চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রেলের ৩ জলাশয় দখলের অভিযোগ তদন্তে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

৭ আগস্ট, ২০১৯ | ২:১৪ পূর্বাহ্ণ

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের আওতাধীন নগরীর তিন জলাশয় দখলের অভিযোগ তদন্তে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর একটি এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান চালিয়েছে। অভিযানে দখলসহ নানা অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে টিম দুদক। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে দুদক টিম প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়,চট্টগ্রাম-১ এর উপ পরিচালক লুৎফুল কবির চন্দনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুদক জানায়, প্রায় হাজার কোটি টাকার ৫৫ একরের আগ্রাবাদ ডেবা, পাহাড়তলী জোড় ডেবা ও ভেলুয়ার দীঘি ইজারা নিয়ে দখলে নিয়েছেন রেলওয়ের বেশকিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ স্থানীয়

প্রভাবশালীরা। এরমধ্যে তিনটি ডেবার বড় অংশ ভরাট করে ঘরবাড়ি, দোকানপাটসহ স্থাপনা তৈরি করে দখলেও নিয়েছেন অনেকে। যার বিষয়ে দুদকের হটলাইন নম্বর (১০৬) এ অভিযোগ পাওয়ার পর দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে অভিযানের অনুমতি দেয়। তারপর গতকাল মঙ্গলবার অভিযানে যায় দুদক, চট্টগ্রাম-১ এর অভিযানিক দল।
দুদকের এ অভিযানে প্রতিটি ডেবা এলাকায় গিয়ে সরেজমিনে অনুসন্ধান করে দুদক টিম। এতে স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন এবং বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয় বলে জানিয়েছেন দুদক। এ বিষয়ে দুদকের এক কর্মকর্তা পূর্বকোণকে বলেন, ‘অভিযানে গিয়ে যা দেখা গেছে, বলার মতো নয়। যে যার মতো করে দখল নিয়েছে। অনেকেই দোকান-ঘর তুলে ৫ থেকে ৮ হাজার টাকায় তা ভাড়া দিয়েছে। আবার প্রতিটি দোকান থেকে ৪/৫ লাখ টাকা করে অগ্রিম নেয়ার বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া গেছে। অনেকেই আবার একজমি একাধিকবার বিক্রিও করেছে। যার সাথে স্থানীয় সর্দার, রেল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় প্রভাবশারীরাই সরাসরি জড়িত। তারাই মূলত এসব কিছু দখলে নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনটি ডোবার পাড়ে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার ঘর-দোকান রয়েছে। অভিযানে যাওয়ার পর যারা দখলে নিয়েছে, তাদের কাছে কাগজপত্র দেখতে চাইলে কেউই দেখাতে পারেনি। মূলত যারা এসব করেছে, তারা আশপাশেও থাকেনা’।
এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর উপ-পরিচালক লুৎফুল কবির চন্দন পূর্বকোণকে বলেন, ‘এ তিনটি জলাশয় মূলত মাছ চাষের জন্য ইজারা নেয়া হয়। পরে পুকুরের পাড় ও কিছু অংশ ভরাট করে একটি প্রভাবশালী ঘরবাড়ি-দোকান নির্মাণ করে তা দখলে নেয়। যার কারণে রেলওয়ে তা পুনরায় ইজারাও দিতে পারছে না। আমাদের অভিযানে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযানে দেখা যায়- পুকুরের চারপাশে অবৈধভাবে ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। যার সাথে রেলের কর্মকর্তারাও জড়িত থাকার প্রমাণও পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে কাল (বুধবার) প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে বলেও জানান তিনি’। তিনি বলেন, ‘কমিশন যে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়, আমরা সে বিষয় অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এতে যারাই জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাবো, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট