চট্টগ্রাম থেকে নিখোঁজ সাংবাদিক গোলাম সরওয়ার তিনদিন পর সীতাকুণ্ডের কুমিরা থেকে উদ্ধার হয়েছেন। রবিবার রাত আনুমানিক ৮টার দিকে উপজেলার বড়কুমিরা উত্তর বাজারে অবস্থিত খালের পাড়ে তার শব্দ শুনে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী তাকে উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড থানা ও চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাত ৮টার দিকে সীতাকুণ্ডের বড়কুমিরা বাজারের উত্তরে অবস্থিত মদিনা ডেকারেশনের মালিক মো. বাবুল প্রাকৃতিক কাজে সাড়া দিতে খালের নিচের দিকের বাথরুমে যাবার সময় খাল পাড়ে এক যুবককে পড়ে থাকতে দেখেন। যুবকের মুখ থেকে গোঙানির শব্দ শুনে তিনি এলাকার অপর যুবক জাহেদকে নিয়ে তার কাছে গিয়ে প্রশ্ন করলে যুবকটি নিজেকে চট্টগ্রামের সাংবাদিক গোলাম সরওয়ার বলে পরিচয় দেন। সাথে সাথে তাকে নিজের ডেকারেশনের দোকানে নিয়ে রাখেন এবং কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোর্শেদুল আলম চৌধুরীকে খবর দেন। খবর পেয়ে কুমিরা চেয়ারম্যান সীতাকুণ্ড থানা ও সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবকে জানালে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ সেখানে গিয়ে গোলাম সরওয়ারের পাশে অবস্থান নেন। এরপর থানার ওসি মো. ফিরোজ হোসেন মোল্লা, ওসি (তদন্ত) সুমন বণিক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সেখানে পৌঁছান। ছুটে আসেন চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার একটি টিমও। তারা গোলাম সারোয়ারকে চট্টগ্রামে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।
এদিকে, প্রত্যক্ষদর্শী সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এম. সেকান্দর হোসাইন ও সদস্য এস.এম ইশবাল হোসেন জানান, তাকে উদ্ধারের খবর শুনে অল্প সময়ে মদিনা ডেকারেশনের চারপাশে অসংখ্য মানুষের ভিড় জমে যায়। এসময় মানুষের শব্দ শুনে চোখ বন্ধ রাখা সাংবাদিক গোলাম সরওয়ার খুবই আতংকিত হয়ে বলতে থাকেন ‘ প্লিজ, আমাকে মারবেন না, আমি আর নিউজ করব না’। এসময় স্থানীয় সাংবাদিকরা তার সাথে কথা বলতে চাইলেও তিনি আর তেমন কিছু বলেননি।
উদ্ধারের বর্ণনা দিয়ে মদিনা ডেকারেশনের মালিক মো. বাবুল বলেন, আমি খালপাড়ের দিকে যাওয়ার সময় মানুষের গোঙানি শুনে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। এজন্য জাহেদ নামে অপর একজনকে নিয়ে তার কাছে যাই। পরে দেখি যুবকটি উলঙ্গ অবস্থায় পড়ে আছেন। তবে তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। তার কাছে পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে সাংবাদিক গোলাম সরোয়ার বলে জানান। সব শুনে আমি কুমিরার ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদুল আলম চৌধুরীকে জানাই। ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদুল আলম বলেন, তার খবর পেয়েই সাথে সাথে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ ও থানাকে জানাই। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি মো. ফিরোজ হোসেন মোল্লা জানান, সাংবাদিক গোলাম সরওয়ারকে স্থানীয়রা উদ্ধারের খবর পেয়ে আমি সেখানে ছুটে যাই। তিনি আহত অবস্থায় ছিলেন। পরে কোতোয়ালি সার্কেল স্যার ও অফিসার ইনচার্জ এসে তাকে চমেকে চিকিৎসা প্রদানের জন্য নিয়ে যান।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকালে নিজ বাসা থেকে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বের হয়ে নিখোঁজ হন সাংবাদিক গোলাম সরওয়ার। ঘটনার পর থেকে তাকে উদ্ধারে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
পূর্বকোণ / আরআর