চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

নোবেলের চমক অগ্নিনির্বাপক রোবট

নিজস্ব প্রতিবেদক 

৭ জুন, ২০২১ | ১:২৬ অপরাহ্ণ

সরু পথের শেষ দিকে উঁচু ভবন। তাতে হঠাৎ অগ্নিকা-। দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। কিন্তু ঢুকতে পারছে না ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি। মানুষ যখন নিরুপায় হয়ে এই দৃশ্য দেখবে, রিমোট কন্ট্রোল রোবট এগিয়ে এসে খুঁজবে অগ্নিকান্ডের উৎস। নেভাতে ছিটাবে ঠাণ্ডা পানি। আগুনের ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়াদের বিলাবে জরুরি ওষুধ।

রূপকথার গল্প নয়। এমন রোবট সত্যি সত্যিই তৈরি করেছেন চট্টগ্রামের তরুণ উদ্ভাবক জাহেদ হোসাইন নোবেল। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী নোবেলের তৈরি করা এই রোবট জায়গা করে নিয়েছে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের উদ্ভাবনী প্রদর্শনী গ্যালারিতে। পুরস্কার পেয়েছে দেশের নানা প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিযোগিতায়। নিজের উদ্ভাবিত এই রোবট নিয়ে সম্প্রতি পূর্বকোণের সঙ্গে কথা বলেন নোবেল। তিনি জানান- আমাদের দেশের অধিকাংশ এলাকার পথ সরু। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পৌঁছাতে পারে না। অগ্নি নির্বাপণে সময় বেশি লাগলে আগুনের ভয়াবহতা বাড়ে। মানুষ মারা যায়। সম্পদ নষ্ট হয়। এই অবস্থা থেকে সুরক্ষা দিতেই রোবট তৈরির কথাটি মাথায় আসে। যেই চিন্তা সেই কাজ। অগ্নিকান্ডের কারণ চিহ্নিত করে দ্রুত সময়ে অগ্নি নির্বাপণ এবং ফায়ারম্যানদের সুরক্ষা দিতে রিমোট কন্ট্রোল একটি রোবট তৈরি করে ফেলেন নোবেল। গত ২৫ মে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর আয়োজিত ‘রোবট হস্তান্তর অনুষ্ঠান ও বিজ্ঞান সভায়’ জাদুঘরের মহাপরিচালক মুনির চৌধুরীর কাছে রোবটটি হস্তান্তর করেন তিনি।

নোবেল জানান- যেসব জায়গায় অগ্নিকান্ড হলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রবেশ করতে পারেন না, সেখানে রোবটটি সহজে পাঠানো যাবে। ফায়ার সার্ভিসের পানির গাড়ির সাথে সংযুক্ত থেকে আগুনে পানি ছিটাবে। রোবটটিতে একটি কার্বন ডাই অক্সাইডের সিলিন্ডারও রাখা হয়েছে। যেসব জায়গায় পানি ছিটানো সম্ভব নয়, সেখানে কার্বন ডাই অক্সাইড ছিটাবে এই রোবট।

‘আগুনোর ধোঁয়া বের করে নেওয়ার প্রযুক্তিও রাখা হয়েছে ফায়ার ফাইটার রোবটটিতে। এছাড়া একটি রোবটিক আর্মস (হাত সদৃশ) রাখা হয়েছে। যাতে জরুরি প্রয়োজনে ওষুধ পাঠানো সম্ভব হয়। ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীরা জরুরি ওষুধ পান।’ যোগ করেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার ছেলে জাহেদ হোসাইন নোবেল।

তবে শুধু অগ্নি নির্বাপণ নয়- করোনাভাইরাস ঠেকাতে সুরক্ষামূলক স্প্রেও করতে পারবে নোবেলের তৈরি ফায়ার ফাইটার এই রোবট। সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত, ব্যাংক, হাসপাতাল কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় গিয়ে জীবাণুনাশক স্প্রে করানো যাবে রোবটটি দিয়ে। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির কাছেও পাঠানো যাবে ওষুধ ও খাবার।

ইলেক্ট্রনিক্স নিয়ে পড়ার শুরু থেকে রোবট তৈরির যে উদ্ভাবনী চিন্তুা নোবেলের মধ্যে বাসা বাঁধে- সেই চিন্তাকে ভবিষ্যতেও কাজে লাগাতে চান তরুণ নোবেল। এই কাজে চান সরকারি সহায়তা। পৃথিবীর বিখ্যাত প্রযুক্তির শহর ‘সিলিকন ভ্যালিতে’ একদিন লাল সবুজের পতাকা উড়ানোর স্বপ্ন চট্টগ্রামের এই তরুণের।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট