চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার বিষপানে ‘আত্মহত্যা’

সাতকানিয়া সংবাদদাতা

১৪ মার্চ, ২০২৩ | ১১:৪০ অপরাহ্ণ

বিয়ের দাবিতে গিয়েছিলেন প্রেমিকের বাড়িতে। স্বীকৃতি না পেয়ে অপমানিত হন প্রেমিকা। তাই বিষপানে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন তিনি।

 

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বারদোনা মৌলভীপাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

 

প্রেমিকা রনি আক্তার (১৮) কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের ধলিয়া-ঘাটা দেলোয়ার পাড়ার সাদেক হোসেনের মেয়ে এবং পেকুয়া বিএমআই কলেজের ছাত্রী। অন্যদিকে প্রেমিক সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বারদোনা মৌলভীপাড়ার মৃত সাব্বির আমাদের ছেলে আমিনুর রহমান (২৫)।

 

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তবে প্রেমিক পলাতক রয়েছেন।

 

গত সোমবার রাত আটটার দিকে বিয়ের দাবি নিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে যান প্রেমিকা রনি। পরে প্রেমিকের পরিবারের সদস্যরা তাকে গ্রহণ না করলে তিনি ট্যাক্সিযোগে সেখান থেকে চলে আসেন। আসার পথেই সঙ্গে থাকা বোতল থেকে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান রনি।

 

এ খবর জানতে পেরে আমিনুরের পরিবারের লোকজন রনিকে উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে পরে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

এ ব্যাপারে আমিনুরের বড়বোন মুন্নি আকতার বলেন, ‘মেয়েটি সোমবার রাত আটটার দিকে হঠাৎ করে আমাদের ঘরে আসে। তার পরিচয় জানতে চাইলে সে বলে, আমি আমিনুরের প্রেমিকা, সে আমাকে বিয়ে করবে, তাই তাকে আজ বিয়ে করতে আসলাম। পরে আমার ভাইয়ের সাথে তার কিছু যৌথ ছবি মোবাইল থেকে দেখায়। আমার ভাই ফারুক, ভগ্নিপতি এনাম ও এলাকার ইউপি সদস্য ছফুরা এসে তার অভিভাবক নিয়ে আসতে বললে সে অস্বীকৃতি জানায়। এভাবে প্রায় দুই ঘণ্টা পর্যন্ত মেয়েটির সাথে আমাদের তর্কাতর্কি হয়। পরে সিএনজিচালিত ট্যাক্সিতে তাকে একা তুলে দিয়ে লোহাগাড়া থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে মেয়েটি ট্যাক্সির মধ্যে হঠাৎ ঢলে পড়ে। ট্যাক্সির পেছনে মোটরসাইকেল নিয়ে থাকা আমার ভাইরা তাকে থানায় না নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বলেন সে মারা গেছে। তার সাথে কিছুটা তর্কাতর্কি হয়েছে, তবে তাকে অপমান করা হয়নি।’

 

রনি আক্তারের ভগ্নিপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমার শ্যালিকার সাথে আমিনুরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারা উভয়েই বিয়ে করবে এমন একটা সিদ্ধান্তও ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আমিনুর বিয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় রনি বিয়ের দাবিতে আমিনুরের বাড়িতে গিয়েছিল। সেখানে তার (রনি) কথা কেউ না শুনে উল্টো তাকে অপমান করার পর সে বিষপানে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় আমরা থানায় মামলা করছি।

 

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘সুরতহাল রিপোর্টে লাশের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মেয়েটি বিষপানে আত্মহত্যা করতে পারে। চিকিৎসকও সেভাবে আমাদের জানিয়েছেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মেয়েটির বাবা সাদেক হোসেন বাদি হয়ে মামলা দায়ের করে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

 

 

পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট