকা নিয়ে ভিড়লে বিজিবি জওয়ানেরা চ্যালেঞ্জ করে। এসময় নৌকার আরোহীরা লাফ দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন বিজিবি জওয়ানেরা তাদের ধাওয়া করলে দুর্বৃত্ত মাদক কারবারিরা বিজিবিকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। এতে নায়েক আবুল হোসেন ও সিপাহী আতিক হোসেন আহত হন। তখন বিজিবি জওয়ানেরা আতœরক্ষার্থে পাল্টা গুলিবর্ষণ করার পর হামলাকারীরা অন্ধকারে পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল তল্লাশি করে ৬ কোটি টাকা মূল্যের ২ লক্ষ ইয়াবার একটি বস্তা, ১টি দেশীয় অস্ত্র, ১টি ধারালো কিরিচ ও ১ রাউন্ড খালি খোসা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহত ব্যক্তি নিজেকে সাবরাং নয়াপাড়ার জেবর মুল্লুকের পুত্র জাফর আলম (৩০) বলে পরিচয় দেন। টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাফর আলম মারা যায়। মৃতদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে’।

টিসিবির সয়াবিন তেল
মুদি দোকানে বিক্রি!

পূর্বকোণ ডেস্ক হ

সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বোতলজাত সয়াবিন তেল মুদি দোকানে বিক্রির দায়ে হাটহাজারীতে এক মুদি দোকানিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। রবিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মুহুরী হাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিসমিল্লাহ স্টোর নামে একটি মুদি দোকান থেকে ৭০ লিটার টিসিবির সয়াবিন তেল জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে নেতৃত্ব দেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন।-বাংলানিউজ

ইউএনও মো. রুহুল আমিন জানান, আলমগীর নামে ওই মুদি দোকানি সয়াবিন তেলের বোতল থেকে টিসিবির স্টিকার মুছে অন্য কোম্পানির সয়াবিন তেলের সঙ্গে বিক্রি করছিলেন। কয়েকটি বোতলে আমরা টিসিবির স্টিকার লাগানোও পেয়েছি। তিনি বলনে, ওই মুদি দোকান থেকে ৭০ লিটার টিসিবি বোতলজাত সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়েছে। টিসিবির পণ্য মুদি দোকানে বিক্রির দায়ে দোকানি আলমগীরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

হতদরিদ্রদের ত্রাণ দেয়ায়
পূর্বষোলশহরে হামলার
শিকার ৭ ব্যক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক হ

নগরীর ৬ নং পূর্বষোলশহর ওয়ার্ডের জিবনমিস্ত্রি পাড়া এলাকায় হতদরিদ্র ভাড়াটিয়াদের ত্রাণ দেয়ায় হামলার শিকার হয়েছেন ৭ জন। এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন হামলার শিকার সমাজসেবক আবুল কালাম আজাদ। গত দুইদিন ধরে চলা এই ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পূর্বষোলশহর খাজা রোড বাদামতল জিবন মিস্ত্রি বাড়ির মো. আবুল কালাম আজাদ চান্দগাঁও থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগে তিনি বলেন, এলাকার দলীয় কর্মী নিয়ে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ১৮ প্যাকেট ত্রান সামগ্রী এলাকার অসহায় ভাড়াটিয়াদের মধ্যে বিতরণ করেন। কিন্ত ১১ জন চিহ্নিত এবং অন্তত ১৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে হামলা করতে আসে। ত্রাণ তাদের না দিয়ে ভাড়াটিয়াদের দেয়ার কারণ জানতে চায়। দলীয় নেতাদের নির্দেশে ত্রাণ বিতরণের কথা জানালে তারা হুমকি দিয়ে চলে যায়। বিষয়টি তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কাউন্সিলরকে অবহিত করেছেন বলে উল্লেখ করে বলেন, পরদিন শনিবার রাত ৮টার দিকে তিনি এবং তার ভাই দিদারকে রাস্তায় পেয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে সন্ত্রাসীরা। আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদের রক্ষা করেন। এসময় আরো হামলার শিকার হন মো. দিদার আলম, আইনুল কামাল রাহী, মনির হোসেন মানিক, রিয়াদ হোসেন, শাহরিয়ার আলম।
এই ঘটনায় যে ১১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে তারা হলেন, তাজুল ইসলাম, এমদাদ হোসেন, আবিদ আহম্মেদ অভি, মো. তারেক, নুরুন নবী ফাহিম, সায়েম উদ্দিন টিটু, তানবির জিহান, মো. জনি, মো. গানি, মো. আবরার এবং মো. শাহাজান। তারা সবাই জিবন মিস্ত্রিপাড়ার বাসিন্দা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় কাউন্সিলর এম আশরাফুল আলম পূর্বকোণকে বলেন, স্থানীয়দের অনেকেই প্রতিবেশীর কাছ থেকে পেয়েছে। কিছু কিছু সরকারি বরাদ্দও পেয়েছে। সরকারি বরাদ্দ যখন যা পাচ্ছি তা স্বচ্ছভাবে বন্টন করা হচ্ছে। এখানে দলীয় নেতাকর্মীদের সহায়তা নেয়া হচ্ছে। যারা সবচেয়ে বেশি অসহায় তাদেরকে আগে দেয়া হচ্ছে। জিবন মিস্ত্রি পাড়ার ওইসব নিন্ম আয়ের ভাড়াটিয়ারা একবারও পায়নি। স্থানীয়ভাবেও কেউ তাদেরকে সহযোগিতা করেনি। তাই তাদেরকে দিতে বলেছি। তাও মাত্র ১৮ জন ভাড়াটিয়াকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার দিতে পেরেছি। সেখানে সহায়তা পাওয়া উচিত এমন আরো অনেক ভাড়াটিয়া রয়েছেন। কারো যদি এবিষয়ে আপত্তি থাকে তাহলে তারা আমাকে (কাউন্সিলর) জানাতে পারতেন। পুলিশকে জানাতে পারতেন। সিটি মেয়রকে জানাতে পারতেন। একজন ব্যক্তি যাকে বন্টন করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছি তার ওপর হামলা চালানোর ঘটনা দুঃখজনক।
এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত এমদাদ হোসেন পূর্বকোণকে বলেন, এটি একটি ভুল বুঝাবুঝি। মারামারির সময় তিনি ছিলেন না। খবর পেয়ে তিনি সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। তবে তিনি কাউকে মারতে দেখেননি। তিনিও কারো উপর হামলা চালাননি। যে ঘটনা ঘটেছে তা সামাজিকভাবে মীমাংসা করা হবে।

রাতের বৃষ্টিতে
শীতল নগরী

নিজস্ব প্রতিবেদক হ

হঠাৎ রাতের বৃষ্টিতে শীতল হলো নগরী। গত কয়েকদিনের গরমে এবং পর পর লোডশেডিং চলায় শনিবার রাত ১১টা থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে স্বস্তি পেল নগরবাসী। আবহাওয়া অফিস জানায় শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে গতকাল রবিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নগরীতে ২৭ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। কোথায় কোথাও বজ্রসহ বৃষ্টি হয়েছে। বৈশাখের শুরুতে এই পরিমাণ বৃষ্টিতে

ভিজলো পুরো নগরী। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে মানুষ সন্ধ্যার পর বাহিরে থাকছে না। যার কারণে রাতের এই বৃষ্টির ফলে জমা পানিতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি নগরবাসীকে। যেটুকু পানি জমেছে তাও রাতের মধ্যেই নেমে গেছে।
এদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে দেশের কোথাও কোথাও শিলা বৃষ্টি হতে পারে। গতকাল সকাল ৬টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায়, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, রংপুর ও এবং ঢাকা, বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সন্দ্বীপে ১২৫ মিলিমিটার। এ ছাড়া চাঁদপুরে ১০৩ ও সিলেটে ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অর্থাৎ ৩ দিন দেশে বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া চিত্রের সংক্ষিপ্তসারে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

চট্টগ্রামে প্রস্তুত হচ্ছে
‘হলি ক্রিসেন্ট’
ফিল্ড হাসপাতাল
চট্টগ্রামে প্রস্তুুত হচ্ছে হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল ও নাভানা ফিল্ড হাসপাতাল। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ভেন্টিলেটরসহ ২০ বেডের আইসিইউ ইউনিট এবং একশত শয্যা বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ নিচ্ছে হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল। নগরীর সিটি গেট এলাকায় হচ্ছে ৬ হাজার ৮’শ বর্গফুটের নাভানা ফিল্ড হাসপাতাল। ৬০ শয্যার এই হাসপাতালে থাকছে ১০ টি ভেন্টিলেটর সংযুক্ত আইসিইউ।-বাসস
গতকাল বিকেলে হাসপাতাল দুটির অগ্রগতি দেখতে যান সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে বন্ধ থাকা অভিজাত হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালকে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নতুনভাবে চালু করার উদ্যোগ নেন চট্টগ্রাম প্রাইভেট ক্লিনিক ওনার্স এসোসিয়েশন। এটি তৈরিতে সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, কাজের অগ্রগতির ধারায় আগামী দু-চারদিনের মধ্যেই এই বেসরকারি হাসপাতালটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা যাবে। এটি চালু হলে চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবায় একটি নতুন মাত্রা যুক্ত হবে। তিনি এই হাসপাতালের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রাইভেট ক্লিনিক ওনার্স এসোসিয়েশন ছাড়াও বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিভিল সার্জন, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ওয়াসা, টিএন্ডটিসহ সকল সরকারি ও আধা সরকারি সেবা সংস্থা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা ও প্রণোদনা প্রদানের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান।
একই সময়ে নগরীর আকবর শাহ থানাধীন সলিমপুর পাকা রাস্তার মাথা এলাকায় নির্মাণাধীন নাভানা গ্রুপের ৬ হাজার ৮শত বর্গফুটের ফিল্ড হাসপাতাল পরিদর্শনে যান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে নাভানা অটোমোবাইলস কর্তৃক প্রদত্ত জায়গায় এই হাসপাতাল হচ্ছে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়ার উদ্যোগে।
নগরীর সিটি গেট এলাকায় ৬০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে ১০টি ভেন্টিলেটর সংযুক্ত আইসিইউ, ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক, ১০ জন ডাক্তার ও ৫ জন নার্স সার্বক্ষণিক সেবা প্রদান করবেন বলে মেয়রকে অবহিত করেন ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া।
এসময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসআই) চট্টগ্রামের উপ পরিচালক শরীফুল হাসান, একুশে পত্রিকার সম্পাদক আজাদ তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র সাড়ে ৬ হাজার বর্গফুট আয়তনে ৬০ শয্যার এই বিশেষায়িত হাসপাতালের শেষপর্যায়ের নির্মাণ কাজ, বিশেষায়িত লিফটব্যবস্থা (এম্বুলেন্স উপরে তোলা যায়) চিকিৎসক-নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার ঘর, রিসেপশন, স্যানিটেশন ব্যবস্থা, রান্নার স্থান, অফিসকক্ষসহ সার্বিক প্রস্তুতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। মেয়র বলেন, শুরু থেকেই মানসিকভাবে এই হাসপাতালের সাথে আমি জড়িত। উদ্যোক্তা ডা. বিদ্যুত বড়ুয়ার সাথে এ নিয়ে আমার একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। আমি সংশয়ে ছিলাম এই কারণে যে, লজিস্টিক এলো, হাসপাতাল হলো, কিন্তু চিকিৎসক-নার্স, স্বেচ্ছাসেবক পাওয়া গেলো না। তখন তো সবই বৃথা। আজকে এসে শুনলাম ইতোমধ্যে ডাক্তার-নার্স, স্বেচ্ছাসেবক মিলে ৬৫ জন এই হাসপতালের স্বেচ্ছাশ্রমে যুক্ত হয়ে মানবিক যোদ্ধার খাতায় নিজেদের নাম লিখিয়েছে। এটি একটি বিশাল মানবিক ঘটনা। কোনো মহৎ উদ্দেশ্য বৃথা যায় না, মূলত সেটিই প্রমাণিত হলো বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে।
প্রসঙ্গত, নগরীর আকবর শাহ থ্নাাধীন সলিমপুর পাকা রাস্তার মাথা এলাকায় নাভানা গ্রুপের অবকাঠামোতে ৬০ শয্যার নির্মিত এই অস্থায়ী হাসপাতালটির সেবা কার্যক্রম কাল মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট উপসর্গের বিশেষায়িত এই হাসপাতালে এধরনের রোগীদের পরম মমতা ও যতœআত্তিতে সেবা দেয়া হবে বলে জানান উদ্যোক্তা জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া ।

পণ্য রপ্তানিতেও বড় ধস
ষ বিদেশি ক্রেতাদের বেশিরভাগ অর্ডার বাতিল
ষ বেশ কিছু গার্মেন্টসে এখন তৈরি হচ্ছে পিপিই
ষ পোশাক রপ্তানি নামতে পারে শূন্যের কোঠায়
নভেল করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে বিদেশি ক্রেতারা বেশিরভাগ অর্ডার বাতিল করেছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বেশ কিছু গার্মেন্টসে এখন বানানো হচ্ছে পিপিই (পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট)। নভেল করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে বিদেশি ক্রেতারা বেশিরভাগ অর্ডার বাতিল করেছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বেশ কিছু গার্মেন্টসে এখন বানানো হচ্ছে পিপিই (পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট)। করোনাভাইরাস মহামারীর অভিঘাতে রেমিটেন্সের মতো বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যেও বড় ধস নেমেছে।-বিডিনিউজ
সর্বশেষ মার্চ মাসে ২৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ, যা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ কম। আর চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের নয় মাসের (জুলাই-মার্চ) হিসাবে রপ্তানি আয় কমেছে ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ। রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, “পরিস্থিতি খুবই খারাপ। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রপ্তানি

আয়ে কোভিড-১৯ এর তেমন প্রভাব পড়েনি। মার্চ থেকে পড়তে শুরু করেছে। মার্চের প্রথম দিকে কিছু রপ্তানি হলেও শেষের দিকে একেবারেই কমে এসেছে। এপ্রিলে তো বড় ধস নেমেছে।” তিনি জানান, মার্চ মাসে ১৯৭ কোটি ২২ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের মার্চের চেয়ে ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ কম। আর চলতি এপ্রিল মাসের ১৫ দিনে (১ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল) মাত্র ১৯ কোটি ৪০ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮৪ শতাংশ কম। “যত দিন যাচ্ছে, অবস্থা ততোই খারাপ হচ্ছে। কবে যে পরিস্থিতি ভালো হবে, কোথায় গিয়ে যে শেষ হবে, কিছুই বুঝতে পারছি না। পোশাক রপ্তানি শূন্যের কোঠাতেও নেমে আসতে পারে।”
অর্থনীতির গবেষক ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, “কোভিড ১৯ গোটা বিশ্বকে তছনছ করে দিচ্ছে। মৃত্যুভয়ে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছে পৃথিবীটা। মহামারী থেকে জান বাঁচাতে বিশ্ববাসী যে অবরুদ্ধ অবস্থা তৈরি করেছে, তাতে ওষ্ঠাগত অর্থনীতির প্রাণ, যা পৃথিবীকে ঠেলে দিচ্ছে আরেকটি মহামন্দার দিকে।” এ অবস্থায় যে রপ্তানি বাণিজ্যে বড় ধস আসবে, তা ‘অবধারিত ছিল’ বলেই মনে করেন আহসান মনসুর। তার ধারণা, সামনে আরও খারাপ সময় আসছে।
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই রপ্তানি আয়ে কমতির ধারা ছিল। অর্থ বছরের আট মাস শেষে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ কমে যায়। করোনাভাইরাস মহামারীর বিস্তার বাড়ায় এখন তা আরও কমছে।
রপ্তানি উন্নয়ন বুরো (ইপিবি) গতকাল রবিবার রপ্তানি আয়র যে হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ২ হাজার ৮৯৭ কোটি ৩৮ লাখ (২৮.৯৭ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে।
এই নয় মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৩৮৯ কোটি ৪০ লাখ (৩৩.৮৯ বিলিয়ন) ডলার। গত বছরের জুলাই-মার্চ সময়ে আয় হয়েছিল ৩ হাজার ৯০ কোটি ৩০ লাখ (৩০.৯০ বিলিয়ন) ডলার। এ হিসাবে মার্চে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৮ দশমিক ৬১ শতাংশ কম আয় হয়েছে। আর জুলাই-মার্চ সময়ে হয়েছে ১৪ দশমিক ৫২ শতাংশ কম।
দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। জুলাই-মার্চ পর্যন্ত সময়ে এ খাতে আয় হয়েছে ২ হাজার ৪১০ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। এই অংক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ দশমিক ১২ শতাংশ কম। এই নয় মাসে লক্ষ্যের চেয়ে আয় কমেছে ১৫ দশমিক ২৯ শতাংশ। চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তি শনাক্ত হন গত ডিসেম্বরের শেষে। এরপর বিভিন্ন দেশে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।
বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে শুরুতেই বিপাকে পড়ে চামড়া, কাঁকড়া ও কুঁচে রপ্তানির মত খাত, যারা চীনের বাজারের ওপর বেশি নির্ভরশীল ছিল।
জুলাই-মার্চ সময়ে চামড়া খাতে রপ্তানি কমেছে ১০ দশমিক ৭৮ শতাংশ, হিমায়িত মাছ রপ্তানি কমেছে ৪ শতাংশ। তবে এই সংকটের মধ্যেও পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক ধারা ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। এই নয় মাসে এ খাতের রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ।
কৃষি পণ্যের মধ্যে শাক-সবজি রপ্তানি বেড়েছে ৭৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। চা রপ্তানি বেড়েছে ১৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। তামাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। ওষুধ রপ্তানি বেড়েছে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।
গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৪ হাজার ৫৩৫ কোটি ৮২ লাখ (৪০.৫৩ বিলিয়ন) ডলার আয় করে। তাতে প্রবৃদ্ধি হয় ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছিল ৪ শতাংশ। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানির মোট লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫৫০ কোটি (৪৫.৫০ বিলিয়ন) ডলার।
অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে আশার আলো জাগিয়ে রেখেছিল যে রেমিটেন্স, করোনাভাইরাস মহামারী তাতেও ছায়া ফেলেছে।
মার্চ মাসে রেমিটেন্স কমেছে গত বছরর একই সময়ের তুলনায় ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আর চলতি এপ্রিল মাসের অবস্থা আরও খারাপ। এখন পর্যন্ত এপ্রিল মাসের প্রথম আট দিনের তথ্য পাওয়া গেছে। এই আট দিনে মাত্র ২০ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত বছরের এই আট দিনে পাঠিয়েছিলেন দ্বিগুণেরও বেশি; ৪৩ কোটি ডলার।

পটিয়ায় ইউএনও কার্যালয়ে হুইপের
ভাইয়ের জন্মদিন পালন !
পূর্বকোণ ডেস্ক হ

করোনা পরিস্থিতিতে ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে যে সময় মানুষজনকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হচ্ছে, সে সময় চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ঘটা করে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছোট ভাই মুজিবুল হক চৌধুরী নবাবের জন্মদিন উদযাপিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এভাবে জন্মদিন পালনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকে।
জানা যায়, চলতি মাসের ২ তারিখ মুজিবুল হক চৌধুরী নবাবের জন্মদিন উপলক্ষে ইউএনওর কক্ষে ওই আয়োজন হয়। ১৫ এপ্রিল সেই জন্মদিন পালনের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ঘটনাটি সবার নজরে আসে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা জানাতে থাকে মানুষ। প্রকাশিত একটি ছবিতে মুজিবুল হক চৌধুরী নবাবকে কেক খাওয়াতে দেখা যায় উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সদস্য শাহানা আকতার টিয়াকেও। আয়োজনে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, মূল আয়োজনে কেক কেটেছেন ইউএনও ফারজানা জাহান উপমা। পটিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের নেতা জয়নাল,

নবাবের শ্যালক আবদুল আজিজ, পটিয়া উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হাসান উল্লা চৌধুরী, ছাত্রলীগ নেতা আজিজুল হক জীবন প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। -বাংলানিউজ
এদিকে পটিয়ায় এরই মধ্যে ২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এতে আক্রান্ত হয়ে গেছে মারা গেছে ৬ বছরের এক শিশু। অচলাবস্থার মধ্যে ত্রাণ না পেয়ে অনেক জায়গায় মানুষজন বিক্ষোভও করছে।

চীন থেকে এলো করোনার
কিট ও চিকিৎসাসামগ্রী

চীন থেকে করোনা ভাইরাস শনাক্তকারী কিট, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) ও চিকিৎসা সহায়ক সামগ্রী নিয়ে দেশে পৌঁছেছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি উড়োজাহাজ। গতকাল রবিবার দুপুরে বিমানবাহিনীর সি-১৩০ জে প্লেনে এসব চিকিৎসাসামগ্রী দেশে আনা হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পাঠানো প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।-বাংলানিউজ
এতে বলা হয়, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে সরকারের

নির্দেশনা অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ চীন থেকে এসব চিকিৎসাসামগ্রী নিয়ে আসে। সামগ্রীগুলোর মধ্যে রয়েছে- করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণ কিট, ১২ লাখ ২২ হাজার সার্জিক্যাল মাস্ক, ৭ হাজার ৫০০টি এন-৯৫ মাস্ক, ১৩০টি ইলেকট্রিক থার্মোমিটার, ২ হাজার প্রটেক্টিভ গ্লাভস, ১০ হাজার ২০০টি মেডিক্যাল সেফটি গ্লাস, ২০০টি গগলস এবং ১০ হাজার ৪৫৯টি পিপিইসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সহায়ক সামগ্রী।
এছাড়া একই প্লেনে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের উদ্যোগে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় নিয়োজিত বিভিন্ন সংস্থাগুলোকে দেওয়ার জন্য আরও কিছু স্বাস্থ্যসেবা সহায়ক সামগ্রী চীন থেকে দেশে আনা হয়।
চীন থেকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা সহায়ক সামগ্রী আনতে শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) বিমান বাহিনীর ১৬ জন এয়ার ক্রু চীনের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক শাহ আমানত বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এয়ার কমডোর মো. জাহিদুর রহমান, জিডি (পি) দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ঈদের আগে খালেদা জিয়ার
দেখা পাবেন না নেতাকর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

গত ৯ এপ্রিল হোম কোয়ারেন্টিন শেষ হয়েছে রাজধানীর গুলশানের ফিরোজায় থাকা বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে তার সঙ্গে পরিবারের দু’একজন সদস্য ছাড়া আর কেউ দেখা করার সুযোগ পাচ্ছেন না। দলের নেতাকর্মীদের দেখা করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আগের মতই। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে হয়তো বা ঈদে সীমিত পরিসরে দলের নেতাকর্মীদের সাক্ষাৎ দিতে পারেন তিনি। তবে বর্তমানে তার সঙ্গে

সাক্ষাতের পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে স্বজনদের ওপরে। অসুস্থতার বিষয়ে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম এবং নার্স। তারাই দেখভাল করছেন তার। গতকাল রবিবার পারিবারিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বর্তমানে তিনি নামাজ আদায়, পত্র-পত্রিকা ও টেলিভিশনে সংবাদ দেখে সময় কাটাচ্ছেন।
বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তার ব্যক্তিগত একজন চিকিৎসক বলেন, ম্যাডাম অসুস্থ। তার চিকিৎসা জরুরি। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি এমন যে, এখন এটি সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, পুত্রবধূ জোবাইদা রহমানের তত্ত্বাবধানে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে চিকিৎসা চলছে। যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিল সমস্যায় ভুগছেন তিনি। ভালো হতে সময় লাগবে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার জানান, ম্যাডাম আগের মতই আছেন। বাসভবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রায় ২৪দিন আগে করা আবেদনে পুলিশের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

নামাজে জানাজায় লাখো মুসল্লি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৮ গ্রামের
মানুষকে ঘরবন্দী, প্রত্যাহার
এএসপি-ওসিসহ তিনজন

নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা লকডাউন ঘোষণার পরও সরাইলে খেলাফত মজলিশের নায়েবে আমীর মাওলানা যুবায়ের আহমদ আনসারীর নামাজে জানাজায় লাখো মানুষের সমাগমের ঘটনায় ওই এলাকার আট গ্রামের মানুষকে ঘরবন্দী করা হয়েছে। গতকাল রবিবার প্রশাসন এসব গ্রামের লোকজনকে বাইরে বের হতে নিষেধাজ্ঞা জারি

করেছে। গ্রামের বিভিন্ন স্থানে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে সতর্কতামূলক লাল পতাকা। স্থানীয়রা এ ঘটনার জন্য প্রশাসনের গাফিলতিকে দায়ী করছেন। অবরুদ্ধ করা গ্রামগুলো হলো জেলা সদর উপজেলার মালিহাতা, সরাইলের বেড়তলা, সিতাহরণ ও বড়ইছড়া এবং আশুগঞ্জের শান্তিনগর, বগইর, খরিয়ালা ও মৈশার। নামাজে জানাজায় বিপুল জনসমাগম ঠেকাতে প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণে অনেকেই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
এদিকে এ ঘটনা গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হওয়ার পর নড়চড়ে বসে প্রশাসন। ব্যর্থতার দায়ে শনিবার (১৮ এপ্রিল) রাতেই সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহদাৎ হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়। গতকাল রবিবার সকালে প্রত্যাহার করা হয় সরাইল থানার ওসি (তদন্ত) নূরুল হক এবং সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মাসুদ রানাকে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের কথা জানিয়ে বলেন, জানাজায় জনসমাগমের ঘটনা তদন্ত করতে চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইকবাল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পঙ্কজ কুমার ও আমি (ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন)। কমিটিকে আগামী ২২ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
করোনার ভেতর সব ধরনের ধর্মীয়, সামাজিক অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বাধ্যবাধকতা থাকলেও মাওলানা যুবায়ের আহম্মদ আনসারীর নামাজে জানাজা আয়োজনের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ এলাকায় মাইকিং করে জানিয়ে দেয় তার অনুসারীরা। স্থানীয় প্রশাসন এ ঘটনায় বাধা না দেওয়ায় বিভিন্ন যানবাহনে করে লাখো জনতা জড়ো হয় জানাজায়। এতে বেড়েছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। আতঙ্কে আছেন আশপাশের গ্রামের মানুষরাও।
উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে লকডাউন উপেক্ষা করে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই লাখো মানুষ জমায়েত হয়েছিল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা জোবায়ের আহমদ আনসারীর নামাজে জানাজায়। শনিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে জামিয়া রাহমানিয়া বেড়তলা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকে পিকআপ ভ্যানসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে করে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলা এবং আশপাশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেড়তলা মাদ্রাসায় এসে জানাজায় অংশ নেন লাখো মানুষ। তবে সেখানে কিছু পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা ছিলেন এক রকম নীরব দর্শক।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ
অন্তত ১১ কোটি মানুষে !

পূর্বকোণ ডেস্ক হ

বিশ্বে এখন পর্যন্ত নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ২৩ লাখ অতিক্রম করেছে বলে জানা গেছে; তবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের কথা ঠিক হলে এই সংখ্যাটি কম করে হলেও ১১ কোটি ৫০ লাখ। এ সংখ্যাটি এত বেশি কীভাবে? উত্তরে তারা বলছেন, অনেকের দেহে ভাইরাস সংক্রমিত হলেও তার কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায়নি, অর্থাৎ তিনি অসুস্থ হননি। ফলে তার হাসপাতালে যাওয়ারও প্রয়োজন পড়েনি, পরীক্ষা না করায় রোগীর হিসাবের মধ্যেও তিনি আসেননি। নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের মোট সংখ্যা শনাক্ত রোগীর সংখ্যার চেয়ে বেশি বলে বিশেষজ্ঞরা বলে এলেও তা যে এত বেশি হতে পারে, তা জানা গেল

যুক্তরাজ্যের দৈনিক গার্ডিয়ান এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায়। গার্ডিয়ান জানিয়েছে, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের এই গবেষণাপত্র শুক্রবার প্রকাশিত হলেও তা এখনও বিশেষজ্ঞদের দ্বারা মূল্যায়িত হয়নি।
ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারা কাউন্টির ৩ হাজার ৩৩০ জন ব্যক্তির উপর পরীক্ষা চালিয়ে এই গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা জানা সংখ্যার চেয়ে ৫০ থেকে ৮৫ গুণ বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের করোনাভাইরাসের প্রথম প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় ক্যালিফোর্নিয়াতেই, এখন অবশ্য নিউ ইয়র্কসহ পূর্বাঞ্চলই বেশি বিপর্যস্ত। ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৩০ হাজারের মতো; এর মধ্যে সান্তা ক্লারায় সরকারি হিসাবে আক্রান্ত ১ হাজার ৮৭০ জন, তার মধ্যে ৭৩ জন মারা গেছেন। তবে গবেষণাটি যখন চালানো হয়, তখন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজারের মতো, আর মারা গিয়েছিলেন ৫০ জন।
স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের দাবি, সান্তা ক্লারায় আসলে ৪৮ হাজার থেকে ৮১ হাজার মানুষের দেহে নতুন এই করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছে, যা শনাক্ত সংখ্যার চেয়ে বহু গুণ বেশি। তাহলে তারা অসুস্থ নন কেন? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মানবদেহের প্রাকৃতিক সুরক্ষা ব্যবস্থা এন্টিবডির কথা বলছেন এই গবেষকরা, যা পরীক্ষা করেই তারা বিপুল সংখ্যকের আক্রান্ত হওয়ার দাবি করছেন। যেকোনো রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা মানুষের দেহে সব সময়ই কার্যকর থাকে।
মানুষের দেহে যখন বাইরে থেকে অচেনা কিছু প্রবেশ করে, শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা যদি তাকে ক্ষতিকর সন্দেহ করে, তখন তা ঠেকাতে এন্টিবডি তৈরি করে। সেই এন্টিবডি তখন নির্দিষ্ট ওই জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকে। এই লড়াইয়ে জীবাণু জিতলে মানুষ অসুস্থ হয়।
এই এন্টিবডি তৈরি হয় বলেই প্রতিনিয়ত নানা রোগ-জীবাণুর মধ্যে থেকেও মানুষ অসুস্থ না হয়ে সচল থাকে। তবে যার প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হয়, তিনি অসুস্থ হন।
স্ট্যানফোর্ডের এই গবেষক দল সান্তা ক্লারার বাসিন্দাদের মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী এন্টিবডির উপস্থিতি পরীক্ষা করে রোগীর সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি বক্তির মধ্যে তা দেখতে পেয়েছেন। অর্থাৎ কোনো না কোনো পর্যায়ে তাদের দেহেও ভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছিল, কিন্তু সুবিধা করে উঠতে পারেনি বলে তাদের হাসপাতালে যেতে হয়নি। এর ভিত্তিতে তারা বলছেন, নতুন করোনাভাইরাস (সার্স সিওভি-২) সার্স কিংবা মার্সের চেয়ে ভয়ানক অবস্থা তৈরি করলেও যে মাত্রায় ভয়ঙ্কর বলা হচ্ছে, আসলে ততটা না। যেমন এখন শনাক্ত আক্রান্তের সংখ্যার সঙ্গে তুলনা করে যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের হার ৪ দশমিক ১ শতাংশ বলা হলেও অশনাক্ত ব্যক্তিদের হিসেবে ধরলে মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ১২ থেকে শূন্য দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসবে।
শুধু জেলার মতো একটি এলাকায় এই গবেষণা চালিয়ে এলেও বড় এলাকাজুড়ে একই গবেষণা চালালে একই ফল আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ ইতোমধ্যে ১০ হাজার মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের এন্টিবডির উপস্থিতি পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে। তবে নতুন এই করোনাভাইরাসের বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের উপর প্রভাবের পার্থক্যও গবেষকদের কৌতূহলের বিষয়।
স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির মেডিসিনের সহযোগী অএপক এরন বেনডেভিড গার্ডিয়ানকে বলেছেন, “আমরা মহামারীর কোন পর্যায়ে আছি, তা বুঝতে এই গবেষণাটি একটি পথ দেখাবে।”
ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এখন যে অবরুদ্ধ অবস্থা চলছে যুক্তরাষ্ট্রে, তা তোলার যে দাবি উঠছে দেশটিতে, এ্ই গবেষণা তার পালে হাওয়া দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে গবেষকরা বলছেন, তা এখনই নয়, অন্তত এ নিয়ে আরও গবেষণার আগে নয়। একই সতর্কতার সুর যুক্তরাজ্যের সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ আর্থার রেইনগোল্ডেরও। তিনি বলেন, “কেউ যদি ভাবে এটা লকডাউন ভেঙে এখনই কাজে নেমে পড়ার ছাড়পত্র, তবে দুটো জায়গায় তা আটকে যাবে। “এক আমরা এখনও জানি না যে এই এন্টবডি মানুষকে সুরক্ষা দেবে কি না? দুই, এখনও এন্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে খুব অল্প মানুষের মধ্যে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট