চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

হাসপাতালের ভুলে বাংলাদেশির লাশ দাফন হল পাকিস্তানে

অনলাইন ডেস্ক

১৯ জানুয়ারি, ২০২০ | ৯:০১ অপরাহ্ণ

অর্থ কষ্ট লাঘবের জন্য রুহুল আমিন সৌদি আরব যান ‘দু’বছর আগে। দেখতে দেখতে দুই বছর কেটে গেলেও ৩ লাখ টাকা ঋণ থাকায় বাড়িতে আসার ইচ্ছা থাকলেও তিনি দেশে আসেননি। সবসময় দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবেছিলেন। অথচ ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! এই মানুষটির মরা মুখটাও শেষবারের মতো দেখল না তার স্ত্রী ও পরিবার। কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন সৌদি আরবে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মৃত্যুবরণকারী কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পীরকাশিমপুর গ্রামের রুহুল আমিনের স্ত্রী মিলি আক্তার।

হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে বিমানে দেশে আনার টিকেট কাটা হয়। কিন্তু সৌদি আরবের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভুলে পাকিস্তানে চলে যায় মৃত রুহুল আমিনের মরদেহ। সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা এ ঘটনার জন্য দোষারোপ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। এলাকাবাসীও লাশ বদলের এমন ঘটনায় রীতিমত হতবাক।

জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে কুমিল্লার মুরাদনগরের পীরকাশিমপুর গ্রামের মরহুম দানু মিয়ার ছেলে মো. রহুল আমিন একই উপজেলার চন্দনাইল গ্রামের বেদন মিয়ার মেয়ে মিলি আক্তারকে বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে রিদওয়ান হাসান (১৩) স্থানীয় মাদরাসায় ৭ম শ্রেণিতে এবং ছোট ছেলে রাইয়ান হাসান (৮) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্র। বর্তমানে মিলি আক্তার তার স্বামীর রেখে যাওয়া ঋণের বোঝা এবং দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন।

২০১৭ সালের ২৪ নভেম্বর পরিবারের সুখের আশায় রুহুল আমিন ঋণ করে সৌদি আরবে যান। কিন্তু ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর সৌদি আরবের একটি হাসপাতালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে তিনি মারা গেলে হত-দরিদ্র ওই পরিবারেরে উপর নেমে আসে অন্ধকারের ছায়া।

রুহুল আমিনের ভাই মুজিবুর রহমান জানান, ‘আমার ভাইয়ের লাশ আনার জন্য এম্বুলেন্স ঠিক করেছিলাম। দাফনের জন্য কবরস্থানের জায়গাও চিহ্নিত করেছিলাম। কিন্তু ভাইয়ের লাশ চলে গেছে পাকিস্তানে। আমার ভাইয়ের অসহায় এ পরিবারটির দিকে সরকার খেয়াল রাখলে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব।’

সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানান, এ ঘটনার জন্য দুঃখজনক আমরা সরাসরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই দোষারোপ করেছি, কারণ এই কফিনটি তারাই রিলিজ করেছে। এ নিয়ে মৃত ব্যক্তির মনোনীত কর্তৃক গভর্নর অফিসে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আর আমাদের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তবে নিহত রুহুল আমিনের পরিবার কোনো ধরনের সহযোগিতা চাইলে আমরা তা করব।

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট