চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জাতীয় পাট দিবস আজ

১৯ বছরেও চালু করা গেল না পাটের থলে

মরিয়ম জাহান মুন্নী 

৬ মার্চ, ২০২১ | ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

পরিবেশ দূষণরোধে নিষিদ্ধ করা হয় পলিথিন। চালু করা হয় পাটের থলে। বেশ সাড়াও পড়েছিল এ থলের। হাট-বাজারে মানুষের হাতে হাতে ছিল পাটের থলে। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় থলের ব্যবহার। বাজারে ফের পলিথিনের দাপট বেড়ে যায়।

পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের উদাসীনতায় ১৯ বছরেও চালু করা যায়নি পাটের থলের ব্যবহার। এদিকে পলিথিনের ব্যবহার পরিবেশকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলছে। পাটের থলে পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এতে পাটকল বন্ধ হওয়ায় অভাব-অনটনে দিন অতিবাহিত করছে দেশের পাট শ্রমিকরা। একই অবস্থা চট্টগ্রামের নয়টি পাটকলের প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিকেরও। তাদের অনেকেই কাজ হারিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে।

আজ শনিবার জাতীয় পাট দিবস। পাটকল রক্ষায় শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-ঐক্য জনতা চট্টগ্রাম জেলার সদস্য সচিব মো. কামাল উদ্দিন বলেন, পাটকল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক শ্রমিক এখন ভিক্ষা করছে। গত বছর জুলাই মাস থেকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল বন্ধ করে সরকার। সেই থেকে আমরা সবাই বেকার। আট মাসেও কোনো বকেয়া বেতন পাইনি আমরা। তবে স্থায়ী শ্রমিকদের বেতনের বিষয়ে আগামী তিন মাসের মধ্যে একটা সিন্ধান্তে আসবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু বদলি শ্রমিকদের অবস্থা আরো করুণ। এখনো পর্যন্ত বদলি শ্রমিকদের বেতনের কোনো খবরই জানা যায়নি। অথচ টানা ৯০ দিন কাজ করার পরে যে কোনো পাট শ্রমিক স্থায়ী হয়ে যায়। এসময় তিনি আরো বলেন, পাট দিবসটি আমাদের জন্য নয়। এটা বড় বড় আমলাদের জন্য। মিল বন্ধ, কিন্তু তারা ঠিকই তাদের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। আমরা আমাদের ন্যায্য পাওনা ও অধিকার চাই। তা না পেলে আগামীতে আন্দোলন আরো জোরদার হবে।

আমিন জুটমিলের শ্রমিক ইলিয়াস বলেন, আমার পরিবারে পাঁচ সদস্য আছে। হঠাৎ করে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খুবই খারাপ অবস্থায় দিন কাটাই। খেয়ে না খেয়ে আর কত দিন। আমরা কি না খেয়ে মরবো। সরকারকে পাটকল খুলে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বয়স্ক শ্রমিক মনছুর মিয়া জীবনের তাগিদে ভিক্ষার থালা হাতে নেন। জানা যায় প্রতিদিনই নগরীর বিভিন্ন স্থানে ভিক্ষা করেন তিনি।

এবিষয় চট্টগ্রাম মহানগর পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. নুরউদ্দিন নুরী বলেন, পরিবেশ রক্ষায় পাটের থলে ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাংলাদেশের সবগুলো পাটকল বন্ধ। পরিবেশ ধ্বংসের প্রধান কারণ কিন্তু এ পলিথিন। যা শীগ্রই বন্ধ করা দরকার। আমরা পরিবেশ রক্ষায় পাটের থলে ব্যবহারের বিষয়ে অনেকবার মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি পাঠাই। সেখান থেকে সাড়া না পেলে আমাদের কিছু করার থাকে না। শুধু শুধু মানুষকে জরিমানা করে হবে না। আগে পাটের পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে তারপরে মানুষকে ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে। তাহলে যেমন সোনালী আঁশ বাঁচবে, তেমনি বাঁচবে পরিবেশ।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট