চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

দুর্গাপূজায় ভারত যাবে ২০৮০ টন ইলিশ

সারোয়ার আহমদ

২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ | ১২:২২ পূর্বাহ্ণ

গতবারের ন্যায় এবারও আসন্ন দুর্গাপূজার আগেই ভারতে যাচ্ছে পদ্মার সুস্বাদু ইলিশ। গতবছর পূজায় প্রায় ৫ শ টন ইলিশ রপ্তানি হলেও এবার যাচ্ছে ২ হাজার ৮০ টন ইলিশ। মঙ্গলবার থেকে আগামী ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এসব ইলিশ রপ্তানি হবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করতে আগে থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুমতির জন্য আবেদন করে বাংলাদেশী হিমায়িত মৎস্য রপ্তানিকারকেরা। গত ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এমন ১১৮টি আবেদন জমা পড়ে। যাচাই বাছাই শেষে গতকাল সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ৫২টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ টন করে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (রপ্তানি-২ শাখা) তানিয়া ইসলাম পূর্বকোণকে বলেন, ভারতে ইলিশ রপ্তনি করতে আমাদের দেশীয় রপ্তনিকারকেরা অনুমতি চেয়ে আবেদন করে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১১৮টি আবেদন পেয়েছি। এর মধ্য থেকে ৫২ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ৪০ টন করে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অবশ্য রপ্তানির জন্য সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারকদের ৬টি নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।

ইলিশ সংগ্রহ ও রপ্তানি মূল্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অনুমতিপ্রাপ্ত চট্টগ্রামের কালুরঘাটের রপ্তনিকারক প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক সি ফুড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দোদুল কুমার দত্ত পূর্বকোণকে বলেন, ভারতে যে সব ইলিশ রপ্তানি হবে সেগুলোর ওজন প্রায় ৭শ গ্রাম থেকে শুরু করে ২ কেজির মধ্যে রয়েছে। আশা করি এসব ইলিশের গড় রপ্তানি মূল্য টনপ্রতি ৮ শ ডলারের কম হবে না। রপ্তানির জন্য আমরা পদ্মার ইলিশ সংগ্রহ করেছি। এর মধ্যে চাঁদপুর, নোয়াখালি ও বরিশালের ইলিশও রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকে সরাসরি ইলিশ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে শর্ত সাপেক্ষে রপ্তানি পণ্যের তালিকায় ইলিশকে অন্তর্ভুক্ত করে বাংলাদেশ সরকার। ইতোপূর্বে ভারত, ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ইলিশ রপ্তানি করতো সরকার অনুমোদিত মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাগুলো।

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ বছরে ইলিশের বার্ষিক আহরণ বৃদ্ধি পেয়েছে ৭৯ শতাংশ। ফলে গড় আহরণ প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ দশমিক ২০ শতাংশ। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ইলিশ আহরণ হয়েছিল ৫ দশমিক ৩৩ লক্ষ টন।

বিএফএফইএর তথ্যমতে, ৫ দশমিক ৩৩ লক্ষ টন থেকে মাত্র ৫ শতাংশ অর্থাৎ সাড়ে ২৭ টন ইলিশ রপ্তানি করলে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া বা ঘাটতি দেখা দিবে না।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন অফিস সচিব শেখ সোহেল পারভেজ বলেন, আমাদের দেশ থেকে হিমায়িত চিংড়ির সাথে অন্যান্য মাছ রপ্তানি করার সময় বিদেশি ক্রেতাগণ ইলিশের চাহিদা দিয়ে থাকে। কিন্তু আমরা ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পাই না।

ফলে বিদেশি ক্রেতারা তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল করে বা অন্য দেশের দিকে ঝুঁকে পড়ে। এটি আমাদের দেশের হিমায়িত মৎস্য রপ্তানি খাতের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই সরকারের সাথে আমাদের আবেদন দেশের মোট ইলিশ আহরণের অন্তত ৫ শতাংশ হলেও যাতে রপ্তানির অনুমতি দেয়। এতে যেমন বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে তেমনি দেশীয় মৎস্য খাত-সংশ্লিষ্টরা জীবিকা অক্ষুন্ন রাখতে সক্ষম হবে।

পূর্বকোণ/মামুন/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট