চট্টগ্রাম রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

৫১ বছরেও গড়ে উঠেনি বিনোদনকেন্দ্র

নিজস্ব সংবাদদাতা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১:০২ অপরাহ্ণ

ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ চট্টগ্রাম নগরীর পাশের উপজেলা ‘পটিয়া’। পটিয়া সকল অবকাঠামোগত দিক দিয়ে এগিয়ে থাকলেও এখানে গড়ে ওঠেনি কোনো বিনোদনকেন্দ্র। উপজেলার পূর্ব দিকে হাইদগাঁও ও কেলিশহরের পাহাড়ি এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার অমিত সম্ভাবনা থাকলেও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এখানে হয়নি কোন বিনোদনকেন্দ্র। ফলে বিনোদনবঞ্চিত হচ্ছে এ অঞ্চলের মানুষ। পাহাড়ি এলাকা ও পাদদেশের ‘লেক’ এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে এ অঞ্চলকে পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় সচেতন মহল।

 

বর্তমানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এ পাহাড়ি অঞ্চলে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য পর্যটক ভিড় জমায়। পটিয়া সদর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার পূর্বে হাইদগাঁও বুদবুদি ছড়া অবস্থিত। পর্যটকদের কাছে এটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি স্থান। এর দক্ষিণে শ্রীমতী খাল। শ্রীমতী খাল ও হাইদগাঁও-কেলিশহর পাহাড়ি এলাকায় বিশাল বিশাল পাহাড়ের অংশে রয়েছে চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহে মনোরম দৃশ্য, যা সবার নজর কাড়ে। এছাড়াও বিশাল এলাকা জুড়ে প্রায় ২৬ হাজার একর বন ভূমি ও অসংখ্য লেক রয়েছে।

 

কচুয়াই ইউনিয়নের পূর্বাঞ্চলে রয়েছে চা-বাগান। এত সম্ভাবনা থাকার পরও স্বাধীনতার ৫১ বছরেও পটিয়ায় গড়ে তোলা হয়নি কোনো বিনোদন কেন্দ্র। ফলে ঈদ ও পূজা-পার্বণে কাছাকাছি কোন পার্ক, লেক কিংবা উদ্যানে গিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে শরীর- মন চাঙ্গা করার সুযোগ পান না বিনোদনপ্রেমীরা।

 

অন্যদিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ডাকবাংলোয় ৭০ শতক জায়গা জুড়ে ১৯৮২ সালে একটি শিশু পার্ক গড়ে উঠলেও নানা সীমাবদ্ধতায় তার কোন প্রসার ঘটেনি। একসময় সেখানে দুটি বড় ছাতা, আটটি দোলনা ও কয়েকটি ওঠানামার সিঁড়ি থাকলেও বর্তমানে তার পরিচর্যা না থাকায় নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে বিনোদনবঞ্চিত হচ্ছে শিশুরা। এর স¤প্রসারণ ও সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন বিনোদন পিয়াসীরা।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিল (বামাকা) পটিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম বদিউল আলম তুষার বলেন, পটিয়ার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় কোন বিনোদন কেন্দ্র না থাকা একটি দুঃখজনক ব্যাপার। শিশুদের মনন বিকাশে এখানে একটি পরিকল্পিত বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলা জরুরি।

 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পটিয়া পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ আইয়ুব বাবুল বলেন, পটিয়া পৌরসভাকে একটি মডেল পৌরসভা করার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা জায়গা খুঁজছি চিত্ত বিনোদনের জন্য পৌর এলাকায় একটি শিশু পার্ক করার। এ ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। যদি জায়গা পাওয়া যায় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব পটিয়ার সাংসদ সামশুল হক চৌধুরীর সাথে পরামর্শ পূর্বক আমরা পৌর এলাকায় একটি শিশু পার্ক করার কার্যক্রম হাতে নিব।

 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতিকুল মামুন বলেন, এ নিয়ে জেলা পরিষদের মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। যেহেতু জেলা পরিষদের অধীনে ডাকবাংলোয় ছোট একটি পার্ক ছিল, সেখানে জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে বড় পরিসরে একটি পার্ক করার প্রস্তাবনা আছে। এর বাইরে বর্তমানে উপজেলা পরিষদের পাশে নব-নির্মিত এক হাজার আসন বিশিষ্ট জেলা পরিষদ শেখ কামাল অডিটোরিয়ামের সামনে যে জায়গা রয়েছে সেখানেও একটি পার্ক করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

 

পাহাড়ি অঞ্চলের প্রাকৃতি সৌন্দর্য ও অপার সম্ভাবনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনও আতিকুল মামুন বলেন, পাহাড়ি এলাকার বুদবুদি ছড়া এলাকার পাদদেশে উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীসহ আমি একাধিকবার পরিদর্শন করেছি। সেখানে কোন রকম বিনোদনকেন্দ্র করা যায় কিনা আমরা সেটা দেখছি। সেখানে যদি পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়া যায় ওই এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে একটি বিনোদনকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হবে।

 

 

পূর্বকোণ/জেইউ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট