মহেশখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কক্সবাজারের মহেশখালীতে মুরগির ঘরের জন্য ২০ হাজার করে ৩৯ ঘরের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ২০ হাজার করে ওই ৩৯ ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব নম্বরে টাকা দেওয়া হলেও প্রকল্পের কাজের অজুহাতে প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে খালি চেকে স্বাক্ষর নিয়ে ‘প্রকল্পের টাকা চুরি’র অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তারা নিজেদের ‘উদ্যোগে’ তৈরি করছেন প্রকল্পাধীন মুরগির ঘরগুলো।
জানা গেছে, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) অধীনে উপজেলার ছোট মহেশখালীতে ৩৯ জন বাছাইকৃত সদস্য নিয়ে প্রডিউসার গ্রুপ (পিজি) গঠন করা হয়। সেই গ্রুপের প্রত্যেক সদস্যের জন্য মুরগির ঘর নির্মাণ বাবদ ২০ হাজার টাকা করে মোট ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী, বরাদ্দকৃত ২০ হাজার টাকা সদস্যদের নিজ নামের ব্যাংক হিসেব নম্বরে জমা হয় এবং প্রকল্পেরকর্মকর্তারা সদস্যদের কাছ থেকে নির্ধারিত শর্ত সম্বলিত ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্টাম্পে চুক্তি করে। বরাদ্দকৃত ২০ হাজার টাকার সম্পূর্ণ অর্থই ঘর নির্মাণে ব্যয় করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
পিজি সদস্যরা জানান উল্টো তথ্য, প্রকল্পের কাজে প্রয়োজন, এমন অজুহাতে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তারা প্রত্যেক সদস্য থেকে স্বাক্ষর করা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও খালি চেক সংগ্রহ করে। চেকে টাকার অংক ও স্ট্যাম্পে কোন ধরনের শর্ত লিখেছে তাও জানেন না সদস্যরা। সংশিষ্টরা জানায়, গত সপ্তাহে কৃষি ব্যাংক গোরকঘাটা শাখা থেকে পিজি সদস্যদের নিয়ে গিয়ে সব টাকা তুলে নেন প্রকল্পের কর্মকর্তারা। যে সব সদস্যরা টাকা তুলে কর্মকর্তাদের দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন তাদের প্রকল্প থেকে নাম কেটে দেয়ার হুমকি দেওয়া হয়। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পিজি গ্রুপের সদস্যদের বাড়িতে মুরগির ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৫-৭ হাজার টাকা মাত্র। মানা হচ্ছে না নির্ধারিত কাঠামোগত শর্ত। বাকি ১৩-১৫ হাজার টাকা করে ৩৯ ঘরের ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা পকেটে ভরেছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলডিডিপি প্রকল্পের কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেছেন, ‘কাজে অনিয়ম হচ্ছে কি না আমি জানি না। আমার কাজ হচ্ছে প্রকল্পের তথ্যাদি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে অবগত করা। উনিই যাবতীয় সিদ্ধান্ত দেন।’
এ বিষয়ে উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নন্দন কুমার চন্দ বলেন, প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী খালি স্ট্যাম্প নেওয়ার নিয়ম রয়েছে তাই নেওয়া হয়েছে। এক ব্যক্তি এসব কাজ করতে চেয়েছিল পায়নি বিধায় ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এখানে অনিয়ম হয়নি।
পূর্বকোণ/আরডি