ভারতের কলকাতার তিলজালা এলাকার বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী ১৪ বছর পর জানতে পেরেছেন তাঁর স্ত্রী ভারতীয় জাল পাসপোর্টধারী বাংলাদেশি নাগরিক। এমন অভিযোগ নিয়ে স্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করেছেন তিনি। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইনি সহায়তা চেয়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, অভিযোগকারীর আইনজীবী বলছেন, স্ত্রী ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৪৯৮এ ধারায় মামলা করার পরই মূলত তিনি স্ত্রীর পরিচয়ের বিষয়ে জানতে পারেন।
তাঁর স্ত্রীর এজাহার অনুসারে, স্বামীর মানসিক আঘাত ও নিষ্ঠুরতার কারণে দ্বিতীয় সন্তান পেটে থাকতে তাঁর গর্ভপাত হয়েছে।
ওই ব্যবসায়ীর আইনজীবী দাবি করছেন, পশ্চিম বর্ধমানের নার্সিং হোম থেকে পাওয়া একটি জন্ম সনদ এবং এ দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান জীবিত থাকার প্রমাণ রয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায় তাঁর স্ত্রীর দাবিতে কোনো ঝামেলা আছে।
আইনজীবী বলেন, দম্পতিটির বিচ্ছেদের সময় এলাকার গুঞ্জন শুনে স্বামীর সন্দেহ হয় তাঁর স্ত্রী ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের নন বরং বাংলাদেশি। যদিও উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা পরিচয়েই তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। উত্তর প্রদেশে এক বিবাহবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তাঁদের পরিচয় হয়। ২০০৯ সালে তাঁরা বিয়ে করেন।
ব্যবসায়ীর আইনজীবী শায়ান শচীন বসু বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, তাঁর স্ত্রীর উত্তর প্রদেশের স্কুল সনদ ও নাগরিকত্বের সনদ জাল। স্ত্রী বর্তমানে মক্কেলের দুই সন্তানসহ পলাতক। আমাদের ধারণা, তিনি তাঁর যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ভাইয়ের কাছে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাই আমরা তাঁর পাসপোর্ট বাতিল করাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি যেন তিনি ভিসার জন্য আবেদন করতে না পারেন।
তথ্য অধিকার আইনে করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায়, ওই নারীর স্বামীকে গত মে মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, ‘মন্ত্রণালয় জানতে পেরেছে, ভারতীয় পাসপোর্টধারী ব্যক্তিটি বাংলাদেশি। জালিয়াতি করে ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করেছেন।
ওই নারীর পাসপোর্ট প্রত্যাহার করে মন্ত্রণালয় থেকে আরও বলা হয়, বায়োডাটাতে ওই নারী উল্লেখ করেছেন, তিনি ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কানাডায় পড়ালেখা করেছেন। কিন্তু ২০২০ সালে তিনি নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন। আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য অভিযুক্ত নারীর দাবি করা কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ