ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে ঘরের দেয়াল চাপা পড়ে কক্সবাজার শহরে একজন নিহত হয়েছেন। এতে ঝড়ের তাণ্ডবে তার বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপড়ে গেছে অনেক গাছ।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে পাহাড়তলী সমাজ কমিটির নেতা মো. টিপু বলেন, ঘরের দেয়াল চাপা পড়ে তার এলাকা শহরের পূর্ব পাহাড়তলীর বাসিন্দা মৃত খুইল্লা মিয়ার ছেলে বর্তমান দক্ষিণ পাহাড়তলী জিয়া নগরের বাসিন্দা মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আব্দুল খালেক (৪০) মারা গেছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত শহরে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে ঝড়ো- হাওয়া। এতে শত শত গাছ ভেঙে মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ সময় অনেকের ঘরের দেয়ালও ভেঙে যায়। তার মধ্যে খালেক ঘরের দেয়াল চাপা পড়ে সাড়ে ৮টার দিকে মারা যায়। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় হামুনে সৃষ্ট ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে জেলায় কাঁচা ঘরবাড়ি এবং গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কক্সবাজার শহরের সমিতিপাড়া, কুতুবদিয়া পাড়াসহ জেলার উপকূলীয় এলাকায় ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।’ আগামীকাল হামুনের আঘাতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ ইমাম উদ্দিন জানিয়েছেন ঘূর্ণিঝড় হামুন মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। সাগরে গতিপথ পরিবর্তন করে এটি কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র উপকূলের দিকে ধাবিত হয়। পরে কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৬ নম্বরের পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদসংকেত জারি করে আবহাওয়া অফিস। ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রবৃষ্টি হয়।
তিনি আরও জানান, রাত ১০টার পর থেকে হামুন কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করে দুর্বল হয়ে যাবে। তবে এর প্রভাবে কক্সবাজার উপকূলে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় কক্সবাজারে ব্যপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাস জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সৈকতে বিপৎসংকেতের অংশ হিসেবে পর্যটকদের সতর্কতায় মাইকিং করা হযেছে। এ ছাড়া সৈকতে দায়িত্বরত লাইফগার্ড কর্মীরা পর্যটকদের নিরাপদে থাকতে মাইকিং করছেন। কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকার ৩০ হাজার মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। উপকূলের নৌযান এবং মাছ ধরার নৌকাগুলোকে উপকূলের নিরাপদ স্থানে থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাগরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় লোকজনদের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ও নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে ইতোমধ্যে মাইকিং করা হচ্ছে।
পূর্বকোণ/আরাফাত/জেইউ/পারভেজ